ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভারতে গবাদিপশু জবাইয়ে নিষেধাজ্ঞা ॥ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকরা

প্রকাশিত: ০৩:১৪, ১৩ আগস্ট ২০১৭

ভারতে গবাদিপশু জবাইয়ে  নিষেধাজ্ঞা ॥ ক্ষতিগ্রস্ত  হচ্ছে কৃষকরা

ভারতে হিন্দুত্ববাদী পার্টি বিজেপি সরকারের ক্ষমতায় আসার পর গরু রক্ষার যে তৎপরতা শুরু হয়েছে, তার বিপদ নিয়ে এবার সতর্ক বার্তা দিয়েছে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সমীক্ষা প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, গবাদিপশু জবাইয়ে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা টানা হলে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কৃষক। এতদিন কৃষক সংগঠনগুলো এই বিষয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়ে আসছিল। খবর আনন্দবাজার ও ওয়েবসাইটের। নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই গোমাংস নিয়ে ‘বাড়াবাড়ি’ শুরু হয়। গরু জবাইকে কেন্দ্র করে একের পর এক পিটিয়ে খুনের খবর আসে গণমাধ্যমে। আপত্তি উপেক্ষা করেই হাট-বাজারে গবাদিপশু জবাইয়ের উদ্দেশে কেনাবেচা করা যাবে না বলে নিয়ম জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার। আর্থিক সমীক্ষা প্রতিবেদনের কোথাও সরাসরি গবাদিপশু জবাইয়ে নিষেধাজ্ঞা বা গোরক্ষক বাহিনীর উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু বলা হয়েছে, কর্মক্ষমতা হারানোর পরে গবাদিপশুর দামের উপরেও পশুপালকদের রুটিরুজি নির্ভর করে। এমনিতেই কৃষি থেকে আয় পড়তির দিকে। কোন ‘সামাজিক নীতি’র জেরে পশুর মাংস বেচে আয় বন্ধ হলে এবং বুড়িয়ে যাওয়া গবাদিপশুকে বসিয়ে খাওয়াতে হলে চাষি-পশুপালকদের আয় আরও কমবে। এসব ‘সামাজিক নীতি’র ফলে সমাজে ক্ষতিই হবে। আর্থিক সমীক্ষা তৈরি করেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি তা পার্লামেন্টে উপস্থাপন করেন। মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এই ‘সামাজিক নীতি’ কি গবাদিপশু জবাইয়ে নিষেধাজ্ঞা? তার জবাব ছিল, এসব প্রশ্ন করে আমাকে বিপদে ফেলবেন না। বাম দল সিপিএমের কৃষক সভার নেতা হান্নান মোল্লা বিজেপির নীতির সমালোচনা করে বলেন, কৃষকদের আয়ের ৭০ ভাগ আসে জমি থেকে। বাকিটা পশুপালন থেকে। চাষের ক্ষতি সামলাতে না পেরে কৃষকরা আত্মহত্যা করছেন। দুধ দেয়া বা হাল টানা বন্ধ করা গরু-মোষ পুষতে হলে তার খাইখরচ কোথা থেকে আসবে? জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক বিকাশ রাওয়াল এই প্রসঙ্গে বলেন, বছরে ৩ কোটি ৭০ লাখ পুরুষ গরু-মোষ জন্ম হয়। জবাই বন্ধ হলে এদের খাবারের পেছনে বছরে ৫.৪ লাখ কোটি টাকা খরচ। তিনি প্রশ্ন রাখেন, এই আর্থিক দায়ভার কি সরকার বইতে রাজি?
×