ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভয়াবহ বিদ্যুত সঙ্কটে ধুঁকছে রাজশাহী ॥ অতিষ্ঠ মানুষ

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ১০ আগস্ট ২০১৭

ভয়াবহ বিদ্যুত সঙ্কটে ধুঁকছে রাজশাহী ॥ অতিষ্ঠ মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী অঞ্চলে বিদ্যুতের সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং করেও কুলাতে পারছেন না বিদ্যুত বিভাগ। গত দুই সপ্তাহ ধরে এ অঞ্চলে বিদ্যুতের সঙ্কট দেখা দিলেও গত তিন দিন ধরে তা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বিদ্যুত সমস্যার কারণে কলকারখানায় উৎপাদন থেকে শুরু করে সেবামূলক বিভিন্ন কাজকর্ম স্থবির হয়ে পড়েছে। শুধু শহর নয়, গ্রামাঞ্চলেও দেখা দিয়েছে একই পরিস্থিতি। চলমান পরিস্থিতি সমাধানে রাজশাহীতে বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের তাগিদ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের রাজশাহী মহানগর নেতারা। তবে রাজশাহী বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, উৎপাদন কম হচ্ছে, তাই লোডশেডিং বাড়ছে। রাজশাহী নর্থ ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী মহানগর এলাকার পাঁচটি অঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা ৮৫ থেকে ৯০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৬০ থেকে ৬২ মেগাওয়াট। সন্ধ্যার দিকে এ চাহিদা আরও বেড়ে যায়। সেই অনুপাতে সরবরাহ বাড়েনি। ফলে লোড ম্যানেজমেন্ট করতে হচ্ছে। বিদ্যুত উৎপাদন কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে নর্থ ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিদ্যুতের উৎপাদন অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে। সে কারণে চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুত নিয়ে লোড ম্যানেজমেন্ট করতে তাদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারাসহ দেশের কয়েকটি বিদ্যুত কেন্দ্রে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। এগুলো মেরামতের কাজ চলছে। উৎপাদন কেন্দ্রগুলো চালু হলেই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তবে সহসা এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ মিলবে কিনা এ নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি এ কর্মকর্তা। এদিকে রাজশাহীর কাটাখালী গ্রিড থেকে জেলার পবা উপজেলার কিছু এলাকা, পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকা ও চারঘাট উপজেলায় বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা ৪০ মেগাওয়াট থাকলেও বিপরীতে সরবরাহ মিলছে গড়ে ২১ মেগাওয়াট। এছাড়া রাজশাহী পল্লীবিদ্যুত সমিতি থেকে জেলার তানোর, গোদাগাড়ী, মোহনপুর, দুর্গাপুর ও পবার কিছু এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। এসব এলাকাতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। গ্রামেও চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুত মিলছে। এ কারণে দুই থেকে দেড় ঘণ্টা করে লোড ম্যানেজমেন্ট করতে হচ্ছে। এদিকে মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুত সঙ্কটের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, সরকারের সুনাম ক্ষুণœ করতেই বিদ্যুত বিভাগের একটি চক্র ইচ্ছে করেই এমন কাজ করছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন মানুষ।রাজশাহী শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি মনিরুজ্জামান মণি বলেন, মাঝখানে বিদ্যুতের কারণে দুর্ভোগ কমেছিল। তবে আবার রাজশাহীতে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হচ্ছে। এদিকে চলমান সমস্যা সমাধানের জন্য রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা নর্থ ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। আওয়ামী লীগ নেতা লিটন এ সময় কর্মকর্তাদের সকল অসঙ্গতি ও কোন ষড়যন্ত্র যদি থাকে তাহলে তা দূরে সরিয়ে সরকারের উন্নয়ন জনগণের দ্বারে পৌঁছে দিতে দ্রুত বিদ্যুতের সঙ্কট নিরসনের তাগিদ দিয়েছেন।
×