ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাহরাইনী কিশোরী রিতাজের স্বপ্ন

প্রকাশিত: ০৪:৪৯, ৯ আগস্ট ২০১৭

বাহরাইনী কিশোরী রিতাজের স্বপ্ন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে সদ্য সমাপ্ত ফিনা বিশ্ব সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপসে রেকর্ড ভাঙ্গা-গড়ার ঘটনা প্রতিদিনই ঘটেছে। তারকা সেই সাঁতারুদের সমঅবস্থানে নেই রিতাজ আমিন। কিন্তু এরপরও তিনি ছিলেন আলোচনায়। কারণ মুসলিম দেশ বাহরাইন থেকে এসেছিলেন এ ১৩ বছর বয়সী কিশোরী। এবারের বিশ্ব সাঁতারে তিনিই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ প্রতিযোগী। অবশ্য ৫০ মিটার বাটারফ্লাইয়ের হিটে সেমিফাইনালেও উঠতে পারেননি। হিট থেকেই বাদ পড়েছেন। কিন্তু বয়স আর বাহরাইন থেকে আসার কারণে রিতাজ বড় বিস্ময় ছিলেন এ আসরের। কিন্তু রিতাজের স্বপ্ন ২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিকে অংশ নেয়া। সেটার জন্য এখন থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। আর সেভাবেই অনুশীলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। এই বয়সের কিশোরীরা সাধারণ যেসব কাজে বেশি আগ্রহী থাকে রিতাজও সেটার ব্যতিক্রম নয়। অবসর সময় পেলেই তিনি কানে হেডফোন লাগিয়ে জনপ্রিয় ইংলিশ মিউজিক শোনেন। রোমাঞ্চোপন্যাস পড়েন এবং হাতে-পায়ে নেলপলিশের ছোঁয়া দেন। বিশ্ব আসরে এসে মার্কিন সুপারস্টার কেটি লিডেকি, দক্ষিণ আফ্রিকার চ্যাড লি ক্লস, ব্রিটেনের এডাম পিয়েটিদের সঙ্গে নিয়মিতই সাক্ষাত হয় তার। এ বিষয়ে রিতাজ বলেন, ‘আমি লি ক্লসকে নিয়মিত দেখতাম আমার ফোনে। আর এখন তিনি আমার সামনে বাস্তবে উপস্থিত। এটা খুবই দারুণ ব্যাপার। কোনভাবেই যেন বিশ্বাস হয় না।’ বাহরাইনী ফেডারেশন এর আগেও তরুণ উদীয়মান সাঁতারু পাঠিয়ে নিজেদের ক্রীড়াজগতের উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০১৫ সালের কাজান বিশ্ব আসরে বাহরাইন থেকে এসেছিলেন আলজাইন তারেক। সে সময় মাত্র ১০ বছর বয়স ছিল তার। কিন্তু এবার ফিনা গবর্নিং বডি নিয়মে কিছু পরিবর্তন এনেছে। তাই তারেক এবার অংশ নিতে পারেনি। রিতাজ জানিয়েছেন তারেক তার খুব কাছের বন্ধু। এই মুহূর্তে বাহরাইনের দ্রুততম সাঁতারু রিতাজ। এবার বিশ্ব সাঁতারের ৫০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে ব্যক্তিগত সেরা টাইমিং গড়েছেন তিনি হিটে। যদিও সেটা দ্রুততম টাইমিং গড়া সুইডিশ তারকা সারাহ সিয়স্ট্রমের চেয়ে ১০ সেকেন্ড পিছিয়ে ছিল। আর হিট অতিক্রম করতে পারেননি তিনি। কিন্তু এসব নিয়ে মোটেও চিন্তিত হননি রিতাজ। তিনি বলেন, ‘আমি এদিন এবং আগে যা অর্জন করেছি সেটা নিয়ে অবশ্যই গর্বিত।’ মাত্র ৬ বছর বয়সে সাঁতার শুরু করেছিলেন রিতাজ। তিনি আরও বলেন, ‘এই পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় আসার জন্য ৭ বছর কোনভাবেই যথেষ্ট সময় নয়। আমি এখন ফোনে আসা মেসেজগুলো দেখি। এই মেসেজগুলো আমার কাছের বন্ধু আলজাইনসহ অন্যান্য বন্ধু, পরিবারের সবার কাছ থেকে আসে।’ বুদাপেস্টে রিতাজের সঙ্গে এসেছিন মা ও ভাই। তারা গ্যালারিতে বসেই প্রতিযোগিতা দেখেছেন রিতাজের। তবে ডাইভটা যেন ভাল হয় সেদিকেই বেশি মনোযোগ থাকে তার। এ বিষয়ে রিতাজ বলেন, ‘যখন শুরুর জন্য দাঁড়িয়ে থাকি আমার স্নায়ুচাপ বেড়ে যায় এবং আমি কাঁপতে থাকি। যদি আমি মায়ের দিকে তাকাতাম তাহলে নিশ্চিতভাবে কান্না শুরু করতাম। রাতে মাত্র ৩ ঘণ্টা ঘুমাতে পেরেছিলাম স্নায়ুচাপ ও উত্তেজনায়।’ রিতাজ তার স্কুল শেষে ২ ঘণ্টা এবং স্কুলে যাওয়ার আগে ২ ঘণ্টা করে অনুশীলন করেন। এখন তার স্বপ্ন ২০২০ সালে টোকিও অলিম্পিকে অংশ নেয়া। সেটার জন্য ভালভাবে প্রস্তুত হতে চান তিনি। গত বছর দুবাইয়ে বিশ্বকাপ ইভেন্ট দিয়ে প্রথমবার কোন মেজর টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন রিতাজ। বুদাপেস্টে তিনি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় মেজর আসরে অংশ নিলেন।
×