ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যাত্রী আছে টিকেট নেই

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ৬ আগস্ট ২০১৭

যাত্রী আছে টিকেট নেই

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা, ৫ আগস্ট ॥ স্টেশন আছে। আছে যাত্রীও। কিন্তু ছাপানো টিকেট নেই। এ কারণে অনেকটা বাধ্য হয়েই বিনা টিকেটে ভ্রমণ করতে হচ্ছে নেত্রকোনার বাংলা রেলস্টেশনের যাত্রীদের। আর এ অবস্থায় আবারও ‘অলাভজনক’ স্টেশনের তালিকায় নাম ওঠতে যাচ্ছে স্টেশনটির। স্থানীয়রা জানান, নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জ রেলপথের সিংহেরবাংলা এলাকায় ব্রিটিশ আমলে ‘বাংলা রেলস্টেশন’ নামে এ স্টেশনটি স্থাপিত হয়। ‘অলাভজনক’ অজুহাতে মাঝখানে প্রায় ১৯ বছর স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে গত বছরের ২১ অক্টোবর স্টেশনটি পুনরায় চালু করা হয়। স্টেশনটির জন্য বরাদ্দকৃত তিনজন কর্মচারীর পদ থাকলেও বর্তমানে মাত্র একজন পোর্টার কর্মরত আছেন। আর দুইজন পোর্টার ও বুকিং ক্লার্কের পদ শুরু থেকেই শূন্য। কর্মরত পোর্টার কোন কারণে ছুটিতে গেলে অথবা অনুপস্থিত থাকলে স্টেশনটির কার্যক্রম পরিচালনার মতো কেউ থাকে না। এদিকে স্টেশনটি চালু হওয়ার পর প্রায় এক বছর পার হতে চললেও রেল বিভাগ ওই স্টেশনের যাত্রীদের জন্য কোন টিকেটই ছাপায়নি। পোর্টার রোস্তম আলী জানান, ‘ছাপানো টিকেট না থাকায় আমরা যাত্রীদের কাছে বিপিটি টিকেট বিক্রি করছি। বিপিটি টিকিট রসিদ বইয়ের মতো হাতে লিখতে হয়। কিন্তু অসুবিধা হচ্ছেÑ এ স্টেশনে ট্রেন মাত্র দু’মিনিটের জন্য থামে। এই অল্প সময়ে সর্বোচ্চ চার-পাঁচটি টিকেট লেখা যায়। অনেক সময় টিকেট লিখতে লিখতেই ট্রেন ছেড়ে চলে যায়। এ কারণে যাত্রীরা বিপিটি টিকেট কিনতে চায় না।’ পোর্টার আরও জানান, কিছুদিন নেত্রকোনা কোর্ট স্টেশন থেকে ছাপানো টিকেট এনে বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু বিক্রির টাকা বাংলা স্টেশনের পরিবর্তনে কোর্ট স্টেশনের আয় হিসেবে গণ্য হওয়ায় এলাকাবাসী এতে বাঁধ সাধেন। রেলবিভাগের নির্দেশে বাংলা স্টেশনটির সার্বিক কার্যক্রম তদারকি করেন নেত্রকোনা কোর্ট স্টেশনের ইনচাজ সৈয়দ রাকিবুজ্জামান। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, টিকেট না থাকার বিষয়টি রেলের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই টিকেট ছাপানো হবে বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানান, মোহনগঞ্জ-নেত্রকোনা রেলপথে আসা-যাওয়ার প্রতিদিন দুটি লোকাল ট্রেন বাংলা স্টেশনে মোট চারবার থামে। চারবারই এ স্টেশনে বিপুল সংখ্যক যাত্রী ওঠানামা করেন। বিশেষ করে এলাকার অনেক ছাত্র-ছাত্রী, চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ী এ রেলপথে নেত্রকোনা সদরে আসা-যাওয়া করেন। কিন্তু টিকেট না থাকায় অনেকটা বাধ্য হয়েই বিনা টিকিটে ভ্রমণ করতে হয় তাদের।
×