ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্যাশনে শাড়ি

প্রকাশিত: ০৭:০০, ১১ আগস্ট ২০১৭

ফ্যাশনে শাড়ি

দেখা হয়ে গেল মৌ-এর সঙ্গে, বসুন্ধরা শপিংমলে ঢুকতে ঢুকতেই। নূরজাহান মৌ ইডেন পাস। পোশাককেন্দ্রিক সচেতনতা বিস্তর। পেশাদার ডিজাইনার নন, তবুও নিজের পোশাকের ডিজাইন নিজেই করেন। শাড়ি কিনতে এসেছেন এখানে। পছন্দ জর্জেট আর শিফন। গরমে যদিও সুতি খুব যুৎসই, তিনি সামলে রাখতে পারেন না কেন যেন। শিফনও বেশ। ওজনে অদ্ভুত রকমের হালকা। গরমের স্বস্তিতে সুতির পাশাপাশি মলমল, ভিসকস, লিনেনও আরামপ্রদ; জানালেন এমনটাই। রোদের উত্তাপে ঘেমে যাওয়াটা সাধারণ ব্যাপার। ফলে, অস্বস্তি এড়াতে শরীরে বাতাস চলাচলের সুযোগ করে দিতে হয়। দেশীয় তাঁতের সুতি শাড়ি, টাঙ্গাইলের তাঁত বা মণিপুরি তাঁতের শাড়ি বেশ উপযোগী এ সময়ে। ফলে, বেছে নিতে পারেন মোটা পাড়ের একরঙা শাড়ি। হালকা গোলাপি, উজ্জ্বল আকাশি, গেরুয়া, হলুদ, হালকা সবুজ ও নীল রঙগুলো খুব আকর্ষণীয় যেহেতু; এ সবের যে কোনটাও বেছে নিতে পারেন স্বাচ্ছন্দ্যে। তবে হ্যাঁ, কে কোনটা বেছে নেবেন, এ বিষয়টা মানসিক। বৈচিত্র্যতা আনতে পারেন ব্লাউজে। প্রিন্টের সুতি ব্লাউজ, কন্ট্রাস্ট রঙের ব্লাউজ, থ্রি-কোয়ার্টার বা হাফহাতা ব্লাউজ; দারুণ মানিয়ে যায় এ ধরনের শাড়ির সঙ্গে। চাইলে, চন্দ্রি কিংবা খদ্দরের ব্লাউজও পরতে পারেন। অনুষ্ঠানে যাবেন? ভার্সিটি কিংবা অফিস? দিনের সময় রঙিন পাড়ের একরঙা সুতির কোটা শাড়ি মোহনীয় বেশ। হালকা কাজ করা থাকলেও মানিয়ে যাবে অনায়াসেই। রাতের আমন্ত্রণে একটু জমকালো ভাব থাকতেই পারে শাড়িতে। যেহেতু কিছুটা ঠা-া থাকে পরিবেশ; নকশাযুক্ত জমকালো পাড়ের সিল্ক, হাফ সিল্ক, মসলিনের শাড়ি বেছে নিতে পারেন। শাড়ির জমিনজুড়ে যদি একই রঙের সুতার কাজ থাকে, প্রশংসা পাবেন সবার কাছেই। খেয়াল রাখবেন, যেন ব্লাউজটাও জমকালো হয়। হতে পারে সেটা কাতান বা সিল্কের কাপড়ে তৈরি বোট নেক, হাই নেক বা কলার দেয়া সিøভলেস। অমায়িক লাগবে তাতে। অনেক ডিজাইনারই এ মৌসুমে পরার পরামর্শ দেন হালকা কাজ বা নকশার শাড়ি। একরঙা জমিন, ছোট বা চিকন পাড়, হালকা বা ছোট আঁচলসমেত শাড়ি; এক্ষেত্রে বেশ মানানসই। চাইলে, হালকা রঙের প্রিন্ট বা জলছাপ, বাটিক বা ব্লকও থাকতে পারে পছন্দের শীর্ষে। শাড়ির সঙ্গে যুৎসই গহনা তো থাকতেই হবে! তবে, গরম যেহেতু, বাড়তি সাজ বা গহনা বেশ অস্বস্তিকর। যতটা সম্ভব হালকা ও ছোট গহনা বেছে নেবেন। চুল বাঁধবেন উঁচু করে। হাত খোঁপা বা বেণী হলে বেশি ভাল। সামনের চুলগুলো পাফ করে নিতে পারেন। কানে ছোট ঝুমকা, টপ বা অল্প ঝোলানো দুল। গলায় চিকন মালা ঝুলে থাকতে পারে। সুতা, বাঁশ, কাঠ, মাটি ও কাপড়ের বিভিন্ন রকম গহনা পাওয়া যায় আজকাল। এসব গহনাও শাড়ির সঙ্গে মানানসই খুব। ঈদ প্রায় চলে এসেছে। এ উপলক্ষে বাজারে নতুন ডিজাইনের নতুন নতুন শাড়ি আসতে শুরু করেছে। বিভিন্ন দামের ও মানের শাড়ি পাওয়া যাবে এখন বাজারে। রুচি ও আর্থিক অবস্থা ভেদে দেশীয় ফ্যাশন ঘর, বিবিয়ানা, সাদা-কালো, দেশাল, কে ক্রাফট, অঞ্জনস, নগরদোলা, যাত্রা, অরণ্য, বাংলার মেলা ইত্যাদি ঘুরে আসতে পারেন। আজিজ সুপার মার্কেট, বসুন্ধরা শপিংমল, যমুনা ফিউচার পার্ক, টোকিও স্কয়ার, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন জায়গায় পসরা সাজানো থাকে শাড়ির। ও হ্যাঁ, শুধু কিনলে আর পরলেই তো হবে না, যতœও নিতে হবে শাড়ির। তীব্র খার, ব্লিচযুক্ত ডিটারজেন্ট, কিংবা সাবান দিয়ে ধোয়া উচিত নয় শাড়ি। রং তো উঠে যাবেই, নষ্টও হয়ে যাবে। চাইলে হালকা মাড় দেয়া যেতে পারে। কিন্তু, যদি তুলে রাখতে চান অনেকদিনের জন্য, মাড় এড়িয়ে যাওয়া আবশ্যক। শুকাতে হবে ছায়ার মধ্যে। তারপর, আয়রন করে গুছিয়ে রাখতে হবে নির্দিষ্ট স্থানে। তবে, শাড়ি ভাঁজ করে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখাটা বেশি নিরাপদ। শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে ন্যাপথলিন, কালোজিরা, নিমপাতা ইত্যাদি রাখা যেতে পারে। খুব বেশিদিন একভাবে না রেখে, মাস তিনেক পরপর বের করে, হালকা ঝেরে, বাতাসে শুকিয়ে, আবার রেখে দিলে; ভাল থাকবে আপনার প্রিয় শাড়ি। মডেল : শ্রাবণী ও নাবিলা ছবি : নাঈম ইসলাম ও জয় খান
×