ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হলি আর্টিজান হামলা মামলার আইও মালয়েশিয়া যাচ্ছেন

প্রকাশিত: ০৪:৪৯, ১২ আগস্ট ২০১৭

হলি আর্টিজান হামলা মামলার আইও মালয়েশিয়া যাচ্ছেন

শংকর কুমার দে ॥ রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) হুমায়ুন কবির তদন্তকাজে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন। মালয়েশিয়া ছাড়া অন্যান্য দেশেও যেতে পারেন তিনি। বিশেষ করে বিদেশে তদন্তকাজে সহায়ক আলামত, সাক্ষী, বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করবেন তদন্ত কর্মকর্তা। হুমায়ুন কবিরকে আদালত বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে অনুমতি দিয়েছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক হুমায়ুন কবির তদন্তের স্বার্থে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম নুরুন্নাহার ইয়াসমিন অনুমতি দেন। হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলার মামলাটিতে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম, জেএমবির সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগ্যান ও বড় মিজানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। হামলার সময় অভিযানে নিহত জঙ্গী নিবরাস ইসলাম মালয়েশিয়ার মোনাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। ঢাকার আদালতের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার আনিসুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে হলি আর্টিজানে হামলা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সম্ভবত আলামত সংগ্রহ, সাক্ষ্য, বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণের মতো বিষয়ে বিদেশে যাচ্ছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এক কর্মকর্তা জানান, গত বছরের ১ জুলাই রাত পৌনে নয়টার দিকে হলি আর্টিজানে হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। হামলার পর রাতেই তারা ২০ জনকে হত্যা করে। সেদিনই উদ্ধার অভিযানের সময় বন্দুকধারীদের বোমার আঘাতে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। পরদিন সকালে যৌথবাহিনীর অভিযানে নিহত হয় পাঁচ হামলাকারী। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেকজনের মৃত্যু হয়। নিহত জঙ্গীরা হলোÑ নিবরাস ইসলাম, মীর সামিহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ওরফে বিকাশ। একই ঘটনায় রেস্তরাঁর বাবুর্চি সাইফুল ইসলাম চৌকিদারও নিহত হন। যেসব বন্ধুকধারী হামলা চালায় তারা নব্য জেএমবি জঙ্গী। জঙ্গী হামলায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত নিহত পাঁচজনের মধ্যে নিবরাস ইসলাম মালয়েশিয়ার মোনাস ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করত। পড়াশোন শেষ না করেই জঙ্গী দলে যোগ দিয়ে হলি আর্টিজানে হামলাসহ জঙ্গী তৎপরতায় যুক্ত হয়। জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে। সংগঠনটির মুখপত্র আমাক হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করে বলে জানায় জঙ্গী তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্স। এ ঘটনায় গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, গুলশানে জঙ্গী হামলার মামলার তদন্তকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এখন চার্জশীট দেয়ার কাজ চলছে। চার্জশীট প্রণয়ন যাতে নির্ভুল ও নিখুঁত হয় সেজন্য তদন্ত কর্মকর্তা বিদেশে যাচ্ছেন তদন্তকাজে। হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলায় নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই বিদেশী। হামলকারীদের মধ্যে একজন বিদেশে অধ্যয়ন করেছে এবং বিদেশের সঙ্গে নিহত ও গ্রেফতার হওয়া জঙ্গীদের যোগাযোগের বিষয়টিও খতিয়ে দেখবেন তদন্ত কর্মকর্তা। এজন্যই মূলত তদন্ত কর্মকর্তা বিদেশে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
×