ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আসিয়ানের অংশীদার হতে ভিয়েতনামের সাহায্য চায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ৭ আগস্ট ২০১৭

আসিয়ানের অংশীদার হতে ভিয়েতনামের সাহায্য চায় বাংলাদেশ

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ আসিয়ানের সংলাপ অংশীদার হওয়ার জন্য ভিয়েতনামের সমর্থন চেয়েছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে দেশটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। বিশেষ করে কৃষি ও মৎস খাতে সহযোগিতা বাড়ানো হবে। রবিবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে ভিয়েতনামের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী ডং ডিন কাইয়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এসব আলোচনা হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক (এফওসি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভিয়েতনামের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী ডং ডিন কাই। বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসিয়ানের সংলাপ অংশীদার হওয়ার জন্য ভিয়েতনামের সমর্থন প্রত্যাশা করেন। এ সময় ভিয়েতনামের উপমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রত্যাশাকে স্বাগত জানান। একই সঙ্গে এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন উপমন্ত্রী। বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক পর্যায়ে সফর বাড়ানোর বিষয়ে জোর দেন। একই সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করেন তারা। বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম যৌথভাবে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে পারে বলেও অভিমত প্রকাশ করেন শাহরিয়ার আলম। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য ভিয়েতনামের প্রতি আহ্বান জানান। এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক (এফওসি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ভিয়েতনামের ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সেদেশের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী ডং ডিন কাই। অন্যদিকে বৈঠকে ৮ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থে সব ধরনের বাণিজ্য বাধা অপসারণ করে দ্বিপক্ষীয় বার্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠান, বাজার সম্পর্কিত তথ্য এবং সংস্কৃতি বিষয়ক পর্যটন বিনিময়, আন্তঃদেশীয় অপরাধ ও অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধ এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে একসঙ্গে কাজ করতে দুই দেশের কর্মকর্তারা আলোচনা করেন। এছাড়া বাংলাদেশ আসিয়ান অর্থনৈতিক করিডরের সঙ্গে যুক্ত হতে গভীরভাবে আগ্রহী বলে ভিয়েতনামকে জানানো হয়। এ ক্ষেত্রে ভিয়েতনামের সমর্থন প্রত্যাশা করেছে বাংলাদেশ। ভিয়েতনামের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আশ্বাসও দেয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ৭০০ মিলিয়ন ডলারের কম। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫৫ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলারের পণ্য ভিয়েতনামে রফতানি করেছে। এর বিপরীতে আমদানি করেছে ৫৮২ দশমিক ২৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। এই ঘাটতি প্রতি বছরই বাড়ছে। বাণিজ্য বাড়াতে সব ধরনের শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূর করার বিষয়েও একমত পোষণ করেন দুই দেশের কর্মকর্তারা। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় মুহূর্তে আড়াই লাখ টন চাল দেয়ায় ভিয়েতনামকে বৈঠকে আনুষ্ঠানিক ধন্যবাদ জানানো হয়। এ বছর ভিয়েতনাম থেকে আরও চাল আমদানির বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। দু’দেশের মধ্যে পর্যটক বিনিময়ের বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে আলোচনায়। দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে শনিবার ঢাকায় আসেন ভিয়েতনামের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী ডং ডিন কাই। তিনি সেদিন ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
×