ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার এবং আফগানিস্তানে যুদ্ধ জয় মূল ভিত্তি

ট্রাম্পের নতুন এশিয়া নীতি

প্রকাশিত: ০৩:৩৯, ৮ আগস্ট ২০১৭

ট্রাম্পের নতুন এশিয়া নীতি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এশিয়ার দিকে মনোযোগ দিতে শুরু করেছে। ম্যানিলায় আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের পার্শ্ব আয়োজনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন ভিকে সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন যখন আফগান যুদ্ধ ও এশিয়া নীতি নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা করছে তখন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে যে যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ গুরত্বপূর্ণ বিবেচনা করে সে বিষয়টি স্পষ্ট করলেন টিলারসন। টাইমস অব ইন্ডিয়া। চলতি সপ্তাহে ভারতে অনুষ্ঠেয় একটি আলোচনা সভায় অংশ নিতে যাচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্র, পেন্টাগন ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সিনিয়র কর্মকর্তারা। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও নয়াদিল্লীভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান অনন্ত সেন্টার এই সংলাপ আয়োজন করেছে। ওয়ান পয়েন্ট ফাইভ ট্র্যাক (সরকারী কর্মকর্তা ও বেসরকারী বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে আয়োজিত সংলাপ) নামে পরিচিত এই সংলাপে অংশ নেবেন দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক অস্থায়ী সহকারী মন্ত্রী এলিস ওয়েলস, এনএসসি’র সিনিয়র ডিরেক্টর লিসা কার্টিস এবং পেন্টাগনের কর্মকর্তা কারা আবেরকম্বি অংশ নেবেন। ভারতের পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল সংলাপে যোগ দেবেন। চলতি সপ্তাহে ইন্দো-ইউএস ফোরামের এক বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেন, ‘আফগানিস্তানে শান্তি, নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আমেরিকা যে ত্যাগ স্বীকার করেছে তা আমরা আন্তরিকভাবে প্রশংসা করি।’ আফগানিস্তান তালেবানকে উৎখাত করতে গিয়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর যুদ্ধ শুরুর ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও দেশটিতে এখনও স্থিতিশীলতা আসেনি। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্র সেখান থেকে পুরোপুরি হাত গুটিয়ে নেয়নি। ১৬ বছরের অর্জন যেন হারিয়ে না যায় সেদিকেই এখন ট্রাম্প প্রশাসন জোর দিতে চাইছে। ভারত ইতোমধ্যে আফগানিস্তানে আরও ১শ’ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। আফগান যুদ্ধ নীতি বদলানোর ওপর এখন ট্রাম্প প্রশাসন গুরুত্ব আরোপ করেছে। এ যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কেন এখনও জিততে পারেনি সে বিষয়ে ট্রাম্প সম্প্রতি তার জেনারেলদের নিয়ে অভিযোগ করেন। তিনি মনে করেন, এই যুদ্ধ দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কৌশল বাস্তবায়ন বিলম্বিত করতে পারে। যুদ্ধে না জেতার জন্য আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল জন নিকোলসনকে বরখাস্তের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেমস ম্যাটিস ও জয়েন্ট চীফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জোসেফ ডানফোর্ডের বিবেচনা করা উচিত বলেও ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সম্প্রতি এক বৈঠকে মন্তব্য করেন। ট্রাম্পের এমন কঠোর অভিযোগের মুখে কয়েকজন কর্মকর্তা বৈঠক ছেড়ে উঠে যান বলে জানা যায়। ট্রাম্প প্রশাসনের নয়া আফগান নীতির মধ্যে রয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীকে শক্তিশালী করা ও তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া। আইএস ও আলকায়েদার মতো জঙ্গী গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখা। শান্তি ও সমঝোতার যে নীতি সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন নিয়েছিল সেটি আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করা। স্পষ্টতই আফগান যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার ওপর গুরুত্ব দেবে না ট্রাম্প প্রশাসন। নতুন আফগান নীতি ওয়াশিংটন এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি। তবে জেমস ম্যাটিস এবং টিলারসন সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় এ বিষয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন। আফগানিস্তানে ন্যাটো কমান্ডার জেনারেল নিকোলসন কয়েক মাস আগে মন্তব্য করেছিলেন যুদ্ধ বর্তমানে ‘স্থবির’ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা কাটাতে হলে জরুরী ভিত্তিতে কয়েক হাজার সৈন্য পাঠানো প্রয়োজন। তিনি আরও বলেছিলেন যে, আক্রমণ ক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমেই কেবল স্থবিরতা কাটানো সম্ভব। তবে হোয়াইট হাউসের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, আফগান যুদ্ধের পরিসমাপ্তি কিভাবে ঘটানো হবে সে বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসন কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি।
×