ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও স্মৃতিকথায় সন্তোষ গুপ্তকে স্মরণ

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১০ আগস্ট ২০১৭

বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও স্মৃতিকথায় সন্তোষ গুপ্তকে স্মরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের সংবাদপত্র জগতে সন্তোষ গুপ্ত একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। তিনি একাধারে নিষ্ঠাবান সাংবাদিক, চিন্তাশীল লেখক ও অগাধ পা-িত্যের অধিকারী ছিলেন। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় তার পদযাত্রা ছিল অপরিমেয় মেধা ও দক্ষতাপূর্ণ। রাজনৈতিক চেতনায় অভিষিক্ত হয়ে তিনি সাংবাদিকতা পেশায় ভিন্নমাত্রা যোগ করেছিলেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তার রাজনৈতিক ভাষ্য অনেক রাজনৈতিক নেতার জন্য ছিল এক ধরনের দিকনির্দেশনা। বরেণ্য এই সাংবাদিক-সাহিত্যিক, দৈনিক সংবাদের সাবেক সিনিয়র সহকারী সম্পাদকের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল ৬ আগস্ট। তার প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশ হয় ‘সন্তোষ গুপ্ত জীবনী গ্রন্থ’। একাডেমির শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে বুধবার বিকেলে গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন ও স্মৃতিকথায় স্মরণ করা হয় এই ব্যক্তিত্বকে। সন্তোষ গুপ্ত স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় ছিল বাংলা একাডেমি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী, বইটির লেখক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সন্তোষ গুপ্ত স্মৃতি পরিষদের আহ্বায়ক মোনায়েম সরকার। ‘আছে দুঃখ আছে মৃত্যু’ ও ‘জীবন মরণে সীমানা ছাড়ায়ে’ শিরোনামের পর পর দুটি রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশনার মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন শিল্পী রোকাইয়া হাসিনা। এরপর বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক সোহরাব হাসান। তিনি বলেন, সন্তোষ গুপ্ত ছিলেন নবীন ও সমবয়সী সহকর্মী সবার সন্তোষ দা। তিনি সব সময় প্রতিকূলে চলতে ভালবাসতেন। আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন তিনি। প্রথম সংগ্রাম ছিল পারিবারিক, পরবর্তীতে দেশের জন্য লড়েছেন। এমন উদার ও মহৎ মানুষ আমাদের সমাজে বিরল। তার স্বপ্ন ও দর্শন যদি বাস্তবায়ন হয় তাহলে তার আত্মা শান্তি পাবে। বইটির লেখক মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, সন্তোষ দা’র মৃত্যুর পর থেকে নানা আয়োজনে তাকে স্মরণ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাকে যতটা অনুসরণ আমাদের করা দরকার ততটা আমরা করতে পারিনি। তার আদর্শকে যদি আমরা অনুসরণ করার চেষ্টা করি তাহলে সাংবাদিকতাকে কলুষমুক্ত করা সম্ভব হবে। কামাল লোহানী বলেন, আমার মনে হচ্ছে সন্তোষ দা চলে গিয়ে ভালই করেছেন। এখনকার মতো অপ-সাংবাদিকতার মধ্যে তিন থাকলে কষ্ট পেতেন। তার মতো স্পষ্টবাদী সংবাদকর্মী এখন আর তেমন দেখা যায় না। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মদিনা। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ডিএফপির সাত দিনের অনুষ্ঠানমালা শুরু জাতীয় শোকদিবস ১৫ আগস্ট উপলক্ষে শুরু হয়েছে সাত দিনের বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র, স্থিরচিত্র ও বই প্রদর্শনী। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের (ডিএফপি) আয়োজনে বুধবার রাজধানীর কাকরাইল সার্কিট হাউস রোডে অধিদফতর প্রাঙ্গণে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন তথ্য সচিব মরতুজা আহমদ। উদ্বোধনী দিনে ডিজিটাল পর্দায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ রঙিন সংস্করণ দেখানো হয়। এর আগে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের তিনটি প্রকাশনা ‘সচিত্র বাংলাদেশ’, ‘নবারুণ’ ও ‘বাংলাদেশ কোয়ার্টারলি’র বিগত কয়েক বছরের আগস্ট মাসের সংখ্যা ও অন্যান্য প্রকাশনা নিয়ে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইসতাক হোসেন, পরিচালক আবদুল্লাহ আল শাহিন, সিনিয়র সম্পাদক কামরুজ্জামান প্রমুখ। আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সর্ব সাধারণের জন্য এই প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতর থেকে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রগুলো প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অধিদফতরের মাল্টিপারপাস হলে দেখানো হবে। বইয়ের প্রদর্শনীও চলবে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। অনুষ্ঠানে অধিদফতরের মাল্টিপারপাস হলে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে শুদ্ধাচার পুরস্কার পান সহকারী চিত্র প্রযোজক আবদুল্লাহ আল হারুন ও উচ্চমান সহকারী মঈন উদ্দিন। ‘লোকনায়ক কাঙাল হরিনাথ’ প্রামাণ্যচিত্রটি শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র হিসেবে ২০১১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হওয়ায় চিত্র প্রযোজক মোহাম্মদ আবু তাহেরকে অভিনন্দনপত্র দেয়া হয়। ‘একাত্তরের গণহত্যা ও বধ্যভূমি’ প্রামাণ্যচিত্রটি ২০১৫ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্যচিত্রের পুরস্কার পাওয়ায় এর সহকারী চিত্র প্রযোজক আবদুল্লাহ আল হারুন, চিত্রগ্রাহক শাহ আলম, চিত্রগ্রহণ সহকারী আকরামুল ইসলাম ও চিত্রগ্রহণ সহকারী আবুল খায়ের মল্লিকেও অভিনন্দনপত্র দেয়া হয়। শিল্পী লাইসা আহমদ লিসার গানে মুগ্ধ শ্রোতা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রিয় ঋতু বর্ষা। এই ঋতুর আর বাকি আছে মাত্র কয়েকদিন। শ্রাবণের শেষ প্রান্তে মেঘলা সন্ধ্যায় বুধবার শ্রোতারা মুগ্ধ হলেন রবীন্দ্রনাথের বর্ষার গানে। জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এদিন সন্ধ্যায় বসেছিল রবীন্দ্রনাথের বর্ষার গানের এই আসর। ঢাকার ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আয়োজনে অনুষ্ঠানে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন লাইসা আহমদ লিসা। শুরুতেই ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক জয়শ্রী কু-ু শিল্পী লাইসা আহমদ লিসাকে শ্রোতাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সঙ্গীত পরিবেশনের আগে লাইসা আহমদ লিসা বলেন, আজ রবীন্দ্রনাথের বর্ষার গানগুলোই মূলত গাইছি। এছাড়াও থাকছে বর্ষার গানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু প্রেমের গান। অনুষ্ঠানের প্রথম পরিবেশনা ছিল ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’। একে একে লাইসা আহমদ লিসা শোনান ‘আজ যেমন করে গাইছে আকাশ’, ‘আজি তোমায় আবার চাই শোনাবারে’, ‘স্বপ্নে আমার মনে হল’, ‘আমারে যদি জাগালে আজি নাথ’, ‘মন মোর মেঘের সঙ্গী’, ‘যে রাতে মোর দুয়ারগুলি’, ‘অশ্রুভরা বেদনা’, ‘মনে কী দ্বিধা’, ‘আমি তখন ছিলেম মগন’, ‘আমি এলাম তারি দ্বারে’, ‘দীপ নিভে গেছে মম’, ‘চিনিলে না আমারে কী’ এবং ‘আজি ঝড়ের রাতে’। যন্ত্রানুষঙ্গে তবলায় ছিলেন এনামুল হক ওমর, কিবোর্ডে রবিন্স চৌধুরী, এস্রাজে অসিত বিশ্বাস ও মন্দিরায় নাজমুল আলম। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে হিরোশিমা দিবস পালন প্রতি বছরের মতো এবারও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নবীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে হিরোশিমা দিবস পালন করে বুধবার। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে বিকেলে আয়োজিত ‘শান্তির সপক্ষে নতুন প্রজন্ম’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আরশাদ মোমেন। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পর্বে অংশ নেয় ক্যালিক্স প্রি-ক্যাডেট স্কুল, হাজারীবাগ গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজ ও মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউটের ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা শহরের ওপর পারমাণবিক বোমা বর্ষণে অযুত মানুষের প্রাণনাশ ঘটে এবং পরবর্তীকালে পারমাণবিক বিকিরণে অনেকের সঙ্গে কিশোরী সাদাকো সাসাকিরও জীবনাবসান হয়। সাদাকো স্মরণে কাগজ কেটে সাদা সারস বানিয়ে বিশ্বব্যাপী কিশোর-কিশোরীরা শান্তির সপক্ষে হিরোশিমা দিবস পালন করে।
×