ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ৭ আগস্ট ২০১৭

কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ

জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি শনিবার বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ‘আরও ব্যবস্থা নিতে হবে’। দেশটির বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর তিনি এ কথা বলেন। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য উদ্ধৃত করে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচআর ম্যাকমাস্টার বলেন, উত্তর কোরিয়ার শাসকদের বিরুদ্ধে গ্রহণ করা যায় এ রকম কোন পদক্ষেপই যুক্তরাষ্ট্র বাদ দেবে না। তিনি এ কথাও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ব্যয়বহুল যুদ্ধ এড়াতে চায়। গার্ডিয়ান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও বিবিসি। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে সর্বসম্মতভাবে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর ফলে দেশটির কয়লা ও লোহা রফতানি চাপের মুখে পড়বে। আর্থিক হিসেবে এই ক্ষতির পরিমাণ হবে বছরে শত কোটি ডলারেরও বেশি। নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবটিতে উত্তর কোরিয়ার রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং দেশটিতে বিনিয়োগের ওপর সীমা ঠিক করে দেয়া হয়েছে। কয়লা ও কাঁচামাল রফতানি উত্তর কোরিয়ার আয়ের অন্যতম উৎস। এসব পণ্য সামগ্রীর অন্যতম ক্রেতা চীন। দেশটির বার্ষিক রফতানির পরিমাণ আনুমানিক ৩শ’ কোটি ডলার। নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে এর পরিমাণ ১শ’ কোটি ডলার কমে যেতে পারে। গত মাসে উত্তর কোরিয়া দুটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায়। পিয়ংইয়ংয়ের দাবি এসব ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখ-ে আঘাত হানতে সক্ষম। এরপর ১৫ সদস্য বিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদ দেশটির বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিল। নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব পাস হওয়ার পর নিকি হ্যালি বলেন, সমস্যার সমাধান আমরা করে ফেলেছি, এটি মনে করলে চলবে না। সমাধানের কাছেও আমরা পৌঁছাতে পারিনি। উত্তর কোরিয়া কেবল আমাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে ওঠেনি বরং দেশটি দিন দিন মাত্রাছাড়া রকম বিপজ্জানক হয়ে উঠছে। তাই এর বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী। নিজেদের ও মিত্রদের রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো নিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও নেবে। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক সামরিক মহড়া অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান। উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞায় সেদেশের শ্রমিকদের নতুন নিয়োগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া অন্য কোন দেশের কোন কোম্পানি এখন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে যেতে পারবে না। নয়টি ব্যাংক কালো তালিকাভুক্ত করা ছাড়াও দুটি ব্যাংক ও দুটি কোম্পানির সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে। খসড়া নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাবটি তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি ভোটে দেয়ার আগে ওয়শিংটন উত্তর কোরিয়ার প্রধান মিত্র বেজিংয়ের সঙ্গে আলাপ করেছে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই শনিবার বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং পরমাণু ইস্যুতে ছয় জাতি আলোচনা অব্যাহত রাখা দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। ফিলিপিন্স সফররত ওয়াং ম্যানিলায় সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেছেন। চীন দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যূহ থাড না বসানোর জন্যও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া এ ধরনের যত সরঞ্জামাদি স্থাপন করা হয়েছে সব সরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে চীন। জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লিউ জিয়েই এ আহ্বান জানান। তিনি বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যূহ মোতায়েন সমস্যার সমাধান নয়। জাতিসংঘ আরোপিত নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য পিয়ংইয়ংকে ক্ষেপণাস্ত্র ও পরামাণু কর্মসূচী বাদ দিতে বাধ্য করে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনা। ওয়াং বলেন, থাড মোতায়েন সমস্যার সমাধান নয়। তিনি উত্তেজনা সৃষ্টি করে এমন কর্মকা- থেকে বিরত থাকার জন্য উত্তর কোরিয়ার প্রতিও আহ্বান জানান। এমএসএনবিসি টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ম্যাকমাস্টার বলেছেন, উত্তর কোরিয়া যেভাবে হুমকি হয়ে উঠেছে তাতে আলোচনায় বাধ্য করার জন্য বিকল্প খোলা রাখা প্রয়োজন। এর মধ্যে দেশটির নির্দিষ্ট সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানার বিষয়টিও রয়েছে। তিনি বলেন, যে কোন যুদ্ধই অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাই এটি বাদ দিয়ে উত্তর কোরিয়ার শাসকদের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য সম্ভব সব রকম উপায় আমরা অবলম্বন করব।
×