ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ার ধর্ষিতা ও তার মা এখন যেমন আছে

এমন কেউ কি নেই, যিনি মেয়েটির লেখাপড়ার দায়িত্ব নেবেন...

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১০ আগস্ট ২০১৭

এমন কেউ কি নেই, যিনি মেয়েটির লেখাপড়ার দায়িত্ব নেবেন...

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়ার ঘটনায় সুধীজনের কথা-এখন কী হবে! মেয়েটি কি লেখাপড়া করতে পারবে? দেশে তো কত ধনাঢ্য ব্যক্তি আছেন। তাদের অনেকে অনেক সময় সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মানবিক দায়িত্ব পালন করেন। এমন কি কেউ নেই যিনি মেয়েটির লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়ে তাকে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। বর্তমানে ধর্ষিতা মেয়ে ও তার নির্যাতিতা মায়ের অবস্থান রাজশাহীতে প্রায় চার কিলোমিটার ব্যবধানে। মেয়েটি আছে রাজশাহী-নওগাঁ সড়কের ধারে বায়া এলাকার সেফহোমে, যা পরিচালনা করে সমাজসেবা অধিদফতর। সেখান থেকে কিছুটা দূরে মা আছেন শাহ মখদুম থানা চত্বরে অবস্থিত ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে, যা পরিচালনা করে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি)। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, এখন মামলার গতি প্রকৃতি অনুযায়ী দ্রুত চার্জশীট দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যদি দ্রুত বিচার আদালতে মামলাটি নেয়া হয় তাহলে বিচারকাজ চলবে রাজশাহীতে। কারণ দ্রুত বিচার আদালত রয়েছে রাজশাহীতে। সূত্র জানায়, সেফহোম নিজের ঘরের মতোই। রাজশাহীর সেফহোম শুধু মেয়েদের জন্য। সমাজসেবা অধিদফতরের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা এই সেফহোমের দায়িত্বে থাকেন। সেফহোমের প্রত্যেক বাসিন্দাকে পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়া হয়। অনেকটা মেয়েদের হোস্টেলের মতো। তিন বেলা সময় মতো খাবার দেয়া হয়। সেখানে সব কিছুই নিয়মের মধ্যে চলে। কেউ বাইরে যেতে চাইলে নিরাপত্তা দেয়া হয়। অযাচিত কোন ব্যক্তি সেখানে কোনভাবেই প্রবেশ করতে পারে না। তবে মা বাবা দেখা করতে চাইলে নিরাপত্তা কর্মীর মাধ্যমে তাদের দেখা করানো হয়। এ সময় তারা কিছুটা সময় তারা নিজেদের বাড়ির পরিবেশে থাকেন। এই সেফহোমে বগুড়ার মেয়েটি সেই সুবিধাই পাবে। এদিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের ধরনও প্রায় একই। নিজ বাড়িতে যে সুযোগ-সুবিধা তার সবই সেখানে আছে। সেখানকার বাসিন্দা মুক্ত জীবন যাপন করে। শুধু নিরাপত্তাজনিত কারণে ব্যক্তিগত কাজে একা বাইরে যেতে পারেন না। তার অর্থ এই নয় যে, সে বাইরে যেতে পারবে না। বাইরে যাওয়ার সময় তাকে পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়া হয়। নির্দিষ্ট সময়ে তাকে ফিরে আসতে হয়। বগুড়ার নির্যাতিতা মা সেখানকার সকল সুবিধাই পাবেন। এই বিষয়ে অনেকেই বলাবলি করেন, মেয়ে ও তার মাকে আলাদা করে রাখা ঠিক হয়েছে কি-না! এর উত্তর মেলে এভাবে- যে ঝড় তাদের ওপর বয়ে গেল তাতে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য এইটুকু মেনে নিতেই হবে। তাছাড়া রাজশাহীর মেয়েদের সেফহোমে অনেক মেয়ের সঙ্গে নতুন করে পরিচিত হবে। দিনে দিনে সব কিছুই মানিয়ে নিয়ে এক সময় জীবনের সরল পথে সে চলতে পারবে।
×