ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনা মহানগরীর রাস্তার বেহাল অবস্থা

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ১২ আগস্ট ২০১৭

খুলনা মহানগরীর রাস্তার বেহাল  অবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতা এবং খোঁড়াখুঁড়ির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নগরীর অধিকাংশ রাস্তার বেহাল অবস্থা। রাস্তাগুলোতে খানাখন্দ ও ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচল মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাছাড়া ড্রেনেজ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পরও অনেক রাস্তায় দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এতে নগরবাসী চরম জনদুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এ দুরবস্থা থেকে নগরবাসী কবে মুক্তি পাবে তাও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। জানা গেছে, মহানগরীতে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) তালিকাভুক্ত রাস্তা রয়েছে এক হাজার ২১৫টি। রাস্তাগুলোর মোট দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৬৪০ কিলোমিটার। এর মধ্যে আড়াই শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যার দৈর্ঘ্য প্রায় ২০০ কিলোমিটার। এছাড়া সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের একাধিক সড়ক রয়েছে। প্রধান সড়কসহ অনেকগুলো রাস্তা ওয়াসার পানির লাইনের পাইপ বসানোর জন্য ক্ষতবিক্ষত হয়ে আছে। যেখানে ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ি হয়নি এমন রাস্তাগুলো বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে নগরীর এমন কোন রাস্তা নেই, যেখানে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়নি। ইটখোয়া সরে গিয়ে সড়কগুলোতে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এসব সড়কে চলতে গিয়ে নগরবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নগরীর ময়লাপোতা থেকে রয়েলের মোড়ের দিকে যেতে সড়কের মাঝখানে অসংখ্য গর্ত। শের-এ-বাংলা রোড, শামসুর রহমান রোড, ফারাজীপাড়া, মজিদ সরণি, সোনাডাঙ্গা আন্তঃজেলা বাস-টার্মিনালের সামনের রাস্তা, মুজগুন্নী এলাকায় দুর্নীতি দমন কমিশন অফিসের সামনের সড়ক, খালিশপুর হাউসিং এলাকা, নিরালা ও সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানের প্রায় ৭০ ভাগ রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ির পর রয়েল মোড় থেকে রূপসা ফেরিঘাট পর্যন্ত খানজাহান আলী সড়কটি সবচেয়ে বেশি খারাপ। চলাচলের জন্য এ রাস্তায় অস্থায়ীভাবে ইটের সোলিং করে দেয়া হলেও এটি কাঁচা রাস্তায় রূপ নিয়েছে। নগরীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেডিএ এভিনিউর পার্শ্ববর্তী ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই খারপ হওয়ায় বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পরও এ সড়কের নানা স্থানে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা থাকে। কেসিসির পূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নগরীর সড়কের এ বেহালদশা নিয়ে সম্প্রতি প্রকৌশলীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মেয়র। বৈঠকে দ্রুত সড়কগুলো মেরামতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পাশাপাশি গত ১ আগস্ট সড়কের দুরবস্থার চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রণালয়ে (ডিও) চিঠি পাঠান মেয়র। চিঠিতে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণ উল্লেখসহ দ্রুত এসব রাস্তা মেরাতের জন্য ৫০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজস্ব ব্যবস্থায় সড়কগুলো মেরামত করা হবে। এদিকে খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ, তাদের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য খোঁড়াখুঁড়ির কারণে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নগরবাসীর দুর্ভোগের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তিনি খুলনার ওয়াসার প্রকল্প বাস্তবায়নে নাগরিক সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার কিছু অংশ সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে মেরামত করে দেয়া হয়েছে। কিছু রাস্তায় চলাচল উপযোগী করার জন্য ইট সোলিং করে দেয়া হয়েছে। বর্ষাকাল শুরু হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ মেরামত কাজ এগিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি। বর্ষা শেষ হলেই ওয়াসার পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।
×