ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্যালয়টি চালু হবে কবে?

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৫ আগস্ট ২০১৭

বিদ্যালয়টি চালু হবে কবে?

আত্রাইয়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এখন ঘুটে শুকানো ও গোয়ালঘরে পরিণত হয়েছে। সরকারের অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে সেখানে একটি ভবন তৈরি করা হলেও ভবনটি এখন পাঠশালার পরিবর্তে স্থানীয়দের ঘুটে শুকানো, খড়িঘর ও গরু-ছাগল রাখার গোয়ালঘরে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ এখানে কোন শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা এ বিদ্যালয়ে যায় না। ফলে অঘোষিতভাবে দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে এ বিদ্যালয় ভবনটি। জানা গেছে, উপজেলার বিশা ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন একটি গ্রামের নাম তেজনন্দী। প্রায় সাড়ে চার হাজার লোকের বাস ওই গ্রামে। সেখানে নেই কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়, নেই কোন হাইস্কুল, নেই কোন মাদ্রাসা। ওই গ্রামের দুই শতাধিক শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড়ি দিয়ে তাদের যেতে হয় বৈঠাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অথবা ২ কিমি মেঠোপথ অতিক্রম করে যেতে হয় সমাসপাড়া, না হয় যেতে হয় শ্রীধর গুড়নই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। গ্রামের শিশুদের এ দুর্দশা লাঘবে ১৯৯০ সালের দিকে ওই গ্রামের মোশারফ হোসেন, ফয়েজ উদ্দিন, রণজিত কুমার সরকার ও নাজমা বেগম একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য নিজস্ব অর্থায়নে বিদ্যালয়ের নামে ৩৩ শতক জায়গা-জমি কিনে চাটাইয়ের বেড়া ও টিনের ছাউনি দিয়ে ঘর নির্মাণ করে পাঠদান শুরু করেন। তারা ১৯৯০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিনা বেতনে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে আসেন। এরই এক পর্যায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘরটি বিধ্বস্ত হলে অর্থাভাবে এটি আর সংস্কার করতে না পারায় সেখানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে যায়। এদিকে বর্তমান সরকার ২০১২ সালে বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় দেড় হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের একটি প্রকল্প গ্রহণ করেন। সে প্রকল্পের আওতায় ২০১৩ সালে স্থানীয় এমপি ইসরাফিল আলমের প্রচেষ্টায় প্রায় ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ে তেজনন্দী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবন নির্মাণ করা হলেও সেখানে কোন শিক্ষক নিয়োগ না দেয়ায় বর্তমানে সেটি গোয়ালঘরে পরিণত হয়েছে। এ ব্যাপারে ওই গ্রামের মোঃ বাবু বলেন, এত সুন্দর ভবন থাকলেও শিক্ষক না থাকায় আমাদের শিশুদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড় হয়ে বৈঠাখালী স্কুলে যেতে হয়। প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক রণজিত কুমার সরকার বলেন, আমরা চেষ্টা করেছিলাম বিদ্যালয়টি চালু রাখতে। কিন্তু ভবন হওয়ার পর আমাদের শিক্ষকতার আর সুযোগ দেয়া হয়নি। বিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ থেকে
×