ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নিজেদের ধ্বংস ডেকে আনছে পিয়ংইয়ং ॥ ট্রাম্প

চলতি মাসেই গুয়ামে হামলার জন্য প্রস্তুত উ. কোরিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১১ আগস্ট ২০১৭

চলতি মাসেই গুয়ামে হামলার জন্য প্রস্তুত উ. কোরিয়া

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ গুয়ামে সামরিক হামলার জন্য প্রস্তুত উত্তর কোরিয়া। বৃহস্পতিবার পিয়ংইয়ং সাফ জানায়, মধ্য আগস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিকল্পনা রয়েছে। গুয়ামে তারা প্রথমত মাঝারি পাল্লার চারটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে চায়। উত্তর কোরিয়ার এক বার্তা সংস্থার খবরে বৃহস্পতিবার বলা হয়, কিম জং-উন যদি এই পরিকল্পনা পাস করেন তাহলে হুয়াংসং-১২ রকেট জাপানের ওপর দিয়ে গুয়াম থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সাগরে গিয়ে পড়বে। খবর বিবিসি, এএফপি ও আলজাজিরা অনলাইনের। উত্তর কোরিয়া নিজেদের ধ্বংস ডেকে আনছেÑবুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ কথার জবাবে বৃহস্পতিবার পিয়ংইয়ং এই হুঁশিয়ারি দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে চলা বাগ্যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শেয়ারবাজারে প্রভাব ফেলেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের মুদ্রার মান কমে গেছে। বৃহস্পতিবার টোকিও, সাংহাই, নিউইয়র্ক ও লন্ডনের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়াকে সংঘাত এড়াতে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঙ্গেলা মেরকেল। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিশ্ববাসী আর কোন যুদ্ধ দেখতে চায় না। যে কোন যুদ্ধ এড়াতে উভয় দেশের আলোচনার টেবিলে বসা উচিত। এদিকে গুয়ামে উত্তর কোরিয়ার হামলা প্রস্তুতির প্রেক্ষিতে দ্বীপটির গবর্নর ইডি ক্যালভো বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, উত্তর কোরিয়া সস্পর্কে কোন আগাম মন্তব্য করা যায় না। কারণ অতীতে ক্ষেপনাস্ত্র ছুড়ে দেশটি এ অঞ্চলে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়া ফের আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করছে। তবে আমরা কোন ভুল বোঝাবুঝি চাই না। অপরদিকে উত্তর কোরিয়ার এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছে টোকিও। জাপান সরকারের মুখপাত্র ইয়োশিদা সুগা বলেন, উত্তর কোরিয়া এই অঞ্চলে যুদ্ধের উস্কানি দিচ্ছে। পিয়ংইংয়ের এই ধরনের উস্কানি জাপানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য হুমকি। জাপান এই ধরনের উস্কানি সহ্য করবে না। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় গুয়াম দ্বীপে ১ লাখ ৬২ হাজারের মতো লোকের বাস। ছবির মতো সুন্দর দ্বীপটিতে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। কিন্তু গুয়ামের গুরুত্ব অন্য জায়গায়। ছয় হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে এখানে। আরও রয়েছে এ্যান্ডারসন সেনা বিমানঘাঁটি এবং নৌবাহিনীর একটি ঘাঁটি। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি কোরীয় উপদ্বীপে শক্তি প্রদর্শনে এ্যান্ডারসন বিমানঘাঁটি থেকেই উড়ে যায় বোমারু বিমান। তাই বেছে বেছে গুয়ামকেই লক্ষ্য করতে চাইছে উত্তর কোরিয়া। এর আগে উত্তর কোরিয়াকে উদ্দেশ্য করে ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন যে যুক্তরাষ্ট্রকে আবার পারমাণবিক হামলার হুমকি দিলে এর সমুচিত জবাব দেয়া হবে। তারপরই বুধবার উত্তর কোরিয়া জানায়, কৌশলগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপনা হিসেবে পরিচিত গুয়ামে দেশটি মাঝারি দেকে দূর পাল্লার রকেট নিক্ষেপ করার পরিকল্পনা করছে। এরপর থেকে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। উত্তর কোরিয়ার অনবরত এমন হুমকির আবারও পাল্টা জবাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলছে, উত্তর কোরিয়ার এমন যে কোন পদক্ষেপ হবে তাদের নিজেদের শাসন ক্ষমতার শেষ হতে দেখা। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে পিয়ংইয়ং যদি কোন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় তাহলে দেশটির ওপর সর্বশক্তি প্রয়োগ করা হবে।
×