ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুঘল আমল থেকে শুরু হওয়া এসব স্থাপত্য নিদর্শনের মধ্যে মন্দির, মসজিদ, গির্জা, বিলাসবহুল ভবন থেকে শুরু করে পরবর্তী নানা সময়ে পার্ক, গ্রন্থাগার, কার্জন হলসহ কিছু ছাত্রাবাস এবং ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ঢাকা নগরীকে সমৃদ্ধ করেছে

ঢাকার প্রততাত্ত্বিক নিদর্শন

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ৬ আগস্ট ২০১৭

ঢাকার প্রততাত্ত্বিক নিদর্শন

প্রততাত্ত্বিক স্থাপত্যে সমৃদ্ধ ঢাকা নগরীর ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। স্থাপত্যের এই নিদর্শনগুলো তার নিজস্ব ঐতিহ্য আর বৈশিষ্ট্য হারানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা হিসেবে সুপরিচিত রাজধানীর ৯৩টি প্রাচীন প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন ও স্থান সংরক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, প্রতœতত্ত্ব অধিদফতর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং রাজউকের শীর্ষ কর্মকর্তারা এই সভায় উপস্থিত ছিলেন। যেসব স্থাপনা একেবারে বেহাল দশায় সেগুলোকে ঠিক আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রী স্থাপনাগুলোর ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় রেখে যথাযথ সংস্কারের জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দেন। জীর্ণপ্রায় স্থাপনাগুলোকে নিজস্ব আঙ্গিকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে হলে প্রয়োজনে তা বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে করতে হবে। এই ক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা জরুরী। যে সব স্থাপনা ইতিহাসের সাক্ষী তাকে গুরুত্ব দিয়ে যথাযথ সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরী। রাজউকের নিয়ন্ত্রণে থাকা এসব নিদর্শন প্রয়োজনীয় সংরক্ষণের অভাবেই আজ এমন বেহাল অবস্থায় পতিত হয়েছে। এরই মধ্যে কিছু ঐতিহ্যবাহী এবং দৃষ্টিনন্দন নিদর্শনকে ভেঙ্গে বহুতল ভবন নির্মাণেরও পাঁয়তারার কথা শোনা যায়। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার ৯৩টি স্থাপনাকে ঐতিহ্য হিসেবে চিহ্নিত করে গেজেট প্রকাশ করেছিল রাজউক। মুঘল আমলের স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন এসব প্রতœতাত্ত্বি¡ক সৌন্দর্য শুধু ঢাকার নয়, সারাদেশের ঐতিহ্য হিসেবে পরিচিত। এই নান্দনিক ঐতিহ্যকে কোনভাবেই বিনাশের পথে ঠেলে দেয়া যাবে না। নয়নাভিরাম এসব স্থাপত্য সৌধকে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। মুঘল আমল থেকে শুরু হওয়া এসব স্থাপত্য নিদর্শনের মধ্যে মন্দির, মসজিদ, গির্জা, বিলাসবহুল ভবন থেকে শুরু করে পরবর্তী নানা সময়ে পার্ক, গ্রন্থাগার, কার্জন হলসহ কিছু ছাত্রাবাস এবং ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ঢাকা নগরীকে সমৃদ্ধ করেছে। কিন্তু এসব উঁচু মানের নির্মাণ সৌধকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে যথাযথ আঙ্গিক আর বৈশিষ্ট্যে পুনরায় রূপ দেয়া এখন সময়ের দাবি। আর এই দাবিকে মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব হলো দ্রুত প্রয়োজনীয় এবং জোরালো ব্যবস্থা গ্রহণ করে নিদর্শনগুলোকে সুরক্ষা করা। দেশের মানুষও সেই প্রত্যাশাই করে।
×