ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ত্রিদেশীয় গ্যাস পাইপ লাইনে বাংলাদেশ যুক্ত হতে চায়

প্রকাশিত: ০৫:১২, ৭ আগস্ট ২০১৭

ত্রিদেশীয় গ্যাস পাইপ লাইনে বাংলাদেশ যুক্ত হতে চায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ত্রিদেশীয় গ্যাস পাইপলাইন ট্যাপিতে যুক্ত হওয়ার জন্য সময়সীমা নির্দিষ্ট করতে তুর্কমেনিস্তানকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তুর্কমেনিস্তান থেকে আফগানিস্তান-পাকিস্তান-ভারত পর্যন্ত আসা পাইপ লাইনে বাংলাদেশ অনেক দিন থেকেই যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে মাঝে মধ্যে আশ্বাস মিললেও বাংলাদেশের সংযুক্ত হওয়ার বিষয়টি এখনও পরিষ্কার হয়নি। পাইপলাইনে আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তা প্রদানকারী এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি বিষয়টি নিয়ে তিন দেশের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশকে প্রস্তাব দিতে বলে। কিন্তু এই প্রক্রিয়াও পরবর্তীতে ঝুলে যায়। ভারত বলছে, পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত তারা এই পাইপলাইন সম্প্রসারণ করবে, সেখান থেকে বাংলাদেশ গ্যাস নিতে পারবে। কিন্তু বাংলাদেশ চাইছে পুরো প্রকল্পটির অংশীদার হতে। সেক্ষেত্রে মূল পাইপলাইন নির্মাণের সঙ্গে বাংলাদেশকে সংযুক্ত করার দাবি তোলা হয়। তবে সেই আলোচনা খুব একটা ফলপ্রসূ হয়নি। শুরুতে পাকিস্তান এককভাবে গ্যাস আনতে চাইলে ভারত এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়। পরবর্তীতে আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তারাও এই পাইপলাইনটি থেকে গ্যাস নেয়ার আগ্রহ দেখায়। পাইপলাইনটি আফগানিস্তানের ওপর দিয়ে পাকিস্তান হয়ে ভারত পাকিস্তানের সীমান্তে পাঞ্জাবের ফাজিলকা এলাকায় এসে শেষ হবে। এককভাবে বাংলাদেশ ফাজিলকা থেকে পাইপলাইন করে আনতে গেলে বিপুল ব্যয়ের কারণে অন্তর্ভুক্তি যুক্তিযুক্ত হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে এখন পর্যন্ত পুরো প্রকল্পের জন্য ৫৬ ইঞ্চি ব্যাসের এক হাজার ৮১৪ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে সাত দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে ফাজিলকা থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুরের দূরত্ব প্রায় এক হাজার ৯০০ কিলোমিটার। যা মূল পাইপলাইনের দূরত্বের চেয়ে বেশি। বাংলাদেশে নিযুক্ত তুর্কমেনিস্তানের নন রেসিডেন্ট রাষ্ট্রদূত পারাখাত দুর্দোয়েভ রবিবার বিদ্যুত, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে জানান, ত্রিদেশীয় পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের কাছে গ্যাস বিক্রি করতে আগ্রহী তার দেশ। রাষ্ট্রদূত, ট্যাপি প্রকল্পে অংশগ্রহণে বাংলাদেশের আগ্রহকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, পেট্রো প্রোডাক্ট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দু’দেশের আরও কাজ করার সুযোগ রয়েছে। পাইপলাইনের মাধ্যমে তুর্কমেনিস্তানের গ্যাস চীন হয়ে হংকং যাচ্ছে। সিএনজিও আফগানিস্তান, ইরান, চীনে দেয়া হচ্ছে। ট্যাপির কাজও এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ, তেল-গ্যাস অনুসন্ধান, উৎপাদন ও সঞ্চালনে তুর্কমেনিস্তানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারে। প্রতিমন্ত্রী, এ সময় বাংলাদেশের জ্বালানি ও বিদ্যুত খাতের সম্ভাবনা নিয়ে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ট্যাপি গ্যাস সঞ্চালন লাইনটি এ অঞ্চলে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে। আমরা এ লাইনটিতে অংশ গ্রহণ করতে আগ্রহী। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রচুর গ্যাস প্রয়োজন। ট্যাপির জন্য একটি সুনির্দিষ্ট টাইমলাইন পেলে গ্যাস মাস্টার প্ল্যানে এটাকে সংযুক্ত করা যেতে পারে। প্রসঙ্গত ২০১৫ সালের জুন থেকে ট্যাপি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে ২০১৯-এ এই পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস আমদানি শুরু হবে। পাইপলাইন দিয়ে বছরে অন্তত এক দশমিক ২ সিটিএফ গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
×