ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মায়ের সঙ্গে ঈদ করা হলো না গৃহকর্মী লাইলীর

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ৬ আগস্ট ২০১৭

মায়ের সঙ্গে ঈদ করা  হলো না গৃহকর্মী লাইলীর

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ ‘শুক্রবার বেতন নিয়া বাড়ি আসতে চাইছিল। এবার বাড়ি আসি আমাদের সঙ্গে কুরবানি ঈদ করবার চাইছিল।’ মেয়ের মৃত্যুর খবরে এভাবেই বিলাপ করে কাঁদছেন শুক্রবার ঢাকার বনশ্রী জি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার হওয়া গৃহকর্মী লাইলীর (৩২) মা আলেয়া বেগম। নিহত গৃহকর্মীর লাইলীর গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল দায়ারছড়ার কালিরহাট বাজার সংলগ্ন সমন্বয় পাড়ায়। মেয়ের মৃত্যুর খবর টেলিভিশনের মাধ্যমে জানতে পারে শুক্রবার বিকেলে। এরপর ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন নিহত লাইলীর বাবা নজরুল ইসলাম (৫০)। মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ শুনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন মা আলেয়া বেগমসহ প্রতিবেশীরাও। আলেয়া বেগম জানান, ওই বাড়িওয়ালা আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। এখন তার দ্ইু অবুঝ শিশুর ভাগ্যে কি হইবে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে লাইলী তার বড় বোন লাভলী বেগমকে ফোনে বলেছে আমি (লাইলী) কয়েক মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে বা আসবো। গত কয়েক মাস থেকে বাড়িওয়ালা তাকে বেতন দিচ্ছে না। মাসিক ছয় হাজার টাকা বেতনে লাইলী বেগম ওই বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ নেয়। কাজ নেবার পর থেকে নিয়মিত লাইলীর বেতন দিতেন না বাড়িওয়ালা। এ জন্য তার নিজের বাসা ভাড়া বাকি পড়ে গেছে। অনেক কষ্টে ঢাকা শহরে ধার-দেনা করে তাকে চলতে হচ্ছিল। শুক্রবার লাইলী বকেয়া বেতন নেয়ার জন্য ওই বাড়িতে গিয়েছিল বলে তিনি জানান। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১০ বছর আগে উপজেলার কাইউনের মধ্যকাশিপুর গ্রামের দিনমজুর নজরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় লাইলীর। তাদের ঘরে মরিয়ম (৫) ও আতিকুর রহমান (৩) নামের দুটি সন্তান রয়েছে। প্রায় দেড় বছর আগে লাইলীর স্বামী নজরুল কাজের সন্ধানে ভারতে যায়। যাওয়ার পথে ভারতীয় বিএসএফের কাছে সীমান্তে ধরা পড়ে নজরুল। বর্তমানে সে ভারতের কোচবিহার জেলার কারাগারে বন্দী রয়েছে।
×