ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ ও তিতুমীর কলেজের ছাত্রসহ গ্রেফতার ৫

ভুয়া মাস্টার কার্ড বানিয়ে বিদেশে অর্থ পাচার

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১০ আগস্ট ২০১৭

ভুয়া মাস্টার কার্ড বানিয়ে বিদেশে অর্থ পাচার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুদ্রা পাচারের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজ ও ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ছাত্রসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা ভুয়া মাস্টার কার্ড বানিয়ে বিদেশে অর্থ পাচারে জড়িত। তাদের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই কোটি কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। বছরখানেক ধরে তারা অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত। বুধবার ঢাকার মালিবাগে সিআইডি সদর দফতরে এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানাল সংস্থাটি। সিআইডির সংঘবদ্ধ অপরাধ বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, রাজধানীর পশ্চিম ধানম-ির হাজারীবাগ এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র আসকার ইবনে ইসহাক শাকিল (২৪), ঢাকা কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রিয়াজুল ইসলাম ওরফে ইমরান (২২), ২০১৫ সালে সরকারী তিতুমীর কলেজের মার্কেটিং বিভাগ থেকে পাস করা সৈয়দ মেহেদী হাসান (২৯), ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী জহিরুল হক (২৫) ও কেরানীগঞ্জের বিকাশ ও ফ্ল্যাক্সি লোডের ব্যবসায়ী হায়দার হোসেন (৩০)। তাদের কাছ থেকে ১৪১টি মাস্টার কার্ড, নগদ নয় লাখ সাড়ে ২১ হাজার টাকা, একটি সিপিইউ, একটি লেমিনেটিং মেশিন, প্রিন্টার কাম স্ক্যানার, ইসলামী ব্যাংকের দুইটি সিল, দুইটি ল্যাপটপ, ৩২টি ব্যাংক চেক ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনে পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রাজধানীর হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃতরা ডলার বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত। তারা ভুয়া নাম ঠিকানা দিয়ে অনলাইনে এ্যাকাউন্ট খুলে। আর সেই এ্যাকাউন্টে ডলার কিনে থাকে। এরপর তাদের এ্যাকাউন্ট নম্বরে মুদ্রা পাচারকারীদের চাহিদা অনুসারে টাকা ডলারে রূপান্তর করে দেয়। ওই কার্ড নিয়ে বিদেশে চলে যান কার্ডের মালিকরা। সেখানেই কেনাকাটা করে থাকেন। এতে করে বিদেশে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। কারণ সরাসরি নির্দিষ্ট পরিমাণ কাগজের নোট ছাড়া অতিরিক্ত নোট নিয়ে বিমানবন্দর অতিক্রম করা বা বিদেশে যাওয়া কঠিন। এজন্য তারা মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে অর্থ নিয়ে যাচ্ছে। ইমিগ্রেশন বিভাগ তার কার্ডে কত টাকা আছে আর কত টাকা তিনি বিদেশে খরচ করে এলেন তার কোন হিসেব যাওয়া বা আসার সময় জানতে চায় না। এমন সুযোগটিকেই কাজে লাগায় পাচারকারীরা। এছাড়া মুদ্রা পাচারকারীরা বিদেশে থাকা তাদের লোকজনের এ্যাকাউন্টে দ্রুত টাকা স্থানান্তর করে দেয় মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে। এভাবে অর্থ পাচার হচ্ছে। এ ধরনের অনলাইন এ্যাকাউন্টের উপর তেমন কোন মনিটরিং ব্যবস্থা নেই। এমনকি বাংলাদেশের কোন ব্যাংকের হিসাব নম্বরের যোগসূত্র না থাকায় কী পরিমাণ অর্থ পাচার হচ্ছে বা হয়েছে তার হিসেব মেলেনি। একবছর ধরে এভাবেই চক্রটি অর্থ পাচার করে আসছিল। তাতে কোটি কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার রায়হানুল হক, মুহাম্মদ মিনহাজুল ইসলাম ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) শারমিন জাহানসহ উর্ধতন সিআইডি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×