ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজারে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ১২ আগস্ট ২০১৭

কক্সবাজারে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে  ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। এতে ট্রলার মালিক, জেলে পল্লী, ভোক্তাসাধারণের মুখে হাসি ফুটেছে। মাসখানেক সাগরে মৎস্য শিকার বন্ধ থাকার পর বর্তমানে জেলার হাট-বাজারে ইলিশে ভরে গেছে। একেবারে টাটকা মাছ। দামেও সস্তা। খেতেও দারুণ স্বাদ। কিছুদিন বাজারে ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের আকাল চললেও এখন পথে-ঘাটে ইলিশ এবং সাগরের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পেয়ে দারুণ খুশি স্থানীয় বাসিন্দা। স্বাদের ইলিশ ও সামুদ্রিক অন্যান্য মাছ দেদার পাওয়ার পেছনে যথেষ্ট অবদান রয়েছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সচেতন মহল। তারা বলেন, সরকার প্রতিবছর একটি নির্ধারিত সময়ের ভেতর সাগরে ফিশিং ট্রলার যেতে বিধিনিষেধ আরোপ করায় বঙ্গোপসাগরে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ বেড়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের বাহারছড়া, কানাইয়া বাজার, কালুর দোকান, রোমালিয়ারছড়া, কলাতলী, আলীর জাহাল ও উপজেলা বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ইলিশ মাছে ভরপুর। রয়েছে প্রচুর কোরাল, লইট্টা, মাইট্টা, পোপা, কালা চাঁন্দা ও গুইজ্যাও। শহরের রোমালিয়াছড়া বাজারের মাছ বিক্রেতা মোঃ ইউনুছ জানান, সাগরে কিছুদিন মাছ ধরা বন্ধ ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তদারকি বাড়িয়ে দেয়ার কারণে ট্রলার মালিক, জেলে সম্প্রদায়, মাছ ব্যবসায়ী এমনকি ভোক্তা সাধারণের জন্য সরকার বড়ই উপকার করেছে। সপ্তাহ তিনেক একটু কষ্ট হলেও বর্তমানে বাজারে গেলে আমরা যে মাছে-ভাতে বাঙালী তার প্রমাণ মিলছে। শহরের নুনিয়াছড়া (ফিশারিঘাট) মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রতিদিন রূপালি ইলিশ ভর্তি ট্রলার আসছে সারিবদ্ধভাবে। দম ফেলার সময় নেই শ্রমিকের। কেউ ট্রলার থেকে ইলিশ নামাচ্ছে, কেউ বরফ দিচ্ছে। অনেকে ইলিশের ওজন ও স্তূপ দিচ্ছে। বিভিন্ন উপজেলার বাজার থেকে ছুটে আসা পাইকারদের সমাগমে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরগরম হয়ে থাকে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। জেলে, ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় মুখর শহরের ফিশারিঘাট। ইলিশ বেশি ধরা পড়া ও লাভবান হওয়ায় জেলা ও উপজেলাসমূহের মৎস্য আড়তদার, ফিশিং ট্রলার মালিক, মাঝি ও জেলেদের বাড়িতে যেন ঈদ আনন্দ বিরাজ করছে। শহরের এসএমপাড়ার ট্রলার মালিক হাবিবুর রহমান বলেন, সরকারের বিধিনিষেধ মেনে এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে কয়েকদিন সাগরে শিকারে যেতে না পারলেও তাদের দুঃখ নেই মোটেও। বর্তমানে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পড়ছে। এতে লাভের মুখ দেখে খুশি হয়েছেন সকলে। তিনি বলেন, কয়েক দিন ধরে বঙ্গোপসাগর থেকে যেসব ট্রলার ঘাটে ভিড়ছে, দেখা গেছে প্রায় বোটে ইলিশই বেশি ধরা পড়েছে। কারও ট্রলারে ২০ হাজার, কারও ২৫ হাজার এমনকি ৩০-৩৫ হাজার পিসও ইলিশ পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, যে হারে ইলিশ ধরা পড়ছে, দেশের চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে বিদেশেও ইলিশ রফতানি করা যাবে। আগের চেয়ে কম মূল্যে ইলিশ ক্রয় করে খুশিমনে ঘরে ফিরছে ক্রেতা। স্থানীয় বাজারসহ দেশের হাট-বাজারে ইলিশের মূল্য হাতের নাগালে এসেছে। মাত্র ৫শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। প্রতিদিন সাগর থেকে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিয়ে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে আসছে ফিশিং ট্রলার। পরে স্থানীয় পাইকারদের কাছে বিক্রি ছাড়াও ট্রাক-পিকাপসহ বিভিন্ন যানবাহনে চট্টগ্রামসহ দেশের উত্তরাঞ্চলে সরবরাহ দিচ্ছে। তবে সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও নাফ নদীসহ উপকূলীয় নদীগুলোতে ইলিশের দেখা নেই।
×