ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্রুপও বুঝবে কম্পিউটার

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৯ আগস্ট ২০১৭

বিদ্রুপও বুঝবে কম্পিউটার

কাউকে ছোট কিংবা তুচ্ছ করতে মানুুষ একে অপরকে বিদ্রুপ করে। কখনও মানুষ কথা বলার সময় তার আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। কম্পিউটারের সাধারণ কাউকে বিদ্রুপ করার মতো বোধ জ্ঞান নেই। যন্ত্র আবেগও বোঝে না। কম্পিউটারের তো মানুষের মতো উপলব্ধি করার ক্ষমতা থাকতেও পারে না। সেই হিসেবে কম্পিউটার আবেগ ও শ্লেষ মুক্ত। কিন্তু বিজ্ঞানীরা চাচ্ছেন, কম্পিউটারেরও বিদ্রুপ ও শ্লেষ বোঝার ক্ষমতা থাকতে হবে। আর এমনি এমনিতে কম্পিউটারের সেই জ্ঞান আসবে না। তাকে শেখাতে হবে। কম্পিউটার যাতে বিদ্রুপ বুঝতে ও উপলব্ধি করতে পারে, সেজন্য বিজ্ঞানীরা ইমোজি আইকনের সহায়তা নিয়ে ডিপমোজি নামে একটি সফটওয়্যার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন। খুদে ব্লগ টুইটার থেকে বিজ্ঞানীরা এক শ’ বিশ কোটি টুইট বাছাই করেছেন। সে সব টুইটই বেছে নিয়েছেন, যেগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ৬৪ ইমোজির যে কোন একটি ব্যবহার করা হয়েছে। ডিপমোজি তৈরি করতে এসব টুইট কাজে লাগিয়েছেন তারা। কম্পিউটারকে প্রথমে শেখানো হবে কখন কোন ইমোজিটি ব্যবহার করতে হবে, সেই ইমোজি দিয়ে কী ধরনের বিদ্রুপ প্রকাশ পেয়েছে কিংবা আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এতে মানুষের চেয়েও দ্রুতগতিতে সে ঘৃণা ছড়িয়ে দেয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টগুলো শনাক্ত করতে পারবে। বিভিন্ন ব্রান্ড সম্পর্কে মানুষের অনুভূতি কী, তা নির্ধারণ করতে ডিপমোজি দ্রুত কাজ করবে। এতে চ্যাটবটসসহ বিভিন্ন কম্পিউটার প্রোগ্রামের আরও উন্নত ভার্সন তৈরি করাও সহজ হবে। কম্পিউটারের চ্যাটবটস প্রোগ্রাম দিয়ে শ্রুতি ও খুদে বার্তার আলাপ-আলোচনা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অধ্যাপক ইয়াদ রাহওয়ান বলেন, আমরা যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করি, তখন আমাদের স্বরের উত্তান-পতন ও শরীরের অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করতে পারি না। অনলাইনে ইমোজি ব্যবহার করে সেই কাজটি করি। যাতে আমরা কি বলতে চেয়েছে, সেটি মানুষ অনলাইনে সহজে বুঝে নিতে পারে। বিজ্ঞান ইয়াদ রাহওয়ান ও তার শিষ্য জার্ক ফেলবো একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন। সেখানে লোকজনকে তাদের বার্তা টিকা আকারে পোস্ট করার অনুরোধ জানিয়েছেন। তারা গাণিতিক সঙ্কেত প্রকাশেরও পরিকল্পনা করেছেন। যাতে অন্য বিজ্ঞানীরাও তা ব্যবহার করতে পারেন। হার্টফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব ও যন্ত্রের মিথস্ক্রিয়া বিষয়ক গবেষক অধ্যাপক কার্সটিন ডুটেনহান বলেন, স্নায়ুবীয় নেটওয়ার্ককে প্রশিক্ষণের জন্য ইমোজিকে মোড়ক হিসেবে ব্যবহার করার ধারণা সত্যিই অসাধারণ। এক্ষেত্রে টুইটার পোস্ট বেছে নেয়া আরও ভাল উদ্যোগ। মানুষের মুখোমুখি আলাপচারিতার চেয়ে টুইটারের মাধ্যমে যোগাযোগ খুবই দুর্বল একটি উপায়। কাজেই এক্ষেত্রে গণিতকে কাজে লাগানোর সুযোগ আরও ভাল হবে। -বিবিসি।
×