ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

এ্যাডভোকেট চিত্রা রায়;###;সুপ্রীম কোর্ট, বাংলাদেশ

আইনী পরামর্শ

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ১১ আগস্ট ২০১৭

আইনী পরামর্শ

প্রশ্ন : আমার এলাকার একটি মেয়ে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। বাড়ি থেকে হেঁটেই যে গ্রামের স্কুলে যেত, স্কুলের পথে একটা ফাঁকা জায়গাতে একটি ছেলে প্রতিদিন দাঁড়িয়ে থাকত। মেয়েটি ঐ স্থানে এলেই ছেলেটি নানা রকম অশ্লীল মন্তব্য করত এবং কখনও কখনও প্রেমের প্রস্তাব দিত। মেয়েটি নীরবে সহ্য করে প্রতিদিন স্কুলে যেত। একদিন রাস্তায় কোথাও কোন লোকজন না থাকায় ছেলেটি মেয়েটির হাত টেনে ধরে, মেয়েটি ভয়ে আর্তনাদ করে ওঠে, তার আর্তনাদ শুনে বিলে কাজ করছিল এমন দুজন লোক তাদের দিকে দৌড়ে আসতে থাকে। সে সময় ছেলেটি মেয়েটির হাত ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে আসে। তার জীবনে ঘটে যাওয়া এ ঘটনা খাতায় লিখে রেখে লজ্জায় ও অপমানে বাড়ির পিছনে একটি গাছের ডালে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এখন আইনত কি এই ছেলেটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে? ব্যবস্থা নিলে ছেলেটির কি শাস্তি হবে? আলী হাবিব, রাজশাহী উত্তর : এই ছেলেটির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে হলে মেয়েটির লিখে রেখে যাওয়া ঐ কাগজকে ঊারফবহপব হিসেবে নিয়ে এবং ক্ষেতে কাজ করা ঐ দুই ব্যক্তিকে সাক্ষী মেনে স্থানীয় থানায় বা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর অধীন নারী ও শিশুৃ নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করতে হবে। যেহেতু এখানে যথাযথ ঊারফবহপব ও সাক্ষ্য আছে, তাই এই মামলায় ঐ ছেলেটি মেয়েটিকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অপরাধে অপরাধী বলে প্রমাণিত হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ২(ক) ধারা অনুযায়ী ছেলেটি মেয়েটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সম্ভ্রমহানি করার প্রত্যক্ষ কাজ করেছে এবং মেয়েটি এই সম্ভ্রমহানির গ্লানিতে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। তাই ঐ ছেলেটি মেয়েটির আত্মহত্যার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী। অতএব এক্ষেত্রে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ২ (ক) ধারায় ছেলেটির বিচার ও শাস্তির বিষয়ে সম্পূর্ণরূপে কার্যকর হবে। কোন নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে সম্ভ্রমহানির প্রত্যক্ষ কারণে তার আত্মহত্যার জন্য প্রত্যক্ষরূপে দায়ী হওয়ায় তার সর্বোচ্চ দশ বছর এবং সবনিম্ন ৫ বছর কারাদ-ে দ-িত হবে। এছাড়া বিজ্ঞ আদালত সার্বিক দিক বিবেচনা করে তাকে অতিরিক্ত অর্থদ-ে দ-িত করতে পারবেন।
×