ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হ ধ্রুব হাসান

জাফর আবদুল করিম মানবতার প্রতিচ্ছবি

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৮ আগস্ট ২০১৭

জাফর আবদুল করিম মানবতার প্রতিচ্ছবি

তারুণ্য মানেই বাধা না মানা, শৃঙ্খল ভাঙার প্রত্যয়। তীব্র স্রোতে উজানে সাঁতরে চলাই তারুণ্যের ধর্ম। অফুরন্ত প্রাণশক্তি আর সৃষ্টির উন্মাদনাই তারুণ্যের অহঙ্কার। ঘুণে ধরা সমাজের পচে যাওয়া ব্যবস্থার উৎপাটনই তারুণ্যের মন্ত্র। বদ্ধঘরের দরজা ভেঙে জীবনের জয়গান গাওয়াই তারুণ্যের কর্ম। জীবন মানুষের সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ। এই জীবন সে পায় মাত্র একটি বার। তাই এমনভাবে বাঁচতে হবে, যাতে বছরের পর বছর লক্ষ্যহীন জীবনযাপন করার যন্ত্রণার অভিশাপে ভরা অনুশোচনায় ভুগতে না হয়, মরতে না হয়। যাতে বিগত জীবনের গ্লানি ভরা লজ্জার দহন সইতে আর না হয়। তাই এমনভাবে বাঁচতে হবে, যাতে মৃত্যুর মুহূর্তেও মানুষ বলতে পারে-আমার সমগ্র জীবন আমার সমগ্র শক্তি আমি ব্যয় করেছি এই দুনিয়ার সবচেয়ে বড় আদর্শের জন্য, মানুষের মুক্তির জন্য সংগ্রামে। তা হোক না বিশ্বের যে কোন প্রান্তে । মূল উদ্দেশ্য একটাই মানবতার জয়গান গাওয়া। জাফর আবদুল করিম তেমনি এক তরুণ। যেখানে মানবতা বিপন্ন সেখানেই ছুটে যাচ্ছেন জাফর আবদুল করিম। তার তারুণ্যের প্রবল প্রাণশক্তি যা অফুরন্ত সম্ভাবনা ও বর্ণিল স্বপ্ন দ্বারা উজ্জীবিত। যেহেতু একটি স্ফুলিঙ্গ তারুণ্যকে উদ্দীপ্ত শিখায় পরিণত করতে পারে, যা হয়ে ওঠতে পারে নক্ষত্রের মতো সমুজ্জ্বল। এ জন্য প্রয়োজন একটি স্বপ্নের- যে স্বপ্ন তরুণ সমাজকে একটি সুন্দর সফল জীবনের পথ দেখাবে। জাফর আবদুল করিমের জন্ম লাইবেরিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামে। বাবা-মার চাকরির সুবাদে বড় হন লেবাননে এবং সুইজারল্যান্ডে। সেই সময় থেকে দেখে এসেছেন মানবতা কিভাবে ভূলণ্ঠিত হচ্ছে। বাবা-মার ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে ব্যারিস্টার যেন হন। তাই পড়াশোনা করেছেন ফ্রান্স, জার্মানি ও ইংল্যান্ডে। পড়াশোনা শেষ করে যুক্ত হন সাংবাদিকতায়। লন্ডন ফিল্ম এ্যাকাডেমি থেকে তিনি পরিচালনার ওপর একটি কোর্স সম্পন্ন করেন। বার্লিনের কোয়াডরিগা ইউনিভার্সিটি থেকে ‘যোগাযোগ এবং নেতৃত্ব’ বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। এখন কাজ করছেন বার্লিনে, ডয়চে ভেলেতে। পুরস্কারজয়ী আরবি টকশো ‘শাবাবটক’-এর হোস্ট হিসেবে জাফর আরব দুনিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে রিপোর্ট করেন। তার প্রতিটি প্রতিবেদনে উঠে আসে তরুণদের জয়গানের কথা। উঠে আসে মানবতার কথা। জাফরের জন্য বিধ্বস্ত নগরীর তরুণরা আবার নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে। কারণ তাদের মতামত তুলে ধরতে পারছে বিশ্ব বিবেকের কাছে। সর্বশেষ কাজে তিনি উদ্বাস্তুদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করেছেন। সেখানে লেবাননের বার-ইলিয়াস উদ্বাস্তু শিবির, গ্রিসের লেসবোস দ্বীপের উদ্বাস্তু কেন্দ্র, জর্ডানে জাতারি উদ্বাস্তু শিবির এবং জার্মানির উদ্বাস্তু অভ্যর্থনা কেন্দ্র থেকে তিনি প্রতিবেদন করেছেন। তিনি মিডিয়া ম্যাগাজিনের জন্য জার্মানির রিপোর্টার্স অব দ্য ইয়ার-২০১৬ নির্বাচিত হয়েছেন।
×