ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আমেরিকার দুর্ভেদ্য দুর্গে রুশ গোয়েন্দা বিমান

পেন্টাগনের ওপর নজরদারি

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১১ আগস্ট ২০১৭

পেন্টাগনের ওপর নজরদারি

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির আকাশের উপর দিয়ে বুধবার একটি রুশ গোয়েন্দা নজরদারি বিমান উড়ে গেছে। কংগ্রসভবনসহ বিভিন্ন সরকারী স্থাপনা ও মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর সদর দফত পেন্টাগনের কাছ দিয়ে উড়ে যাওয়ায় এটি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছিল বলে মন্তব্য করেছেন দুজন সরকারী কর্মকর্তা। ওয়াশিংটন পোস্ট। শীতল যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে নিজেদের মধ্যে স্বচ্ছতা এবং আন্তর্জাতিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ তৎপরতা বজায় রাখার স্বার্থে পরস্পরের প্রতি সন্দেহ দূর ও আস্থা আনতে ১৯৯২ সালের ২৪ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াসহ বিশ্বের ২৪ দেশ খোলা আকাশ চুক্তি নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। বর্তমানে ৩৪ দেশ এর সদস্য। এ চুক্তির আলোকে সদস্য দেশগুলো একে অপরের আকাশসীমায় অস্ত্রহীন নজরদারি বিমান ওড়াতে পারবে। ২০০২ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে এ চুক্তি কার্যকর হলেও এ সক্রান্ত কাজ শুরু হয় ওই বছরের আগস্ট থেকে। ২০০২ সালে এ চুক্তি বলে সদস্য দেশগুলো একে অপরের ভূখ-ে ৬৭টি নজরদারি ফ্লাইট পরিচালনা করে। গায়েন্দা নজরদারির কাজে একেক দেশ একেক ধরনের বিমান ব্যবহার করে থাকে। মার্কিন বিমানবাহিনী এ কাজে ব্যবহার করে ওসি ১৩৫বি বিমান, রুশ বিমান বাহিনী ব্যবহার করে আন্তনভ এএন-৩০ এবং টুপলভ টিইউ ১৫৪ বিমান, কানাডা ব্যবহার করে সি ১৩০ হারকিউলিস বিমান। বুধবার ওয়াশিংটনের কংগ্রেস ভবনসহ মার্কিন অন্যান্য সরকারী ভবনের ওপর দিয়ে যে বিমানটি উড়তে দেখা গেছে, সেটি একটি রুশ গোয়েন্দা বিমান টিইউ-১৫৪। স্থানীয় সময় বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকার আকাশসীমা দিয়ে একটি বিমান উড়ে যেতে পারে বলে আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিল মার্কিন ক্যাপিটল পুলিশ। পূর্বাভাসে বলা হয়, ক্যাপিটল পুলিশসহ অন্যান্য মার্কিন সংস্থা নিচু দিয়ে উড়ে যাওয়া ওই বিমানটির ওপর নজর রাখবে। এ ছাড়া, সন্ধ্যায় আরেকটি রুশ বিমান নিউ জার্সির বেডমিনিস্টারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পত্তির উপর দিয়ে উড়ে যাবে বলে সংবাদ প্রচার করে সিএনএন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রা¤প এ মুহূর্তে সেখানে অবকাশ যাপন করছেন। এদিকে নাম গোপন করার শর্তে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, খোলা আকাশ চুক্তির শর্ত মেনেই রুশ গোয়েন্দা বিমানটি উড়ছিল। একইসঙ্গে চুক্তির শর্তাদি মানা হয়েছ কিনা তা পর্যবেক্ষণে মার্কিন বিমান বাহিনীর কয়েকজন সদস্য রুশ বিমানে ছিলেন। এদিকে চুক্তির অপব্যবহার করে রাশিয়া বাড়তি সুবিধা নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিআইএর পরিচালক লে জেনারেল ভিনসেন্ট স্টুয়ার্ড। গত বছর মার্কিন সশস্রবাহিনীর সদর দফতরের মুখপাত্র নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন জেফ ডেভিস সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমাদের স্মরণ রাখতে হবে বিশ্বের বহু দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা নজরদারির শক্তি সবদিক দিয়েই বেশি। অনেক দেশেরই আমাদের মতো সক্ষমতা নাই। তাই একে অপরের প্রতি স্বচ্ছ থাকতে এবং ভুলবুঝাবুঝি দূর করতে কে কি করছে জানার সুযোগ দেয়া উচিত। এ বিষয়ে প্রতিরক্ষা হুমকি কমাতে সহায়তা করে এমন একটি সংস্থার মুখপাত্র ড্যানিয়েল গাফিনি বলেন, খোলা আকাশ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী এ ধরনের কোন ফ্লাইট পরিচালনার সংবাদ সদস্য দেশগুলো কাজ শেষের আগে প্রচার করতে পারবে না। কিন্তু মার্কিন ক্যাপিটল পুলিশ বা প্রতিরক্ষার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন সংস্থা এ শর্তের বরখেলাপ করায় তাদের ছাড় দেয়া যাবে না।
×