ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির আশার আলো অচিরেই নিভে যাবে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ৬ আগস্ট ২০১৭

বিএনপির আশার আলো অচিরেই নিভে যাবে ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগ প্রাণঘাতী। তুচ্ছ ঘটনায় অনেকেই ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগ করছেন। এই প্রবণতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হওয়ায় বিএনপির খুশি হয়ে লাভ নেই। কেউ কেউ সুপ্রীম কোর্টে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হওয়ায় মহাখুশি। এরা এভাবেই খুশি হয়। এ ঘটনায় দুর্ঘটনার ইস্যু খুঁজে লাভ নেই বলে উল্লেখ করেন। শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে ‘সতীর্থ-স্বজন’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন ওবায়দুল কাদের। ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হওয়ায় বিএনপির খুশির বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আনন্দের জগাই-মাধাই শুরু হয়েছে। পাশের কক্ষে কিছুক্ষণ আগে বলে গেছেন, তারা (বিএনপি) আশার আলো দেখছেন। অন্য ইস্যু মরে গেছে। এই আশার আলো অচিরেই নিভে যাবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আসুন। ঘটনা-দুর্ঘটনার ইস্যু খুঁজে লাভ নেই। দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াতে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। বিএনপিকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘ভারতে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার আগেই সকালবেলা ফলাফল ঘোষণার আগে ভারতীয় হাইকমিশনকে ফুল দিয়েছিল। আমেরিকার রেজাল্ট বের হওয়ার আগে বাংলাদেশে সকল ফুলের দোকানে ফুল বিক্রি হয়ে যায়, মিষ্টির দোকানে মিষ্টি শেষ হয়ে যায়। হিলারি ক্লিনটন আসবেন বলে, ক্ষমতায় বসবেন বলে। তারা মনে করেছিল, হিলারি ক্ষমতায় এসে তাদের ক্ষমতায় বসাবে। কিন্তু ক্ষমতার মালিক জনগণ।’ ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে ‘আপোসের’ সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনৈতিক কারণে কৌশল পরিবর্তন করলেও তার দল আদর্শ বদলায়নি। আমাদের ভুল বুঝবেন না, প্লিজ একটু ভাল করে ভেবে দেখবেন। কৌশলগত দিক আর আদর্শগত দিকের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। তিনি বলেন, একুশ বছর আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে গেছে, রাজনীতি ছিল উল্টো পথে। ওখান থেকে ফিরিয়ে আনার কৌশল লাগে। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কারও বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র না করলেও বার বার এবং এখনও নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হচ্ছে তার দলকে। দু-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ভিন্নভাবে অনেকে ব্যাখ্যা দিচ্ছে। বাংলাদেশের সুকন্যা, যিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পেরেছেন, তাকে কেন সন্দেহ করতে হবে, তাকে কেন প্রশ্নবিদ্ধ করতে হবে? যে এতগুলো কাজ করতে পেরেছে, তাকে ভুল বুঝবেন না। রাজনৈতিক বাস্তবতায় আমাদের কৌশলের পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু এটা মনে রাখবেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ শেকড়ের সঙ্গে আছে, শেকড়ের সঙ্গে থাকবে। শেকড় থেকে সরে যাওয়ার কোন সুযোগ আমাদের নেই।’ শেখ কামালের ৬৮তম জš§বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই স্মরণসভায় তার সম্পর্কে তিনি উল্লেখ করেন, দেশে একেকজন ক্ষমতায় আসেন। হয়ে যান বিকল্প পাওয়ার সেন্টার, হাওয়া ভবন তৈরি করেন। গর্ব করে বলতে পারি বঙ্গবন্ধুর পুত্র শেখ কামালের কোন হাওয়া ভবন ছিল না। শেখ কামাল নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনীতি করেননি। পরবর্তী নির্বাচনের জন্য রাজনীতি করেননি। তিনি রাজনীতি করেছিলেন পরবর্তী প্রজšে§র জন্য। সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ কামালের যে গুণাবলি ছিল, তা তার সমসাময়িক কারও মধ্যে দেখিনি। ক্ষমতার কাছে থেকেও শেখ কামালের কোন হাওয়া ভবন ছিল না।’ সাংবাদিক আবেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশীদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখেন। এদিকে শনিবার সকালে বনানী কবরস্থানে শেখ কামালের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, দেশের জনগণ বিএনপির কাছে কিছুই প্রত্যাশা করে না। আগামীতেও জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। বিএনপি নেতাদের বক্তব্য শুধু সংবাদ সম্মেলনে সীমাবদ্ধ। দলীয় কর্মসূচী নেতাকর্মীদের কোন্দলে প- হয়। নেতৃত্বের ব্যর্থতার দায়ভার মাথায় নিয়ে বিএনপি নেতাদের দল থেকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আন্দোলন সংগ্রামে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেতারা এখন আবোল তাবোল বকছেন। বিএনপি নেতাদের পদে থাকার কোন অধিকার নেই। গত সাড়ে ৮ বছরে তারা সাড়ে ৮ মিনিটও রাস্তায় থাকতে পারেননি। কর্মীদের হতাশ করেছেন বিএনপি নেতারা। এত ব্যর্থ দল তারা তাদের কর্মীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। তাই ব্যর্থতার দায় নিয়ে তাদের সবাইকে পদত্যাগ করতে হবে।
×