ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উঃ কোরিয়াকে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ১০ আগস্ট ২০১৭

উঃ কোরিয়াকে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়াকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, দেশটি যুক্তরাষ্ট্রকে কোন হুমকি না দিলেই ভাল করবে। ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারির পর উত্তর কোরিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় মার্কিন টেরিটরি গুয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিবেচনা করছে বলে জানায়। এর আগে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে ফের পারমাণবিক হামলার হুমকি দিলে, সমুচিত জবাব দেয়া হবে। ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাল্টা হুমকি দেয় উত্তর কোরিয়া। নিউইয়র্ক টাইমস ও বিবিসি। নিউজার্সির বেডমিনস্টারে নিজের গলফ্ ক্লাব থেকে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া আমেরিকাকে আর কোন হুমকি না দিলেই ভাল করবে। অন্যথায় তারা ‘ফায়ার এ্য্যান্ড ফিউরি’র (কম্পিউটার গেম) অকল্পনীয় ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি হবে। এমন ভয়াবহ পরিণতির মুখে পড়বে যা বিশ্ব আগে কখনও দেখেনি।’ ট্রাম্প বর্তমানে অবকাশ যাপন করছেন। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, তিনি দিন দিন সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছেন, এখনই সংযত না হলে দেশটিকে এমন পরিণতি ভোগ করতে হবে যা বিশ্ব আগে দেখেনি। গুয়ামের গবর্নর এডি কালভো উত্তর কোরিয়ার হামলার হুমকি উড়িয়ে দিয়েছেন। বুধবার টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে তিনি বলেন, তার দেশ যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সম্পূর্ণ তৈরি আছে। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে যে তারা এখন প্রশান্ত মহাসাগরীয় মার্কিন মালিকানাধীন দ্বীপ গুয়ামে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক রকেট নিক্ষেপ করার পরিকল্পনা করছে। গুয়ামে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটি রয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমাঞ্চলীয় ওই দ্বীপের এ্যান্ডারসন ঘাঁটি থেকে সম্প্রতি একটি মার্কিন বোমারু বিমান কোরিয়া উপদ্বীপের ওপর উড্ডয়ন করেছিল। উত্তর কোরিয়া নতুন করে হুমকি দেয়ায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আবার বেড়েছে। উত্তর কোরিয়া ইতোমধ্যেই এমন পারমাণবিক ওয়ারহেড তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে, যা কোন ক্ষেপণাস্ত্রে বসিয়ে ব্যবহার করতে পারবে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা এর আগে বলেছিলেন। এদিকে উত্তেজনার মাত্রা আরও বাড়িয়ে উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনী কেপিএ (কোরিয়ান পিপলস আর্মি) এক বিবৃতিতে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সামনে একটিই বিকল্প খোলা রয়েছে সেটি হলো যুদ্ধে না জড়ানো। ‘ওয়াশিংটন যদি মনে করে তাদের মূল ভূখ-ে কেউ আঘাত করতে পারবে না, তবে সেটি হবে তাদের দিবাস্বপ্ন।’ কেপিএ’র স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সের ব্যালিস্টিক মিসাইল যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাক করে রাখা আছে বলেও ওই বিবৃতিতে বলা হয়। উত্তর কোরিয়ার এসব হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্পের পাল্টা হুঁশিয়ারি ছিল অনেকটা আনুষ্ঠাানিক। পিয়ংইয়ংেেয়র হুমকির মোকাবেলায় মার্র্কিন প্রেসিডেন্টরা সাধারণত এরকম ভাষাই ব্যবহার করে থাকেন। যুক্তরাষ্ট্র এক্ষেত্রে কি কি বিকল্প বিবেচনা করছে তা স্পষ্ট করে জানান হয়নি। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগে হামলা চালানোর কৌশল তারা শেষ বিকল্প হিসেবে রেখেছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তর কোরিয়া যেন ক্ষেপণাস্ত্র বা পরমাণু কর্মসূচী নিয়ে আর অগ্রসর না হয় ট্রাম্প দেশটিকে সেই বার্তাটি দেয়ার চেষ্টা করছেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্র্যাসির প্রধান নির্বাহী মার্ক দুবোভিজৎ মনে করেন যুদ্ধে যাওয়া বা না যাওয়ার প্রশ্নে ট্রাম্প প্রশাসন এখন পূর্বসূরীদের চেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। এবার যুদ্ধ শুরু করলে সেটি কত দূর গড়াবে তা নিশ্চিত নয়। মৌখিক হুঁশিয়ারিতে কাজ হতে পারে ভেবে যুক্তরাষ্ট্র এতদিন উত্তর কোরিয়াকে সতর্ক করে এলেও তাতে কাজ হয়নি।
×