ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সোনারগাঁওয়ে আগুনে পুড়িয়ে ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে হত্যা করেছে বাবা!

প্রকাশিত: ০৭:৩৬, ৫ আগস্ট ২০১৭

সোনারগাঁওয়ে আগুনে পুড়িয়ে ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে হত্যা করেছে বাবা!

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আগুনে পুড়িয়ে জান্নাতুল নামের ৯ মাসের শিশুকন্যা সন্তানকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার বাবার বিরুদ্ধে। রবিবার উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের পাকুন্দা এলাকায় এই ঘটনা ঘটলে ৫ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিশুটির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে নিহত জান্নাতুলের নানি সাজিয়া বেগম বাদী হয়ে তিন জনকে আসামি করে সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। ঘটনার পর থেকে বাবা জহিরুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল-খ) সাজিদুর রহমান ঘটনাটি স্বীকার করে জানান, ঘটনাটি প্রথমে কেউ জানতে পারেনি। শিশুটি মারা যাওয়ার পর ঘটনাটি জানাজানি হয়। পারিবারিক কলহের জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের পাকু-া গ্রামের সিকম আলীর ছেলে ইলিকট্রিক মিস্ত্রি জহিরুল ইসলামের সঙ্গে কুমিল্লা চান্দিনা উপজেলার কেশেরা গ্রামের আব্দুল মালেকের কন্যা কুলসুমের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। স্ত্রী কুলসুমকে স্বামী জানিয়ে দেয়, তার কন্যা সন্তান পছন্দ নয়। তাকে যেন তার বাবার বাড়ি রেখে আসে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। গত রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার স্বামী জহিরুল ইসলাম ঘরে এসে পরিকল্পিতভাবে ৯ মাসের কন্যা সন্তান ঘুমের মধ্যে জান্নাতুলের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় মা কুলসুম আগুন থেকে তার সন্তানকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে আহত হন। শিশু জান্নাতকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাস্তা থেকে ফিরিয়ে এনে বাড়িতেই কবিরাজি চিকিৎসা করায় তার পরিবার। পরে বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে জান্নাতুলের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শেখ মফিজুল ইসলাম শুক্রবার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত জান্নাতুলের মা কুলসুম অভিযোগ করেন, পোট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পর ঘরের ফ্যান চালু করে দেয় পাষ- জহিরুল। তার মেয়েকে আগুন থেকে উদ্ধার করার সময় তাকে ঝাঁপটে ধরে আটক করে রাখে। বিভিন্ন সময়ে সে মাদকাসক্ত হয়ে ঘরে ফিরে তাকে মারধর করত। সে তার মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে।
×