ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সার্বভৌম সংসদে হাত দেয়ার ক্ষমতা জনগণ ছাড়া আর কারও নেই

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ৯ আগস্ট ২০১৭

 সার্বভৌম সংসদে হাত দেয়ার ক্ষমতা জনগণ ছাড়া আর কারও নেই

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সার্বভৌম সংসদে হাত দেয়ার ক্ষমতা জনগণ ছাড়া আর কারও নেই। সংবিধান অনুযায়ী, আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের সময় সরকারপ্রধান থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নির্বাচনে জনগণ যে রায় দেবে তা আমরা মেনে নেব। সংবিধানের বাইরে সরকার একবিন্দুও যাবে না। আর ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগের ক্ষতি করাও যাবে না। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, একাত্তরের ঘাতক, পঁচাত্তরের খুনী এবং জঙ্গীবাদী শক্তিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য কোন সুযোগ দেয়া হবে না। বিএনপি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। আওয়ামী লীগকে জনগণের রায়ের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরাতে ব্যর্থ হয়েই অতীতের মতো তারা আবারও ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। দেশী-বিদেশী সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই আওয়ামী লীগ জনগণের রায় নিয়ে আগামীতেও সরকার গঠন করবে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মোঃ আবু কাওছারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে- আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মোঃ হারুনুর রশিদ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি নির্মলরঞ্জন গুহ, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেক লীগের সভাপতি মোবাশ্বের চৌধুরী, দক্ষিণের সভাপতি দেবাশীষ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান টিটো ও উত্তরের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুর রহমান খান ইরান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বিএনপিরও রাজনীতি করার অধিকার নেই -হানিফ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য যদি জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি উঠতে পারে, তেমনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে জিয়াউর রহমানের দল বিএনপিরও এ দেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার থাকতে পারে না। বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার শিল্পকলা একাডেমিতে যুবলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে হানিফ আরও বলেন, যারা দেশকে ধ্বংস করার রাজনীতি করছে দেশকে এখনও পাকিস্তানী তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাইছেÑ তাদের এ দেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার থাকতে পারে না। যুবলীগের নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগের কাছে এ দাবি পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি ১৯৭১ সালে বিতর্কিত কর্মকা- ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। জনগণ থেকে দাবি উঠেছে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য। ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য জামায়াত যেভাবে জাতির কাছে ধিকৃত, ঠিক তেমনিভাবে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তারাও সমানভাবে ধিকৃত। হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় সরাসরি জড়িতদের বিচার হয়েছে, কিন্তু মূল চক্রান্তকারী জিয়াউর রহমানের বিচার হয়নি। তারও মরণোত্তর বিচার হওয়া উচিত। এ বিচারের মাধ্যমে জাতির কাছে তার মুখোশ উন্মোচিত হওয়া দরকার। আসলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে পুনর্বাসন করে জাতিকে বিভক্ত করেছিল। এ বিভক্তি দূর করার জন্যই জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করতে হবে। যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা রহমান, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাত, আনোয়ারুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাট প্রমুখ। বিশ^বিদ্যালয় রিপোর্টার জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মাদ নাসিম বলেছেন, আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনে হবে। শেখ হাসিনার ক্ষমতা নাই এর বাইরে গিয়ে নির্বাচন করা। জনগণের অধিকার ভোট দেয়া। তারা যদি ভোট না দেয় তাহলে আপত্তি নেই। কিন্তু সিদ্ধান্ত বাঙালীর নিতে হবে তারা কাকে ভোট দেবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না এলে গোলাম আযম, নিজামীরা কবর থেকে উঠে এসে লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে ঢাকা শহরে ঘুরবে। মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে আদালতের হাত যত লম্বাই হোক, পার্লামেন্ট ছোঁয়ার অধিকার তাদের নাই। বাংলাদেশের পার্লামেন্ট সার্বভৌম পার্লামেন্ট। পার্লামেন্ট প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, সুপ্রীমকোর্ট এবং বিচারপতি বানিয়েছে। পার্লামেন্টে হাত দেয়ার ক্ষমতা বাংলার জনগণ ছাড়া কারও নাই। তিনি আরও বলেন, সংবিধানে আছে ৩০০ আসনে একদিনে নির্বাচন হবে, নির্বাচন হয়েছে। জনগণ ভোট দিয়েছে। কি পার্সেন্টেজে ভোট দিতে হবে তা সংবিধানে লেখা নেই। একজন ভোট দিলেও নির্বাচন বৈধ। বিএনপির উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, তারা লন্ডনে বসে যত ষড়যন্ত্র করুক আর যাই করুক, ওই চক্রান্তের কাছে মাথা নত করব না। আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে একচুলও ছাড় দেয়া হবে না। ঘাতকের জন্য বাংলাদেশে ছাড় হতে পারে না। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেনÑ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাাজ্জাক, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রোকেয়া সুলতানা, স্বাচিপের সভাপতি ডাঃ এম ইকবাল আর্সলান, মহাসচিব ডাঃ এমএ আজিজ প্রমুখ।
×