ফেসবুকের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) শেরিল স্যান্ডবার্গ জনপ্রিয় মেসেজিং সার্ভিস হোয়াটস এ্যাপে এনক্রিপশন বা সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার সমর্থন করেছেন। বিবিসির এক বেতার অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যে সীমিত ড্যাটা পাওয়া যাচ্ছে তা সন্ত্রাসী তৎপরতা ঠেকাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাজে লাগতে পারে।
যোগাযোগ বার্তা সাংকেতিক ভাষায় রূপান্তরিত করা হলে কেবলমাত্র প্রেরক ও গ্রাহক তা পাঠ করতে পারবে। তবে সাংকেতিক সংলাপ সম্পর্কিত তথ্য অর্থাৎ কে কার সঙ্গে যোগাযোগ করছে তা সন্ত্রাসবিষয়ক তদন্তের সময় সরকারের হাতে থাকবে যদিও সংলাপের বিষয়বস্তুটা থাকবে না। বেতার অনুষ্ঠানে স্যান্ডবার্গ বলেন, সরকারসমূহের লক্ষ্য হচ্ছে যতখানি সম্ভব তথ্য হস্তগত করা। কাজেই হোয়াটস এ্যাপের মতো ম্যাসেজিং সার্ভিসগুলো যখন সাংকেতিক ভাষাবদ্ধ করা হবে তখন খোদ বার্তাটি সাংকেতিক ভাষায় থাকবে তবে সেটা ড্যাটা নয়। তার মানে ‘ক’ ব্যক্তি ‘খ’ ব্যক্তিকে বার্তা পাঠালো। সরকার জানলো না কি বার্তা পাঠানো হলো। তবে এটুকু জানলো যে ‘ক’ ‘খ’ এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
এ্যাপল, গুগল, ফেসবুক সাংকেতিক ভাষা ব্যবহারের প্রাইভেসি ও নিরাপত্তাগত সুবিধার কথা বললেও যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা বলেছেন, সাংকেতিক বার্তা সার্ভিস অপরাধী ও সন্ত্রাসবাদীদের তৎপরতা চালানোর নিরাপদ পথ করে দেবে। দৃষ্টান্তস্বরূপ, গত মার্চ মাসে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাইরে একটি গাড়ি হামলায় ৪ জন পথচারী ও একজন পুুলিশ অফিসার নিহত হয়। সেই ঘটনায় হামলাকারী খালিদ মাসুদ হামলার মাত্র মিনিট কয়েক আগে হোয়াইটস এ্যাপে যোগাযোগ করেছিলেন বলে ব্রিটিশ মিডিয়া জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যামবার রুড সাংকেতিক যোগাযোগ বার্তার ব্যবহারকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নিশ্চিত হতে হবে সে হোয়াটস এ্যাপ এবং এ ধরনের আরও অনেক সংস্থা সন্ত্রাসবাদীদের পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করার গোপন সুযোগ দিচ্ছে না।’ মামুদের হোয়াটস এ্যাপ ব্যবহারের সঙ্গে তার অপরাধের সম্পর্ক আছে কিনা তা অবশ্য এখনও পরিষ্কার নয়।
ফেসবুকের সিওও বেতার অনুষ্ঠানে রুডের সঙ্গে তাঁর সম্প্রতি সাক্ষাতের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘আমরা আমাদের লক্ষ্যের ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় এক। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে আমাদের সবাই সন্ত্রাসবাদ ঠেকাতে নিজ নিজ ভূমিকা পালনের চেষ্টা করব এবং সেদিক দিয়ে ফেসবুকের নীতিও অতি পরিষ্কার।’ স্যান্ডবার্গ হুঁশিয়ার করে দেন যে সাংকেতিক ভাষা ব্যবহারের সুযোগ কেড়ে নেয়া হলে ব্যবহারকারীরা এই সার্ভিস বাদ দেবে। ফলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে সূত্রের সংখ্যা কমে আসবে।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, প্রতিদিন এক শ’ কোটি লোক হোয়াটস এ্যাপ ব্যবহার করে। ফেসবুক ২০১৪ সালে ১৯০০ কোটি ডলার দিয়ে এই গ্লোবাল ম্যাসেজিং এ্যাপটি কিনেছিল। গত বছর হোয়াটস এ্যাপ ঘোষণা করে যে, তারা সাংকেতিক ভাষা ব্যবহারের সুযোগ দেবে। সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এমন প্রস্তাবের সমালোচনা করে। এফবিআই-এর জেনারেল কাউন্সেল জেমস বেকার বলেন, ‘হোয়াটস এ্যাপের এই উদ্যোগ আমাদের জন্য বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করবে।’
শীর্ষ সংবাদ: