মার্কিন সিনেটর জন ম্যাককেইন আফগানিস্তানের জন্য তার দীর্ঘ প্রতিশ্রুত নীতি প্রকাশ করেছেন। এ নীতিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমিকভাবে কূটনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি রয়েছে যদি দেশটি তালেবান ও হাক্কানি নেটওয়ার্কসহ সন্ত্রাসী ও জঙ্গী গ্রুপগুলোর জন্য সমর্থন এবং নিরাপদ আশ্রয় প্রদান অব্যাহত রাখে। খবর ডন অনলাইনের।
আগামী অর্থবছরের প্রতিরক্ষা বিলে সংশোধনী হিসেবে কৌশলটি বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়। কৌশলে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী মিশনের জন্য অতিরিক্ত মার্কিন সৈন্য মোতায়েনের কথা রয়েছে।
কৌশলে আফগান কর্মকর্তাদের সঙ্গে রণাঙ্গনে কাজ করার জন্য মার্কিন উপদেষ্টা পাঠানোর জন্য এবং তালেবান বিদ্রোহী, ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রুপের জঙ্গী ও অন্যান্য মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর জন্য মার্কিন কমান্ডারদের ব্যাপক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। সিনেট আর্মড সার্ভিসেস কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর ম্যাককেইন প্রশাসনের ওপর একটি কৌশল চাপিয়ে দেয়ার জন্য হুমকি দিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন যাবত। ১৬ বছরের আফগান যুদ্ধে কোন জয় না আসলেই ওই উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে। ম্যাককেইন বলেন, আমেরিকার অত্যন্ত দক্ষ ও মর্যাদাশীল সাবেক সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কেউ কেউ এ কৌশলে অবদান রেখেছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি ছাড়াও এ প্রস্তাবিত নীতিতে দীর্ঘমেয়াদী যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্ভাব্য শুভ দিনেরও উল্লেখ রয়েছে। এ শুভ দিকগুলোর সূচনা হবে পাকিস্তান সকল সন্ত্রাসী ও বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর জন্য সমর্থনের অবসান ঘটালে এবং আফগানিস্তানে এ সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানে গঠনমূলক ভূমিকা রাখলে। পরিকল্পনাটিতে আফগান রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য আফগানিস্তান, পাকিস্তান, চীন, ভারত, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কেমেনিস্তান ও অন্যান্য রাষ্ট্রসহ একটি আঞ্চলিক সংলাপ অনুষ্ঠানের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সীমান্ত নিরাপত্তা, গোয়েন্দা কাজে অংশীদারিত্ব, মাদকবিরোধী অভিযান, যানচলাচল ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মতো বিষয়গুলোর ওপর আঞ্চলিক সহযোগিতা নিয়ে অগ্রসর হওয়ার জন্য এ সংলাপকে অনুপ্রাণিত করার কথা হয়েছে এ পরিকল্পনায় এবং এ উপলক্ষে নমনীয় কাঠামোর মধ্য দিয়ে কাজ করার জন্য মার্কিন আঞ্চলিক কূটনৈতিক উদ্যোগ জোরদার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সিনেটর ম্যাকমেইনের প্রত্যাশা, এতে এ অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অবিশ্বাস হ্রাস পাবে এবং আস্থা গড়ে উঠবে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের গত মাসে প্রকাশিত ‘আফগানিস্তানে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক এক রিপোর্টে আফগান স্থিতিশীলতা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো মিশনের ফলাফল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পেছনে সবচেয়ে প্রভাবশালী বাইরের শক্তি হিসেবে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
সিনেটর ম্যাককেইন গত মাসে সিনিয়র সদস্যদের একটি টিম নিয়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সফরের সময় পিটিভির এক সাক্ষাতকারে আফগান যুদ্ধ অবসানে মার্কিন উদ্যোগের প্রতি পাকিস্তানের সমর্থনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।