ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সহায়ক সরকারের দাবি মানতে সরকার বাধ্য নয় ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৯ আগস্ট ২০১৭

সহায়ক সরকারের দাবি মানতে সরকার বাধ্য নয় ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নতুন করে চারটি সেতু নির্মাণের চিন্তা করছে সরকার। দেশের পূর্ব ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন নদীর ওপর সেতু চারটি নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয়েছে। এ জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগে ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু কর্তৃপক্ষ এ সেতুগুলো নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীর সেতু ভবনে এ উপলক্ষে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তেঁতুলিয়া ও কালাবদর নদী, পায়রা নদী, কারখানা নদী ও মেঘনা নদীর ওপর চারটি সেতু নির্মাণ করা হবে। ‘গুণগত মান ও ব্যয়ভিত্তিক নির্বাচন’ পদ্ধতিতে ভারতের স্টোপ কনসালটেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড, জেবি উইথ ডেভলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্ট লিমিটেড, দেব কনসালটেন্ট লিমিটেড, বাংলাদেশ এবং সিএডব্লিউআই ইউকে লিমিটেডের সঙ্গে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কবির আহমেদ চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। সেতু বিভাগ জানিয়েছে, বরিশাল বিভাগের বরিশাল-ভোলা সড়কে তেঁতুলিয়া ও কালাবদর নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালী-আমতলী-বরগুনা সড়কে পায়রা নদীর ওপর একটি, বাকেরগঞ্জ-বাউফল উপজেলা সড়কে কারখানা নদীর ওপর একটি এবং আড়াইহাজার-বাঞ্ছারামপুর সড়কে মেঘনা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ২০১৮ সালের নবেম্বরের মধ্যে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করে ৩৯ কোটি ৭০ লাখ ২৪ হাজার টাকার প্রকল্প ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে; যা ব্যয় হবে সেতু কর্তৃপক্ষের নিজস্ব তহবিল থেকে। প্রস্তাবিত সেতুগুলোর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের আহ্বান করা হয়। পরে ওই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি ১৪টি প্রতিষ্ঠান আবেদন জমা দেয়। এর মধ্যে ৫টি প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্প মূল্যায়নে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়। সহায়ক সরকারের দাবি মানতে সরকার বাধ্য নয়- কাদের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি সহায়ক সরকারের যে দাবি জানিয়ে আসছে সে বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সহায়ক সরকারের দাবি মানতে সরকার বাধ্য নয়। একই সঙ্গে এ দাবি যে জনগণের সেটা কিভাবে বোঝা যাবে সে প্রশ্নও রেখেছেন তিনি। সেতু ভবনে এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিএনপি সহায়ক সরকারের দাবি মানতে আমাদের বাধ্য করতে পারেনি। এ ব্যাপারে আমাদের উপর চাপও নেই। নির্বাচন কমিশন নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সময় এখনও আসেনি। বিএনপি সংলাপে যাওয়ার আগেই এ ধরনের প্রশ্ন তোলা অযৌক্তিক। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিকে ৩০০ আসনের গ্যারান্টি দিতে পারলেই কেবল তখনই তারা নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ মনে করবে। তিনি বলেন, বিএনপি আসলে কি চায়, ওটাই আমাদেরও বোধগম্য নয়। এই নির্বাচন কমিশনে তাদেরও একজন পছন্দের মানুষ আছে, তারা একযোগেই কাজ করছেন। আওয়ামী লীগের পছন্দের একজন আছেন, তাদেরও পছন্দের একজন আছেন। সিইসি দুই দলের বাইরে অন্য একদলের পছন্দের প্রস্তাবিত নাম। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আমন্ত্রণ পেলে আমরাও যাব, বিএনপি সংলাপে অংশ নেয়ার আগেই নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। নির্বাচন কমিশন যদি সংবিধান সম্মতভাবে অগ্রসর না হয় তাহলে আমরাও প্রতিবাদ করব, কিন্তু এ মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন করার কিছু আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। সম্প্রতি স্থানীয় সরকারের কয়েকটি নির্বাচন ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কোন অভিযোগ আসেনি বলছেন কাদের। একাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী গত ৩১ জুলাই নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন তার কার্যক্রম শুরু করে। আগামী ১৬ ও ১৭ আগস্ট হবে গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ। নির্বাচনকালীন ‘সহায়ক সরকার’ নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা, গণতন্ত্রের উপর কি আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে যে তাদের সহায়ক সরকার সংবিধানের বাইরে গিয়ে মানতে হবে। যা কিছু হবে সংবিধান অনুযায়ী। কেন বাধ্য হব (বিএনপির দাবি মানতে), আমাদের উপর কী চাপ আছে, কোথায় আছে, জনগণ কি চায়? তার প্রমাণ কী।
×