ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাগর কোড়াইয়া

কলঙ্কিত ইতিহাস

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১০ আগস্ট ২০১৭

কলঙ্কিত ইতিহাস

বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা, উদ্দীপিত হওয়ার বজ্রধ্বনী, বুলেটের সামনে দাঁড়াবার অনুপ্রেরণা, স্বাধীনতার জয়ধ্বনী, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার অগ্রনায়ক, বন্ধন শৃঙ্খল চূর্ণ করে আলোর নিশান বয়ে বেড়াবার প্রেরণাদায়ী, শিকড় থেকে জাতিকে উন্নয়নের শিখরে পৌঁচ্ছে দেয়ার পথপ্রদর্শক ও পিতার ন্যায় বিপদে-আপদে আগলে রাখার পর্বতসমান মৌন্যধ্যানী। শুধু এই কয়েকটি বাক্যে বঙ্গবন্ধুকে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এই বাক্যগুলোর বহু উর্ধে। তিনি আমাদের জাতির পিতা। যিনি বাঙালী জাতিকে স্বাধীনতার স্বাদ দিয়েছেন। জনগণকে তিনি হাত ধরে, অহিংস নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে পথ চলতে সাহস যুগিয়েছেন। সারাটি জীবন নিজের কথা, পরিবারের চিন্তা বাদ দিয়ে জনগণের মঙ্গল-কল্যাণে ব্যাপৃত ছিলেন। তিনি এ দেশের প্রতিটি পরিবারকে নিজের পরিবার করে নিয়েছিলেন। আপামর জনসাধারণের কাতারে যিনি অবলীলায় মিশে যেতে পারতেন। তাঁকে জাতির পিতা আখ্যা দেয়াটাই যুক্তিযুক্ত। বাংলার ইতিহাসে ত্রাণকর্তা হিসেবে বঙ্গবন্ধু একজনই এসেছিলেন। আর কোন বঙ্গবন্ধুর জন্ম হবে না বাংলার বুকে। বাঙালী বীরের জাতি। পৃথিবীর ইতিহাসে টিকে থাকতে বাঙালী সব সময়ই সংগ্রাম করে এসেছে। অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়াবার শিক্ষা বাঙালী চর্চা করেনি। ব্রিটিশ শাসন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে বহু বাঙালী স্বাধীনতা আদায়ে আন্দোলন করেছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুই একমাত্র ব্যক্তি যিনি অধিকার আদায়কে জনগণের অধিকার আদায়, স্বাধীনতা লাভকে জনগণের স্বাধীনতা এবং বাংলা বলতে বাংলার জনগণকেই বুঝেছেন। আমি বঙ্গবন্ধুকে দেখিনি কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বাংলাকে দেখেছি। স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখিনি তবে বঙ্গবন্ধুর বাক্যবলয়ে যুদ্ধের দৃঢ়মনোবলে উজ্জীবিত হওয়া মুক্তিযোদ্ধাকে দেখেছি। বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে দেখিনি কিন্তু বত্রিশ নম্বরের সেই রক্তে মাখা ঐতিহাসিক বাড়িটি দেখেছি। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনিনি তবে ৭ মার্চের অগ্নিঝরা ভাষণের রক্তনাচন নিজের মধ্যে উপলব্ধি করি। রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতার লৌহকঠিন আহ্বান ও লাখো জনতার আবেগ-উচ্ছ্বাস দেখিনি কিন্তু তরুণ প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত, লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম, লাল-সবুজ পতাকা, মানচিত্র ও স্বাধীনতার কবিতা-গান-সিনেমা নিয়ে মেতে উঠতে দেখি। স্বাধীনতা যুদ্ধের মতো ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একটি ইতিহাস। জাতির জন্য কলঙ্কিত অধ্যায়ের সূচনা। বঙ্গবন্ধুর দৃঢ় বাণীকে মুছে ফেলতে ঘাতকদের বুলেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর বুক। বঙ্গবন্ধুর বুক ক্ষতবিক্ষত হওয়া মানে বাংলাদেশের ভূখ-ে চিৎকাররত শকুনের হিংস্র কামড়। সত্যিকারের ইতিহাসকে অন্যদিকে ধাপিত করার যে নীলনক্সা কুচক্রিমহল তৈরি করেছিল সেখানে ক্ষণিকের জন্য ওরা সফল হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। যে ইতিহাস বাঙালীর প্রাণের ভেতরে লেখা রয়েছে। বনানী, ঢাকা থেকে
×