ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

২৪ ঘণ্টায় শাহজালালে ধরা পড়েছে ৩১ কেজি সোনার চালান

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ৭ আগস্ট ২০১৭

২৪ ঘণ্টায় শাহজালালে ধরা  পড়েছে ৩১ কেজি  সোনার চালান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কিছুদিন বিরতি দিয়ে আবার তৎপর হয়েছে সোনা পাচারকারীরা। গত ২৪ ঘণ্টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই দুজনের কাছে ধরা পড়েছে ৩১ কেজি সোনার চালান। শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত ইউএস বাংলা ও সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের দুটি ফ্লাইটে এসব সোনা পাওয়া যায়। ঢাকা কাস্টমস হাউসের সহকারী কমিশনার আহসানুল কবির জানান, রবিবার সকালে ইউএস বাংলার বিএস ৩১৪ নম্বর ফ্লাইটের টয়লেটে পরিত্যক্ত অবস্থায় এক কেজি ওজনের ছয়টি সোনার বার পাওয়া যায়। শনিবার রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বিমানবন্দরে নামা এক যাত্রীর কাছে ২৫ কেজি সোনা পাওয়া যায়। জামিল আক্তার নামে ওই যাত্রী অসুস্থ সেজে হুইল চেয়ারে চড়ে গ্রিন চ্যানেল পার হচ্ছিলেন। এ সময় তার দেহ তল্লাশি করে ১০০ গ্রাম ওজনের ২৫০টি স্বর্ণবার পাওয়া যায়। এসব সোনার আনুমানিক বাজার মূল্য সাড়ে ১৫ কোটি টাকা। জানা যায়, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে। ওই ফ্লাইটেরই যাত্রী ছিলেন তিনি। উড়োজাহাজ থেকে নেমে হুইল চেয়ারে বসে পড়েন। রীতিমতো রোগী সেজে অসুস্থতার ভান করেন। সন্দেহ হয় কাস্টমস কর্মকর্তাদের। শরীর তল্লাশির পর দেখা গেল, আসলে তিনি রোগী নন সোনা পাচারকারী। অসুস্থতার ভান করে সোনা পাচার করছিলেন। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ২৫ কেজি সোনাসহ মোঃ জামিল আক্তারকে আটক করা হয়। সহকারী কমিশনার আহসানুল কবির জানান, শনিবার রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে (এসকিউ- ৪৪৬) ঢাকায় আসেন জামিল। তিনি অসুস্থতার ভান করে হুইল চেয়ারে বসেছিলেন। সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে আটক করা হয়। পরে জামিলের শরীর তল্লাশি করা হলে ২০০ পিস সোনার বার পাওয়া যায়। ২৫ কেজি ওজনের এ সোনার আনুমানিক দাম সাড়ে ১২ কোটি টাকা। জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আগে থেকেই গ্রিন চ্যানেলে সতর্ক অবস্থান নেয়া হয় এবং গ্রিন চ্যানেল পার হওয়ার সময় হুইল চেয়ারে আগত সন্দেহভাজন যাত্রীকে চ্যালেঞ্জ করে কাস্টমস প্রিভেন্টিভ টিম। এরপর কাস্টমস হলে নিয়ে তার শরীর তল্লাশি করা হয়। শরীরের নিম্নাঙ্গে ভেস্ট পরিহিত অবস্থায় ২৫ কেজি ওজনের ২৫০টি (প্রতি পিস-১০০ গ্রাম) সোনার বার পাওয়া যায়। যাত্রী ২৫ কেজি ওজনের ভেস্ট শরীরের নিম্নাংশে পরে কাস্টমসের চোখ ফাঁকি দেয়ার জন্য হুইল চেয়ারের আশ্রয় নিয়েছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে তার কাছে সোনা থাকার কথা অস্বীকার করেন। আচরণে অসংলগ্নতা দেখে পরবর্তীতে ব্যাগেজ কাউন্টারে এনে যাত্রীকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি শরীরে সোনা থাকার কথা স্বীকার করেন। দু-পায়ের মাঝে স্কচটেপ দিয়ে পেঁচানো ২৫০টি সোনার বার একটি ভেস্টের মধ্যে লুকায়িত অবস্থায় পাওয়া যায়। তিনি বলেন, জামিল আক্তারের গ্রামের বাড়ি নীলফামারীতে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন সিঙ্গাপুরে তার চিপসের (দোকানদারি) ব্যবসা রয়েছে। তিনি একজন ফ্রিকোয়েন্ট ট্রাভেলার। গত ৬ মাসে মোট ১৩ বার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। ফৌজদারি মামলা দায়ের করে আসামিকে থানায় সোপর্দ করার কার্যক্রম চলছে।
×