ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হঠাৎ করে প্রকৌশল পণ্য রফতানিতে উল্লম্ফন

জুলাই মাসে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ২৬.৫৪ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১০ আগস্ট ২০১৭

জুলাই মাসে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ২৬.৫৪ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রথম জুলাই মাসে রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩২০ কোটি ৭ লাখ ডলার। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ২৫৩ হাজার কোটি ৪৩ লাখ ডলার। অর্থাৎ রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ। জুলাই মাসে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩২৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ সময়ে রফতানি আয় বাড়লেও ০.৯৯ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা কম হয়েছে। এদিকে অর্থবছরে প্রথম মাসে পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থবছরের প্রথম মাসে প্রকৌশল পণ্য রফতানির উল্লম্ফনে প্রবৃদ্ধি অর্জনে রেকর্ড গড়েছে। এ খাতে মাত্র ৭ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় এসেছে ২৩ কোটি ২৯ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ২০৭ শতাংশ। প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৭০২ শতাংশ। বুধবার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ইপিবি’র প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রফতানি আয় অর্জিত হয়েছিল ৩ হাজার ৪৬৫ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার। অর্থবছরে প্রথম জুলাই মাসে রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩২০ কোটি ৭ লাখ ডলার। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ২৫৩ হাজার কোটি ৪৩ লাখ ডলার। অর্থাৎ রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ। জুলাই মাসে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩২৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ সময়ে রফতানি আয় বাড়লেও ০.৯৯ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা কম হয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্য মতে, দেশের পণ্য রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি তৈরি পোশাক খাত থেকে আসে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে গত জুলাই মাসে ২৪৭ কোটি ৯২ লাখ মার্কিন ডলারের পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। তার আগের অর্থবছরের একই মাসে ২১১ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছিল। গত বছরের তুলনায় পোশাক রফতানিতে ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও রফতানি লক্ষ্যমাত্র পূরণ হয়নি। জুলাই মাসে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬০ কোটি ৫০ লাখ ডলার। গত মাসে ১২১ কোটি ৫৯ লাখ ডলারের ওভেন পোশাক ও ১২৬ কোটি ডলারের নিট পোশাক রফতানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের তুলনায় নিট পোশাকে ১৭ দশমিক ২৮ শতাংশ ও ওভেন পোশাকে ১৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। কিন্তু গত মাসে নিট ও ওভেন পোশাক রফতানিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন কারণে সক্ষমতা হারিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বিশেষ করে এ্যাকোর্ড, এ্যালায়েন্স এর পরিদর্শনের পর কিছু কারখানা আংশিক, সাময়িক ও পূর্ণাঙ্গভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাংক ঋণ ও বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য ব্যয় মিটিয়ে অনেকের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে কঠিন সঙ্কটের মুখে পোশাক শিল্প। বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট বলেন, পোশাক তৈরির উপকরণ বোঝাই জাহাজকে পণ্য খালাসের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে, পণ্য খালাস করতে না পারায় কন্টেনার ভাড়া বাবদ বন্দর ও জাহাজ কোম্পানিতে অতিরিক্ত জরিমানা প্রদান করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, টানা আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে বন্দরে জাহাজজট চলমান থাকার পরিস্থিতির সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে জাহাজীকরণ জটিলতা Ñ রফতানি কন্টেনার না নিয়েই জাহাজের বন্দর ছেড়ে যাওয়ার ঘটনা, যা ইতিহাসে কখনই ঘটেনি। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বিদেশী ক্রেতারাও সময়মতো পোশাক পাবে না। ফলে রফতানি আয় সামনের দিনগুলোতে আরও কমে আসবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। অর্থবছরের প্রথম মাসে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা ও প্রবৃদ্ধি অর্জনে রেকর্ড গড়েছে প্রকৌশল পণ্য। এই সময়ে মাত্র ৭ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় এসেছে ২৩ কোটি ২৯ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ২০৭ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে এ খাতে মাত্র ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার আয় আসে। সে হিসেবে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৭০২ শতাংশ। এছাড়া জুলাই মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে আগে অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। আয় হয়েছে ১১ কোটি ৬৭ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ৭ শতাংশ কম। প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। এই সময়ে আয় এসেছে ৮৩ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম। গত মাসে পাট ও পাটজাত পণ্যে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্র ও প্রবৃদ্ধি কোনটিই অর্জিত হয়নি। গত মাসে ৯ কোটি ১১ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় এসেছে ৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। অন্যদিকে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৫১ শতাংশ কম প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
×