ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিএনএন টেক

হ্যাকিংয়ের অভিনব কৌশল

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৫ আগস্ট ২০১৭

হ্যাকিংয়ের অভিনব কৌশল

উত্তর আমেরিকায় ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত একটি মাছের ট্যাঙ্কের মাধ্যমে একটি ক্যাসিনো থেকে তথ্য চুরির চেষ্টা করেছে হ্যাকাররা। ট্যাঙ্কে বাড়তি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও হ্যাকাররা ট্যাঙ্ক অবধি পৌঁছে সেখান থেকে ফিনল্যান্ডের একটি ডিভাইসে ড্যাটা পাঠানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সে চেষ্টা ধরা পড়ে এবং ব্যর্থ করে দেয়া হয়। ডার্ক ট্রেস নামে একটি সিকিউরিটি ফার্মের সাইবার গোয়েন্দা ও বিশ্লেষণ কেন্দ্রের পরিচালক জাস্টিন ফাইয়ার এই ঘটনাটি প্রকাশ করে জানান যে, কেউ একজন ফিশ ট্যাঙ্ককে কাজে লাগিয়ে নেটওয়ার্কে ঢোকার চেষ্টা করে। ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত গ্যাজেট ও সরঞ্জামগুলো অধিক থেকে অধিকতর হারে প্রচলিত হয়ে ওঠায় হ্যাকারদের পক্ষে নেটওয়ার্কে ঢুকে পড়ার এবং অনিরাপদ ডিভাইসগুলোকে কাজে লাগানোর আরও উপায় বা পথ খুলে গেছে। দৃষ্টান্ত দিয়ে বলা যায় যে মাছগুলোকে আপনা আপনি খাওয়ানো এবং সেগুলোর পরিবেশকে স্বাচ্ছন্দ্যকর রাখার জন্য মাছের ট্যাঙ্কটিকে ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সেই ট্যাঙ্কটাই ক্যাসিনোর নিরাপত্তার একটা দুর্বল দিক হয়ে ওঠে। ডার্ক ট্রেস কর্পোরেট নেটওয়ার্কগুলোর ক্ষেত্রে এ পর্যন্ত ব্যতিক্রমধর্মী বা অস্বাভাবিক ৯টি হুমকি চিহ্নিত করতে পেরেছে। ক্যাসিনোর ফিশ ট্যাঙ্কের ঘটনাটি ছিল তারই একটি। প্রতিষ্ঠানটির এক রিপোর্টে এই তথ্য পরিবেশন করা হয়। রিপোর্টে আরও অনেক দৃষ্টান্তের উল্লেখ করা হয় সেগুলো ডার্ক ট্রেসের হুমকি নির্ণয় প্রযুক্তি থেকে সঙ্কলিত করা হয়েছে। ডার্ক ট্রেসের সিকিউরিটি ডিভাইসটি কোম্পানির নেটওয়ার্কের ওপর বসানো থাকে এবং এর সাহায্যে নেটওয়ার্কে চলমান সব ক্রিয়াকলাপের ওপর নজর রাখা হয়। সেটা হতে পারে কম্পিউটারগুলোর মধ্যে স্থানান্তরিত যে কোন ড্যাটা কিংবা সংযুক্ত কফি মেকারের যে কোন ক্রিয়াকলাপ। ডিভাইস বা প্রযুক্তিটি কোন অসঙ্গতি দেখতে পেলেই কোম্পানির সিকিউরিটি টিমকে এ্যালার্ট করে দেয়। ব্যতিক্রমী ধরনের আরেক হামলার দৃষ্টান্ত হলো, অনিরাপদ ওয়াইফাইয়ের সঙ্গে যুক্ত স্মার্ট ড্রয়িং প্যান্ডগুলোকে সারা বিশ্বের ওয়েবসাইটগুলোতে ড্যাটা পাঠানোর কাজে ব্যবহার করা। একে বলা হয় ‘ভিনায়াল অব সার্ভিস’ হামলা। একজন হ্যাকার ইন্টারনেট আঁতিপাতি করে চষে তারপর সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে বিপুল পরিমাণ ট্রাফিক দিয়ে অন্যান্য ওয়েবসাইটকে সয়লাব করে দেয়। সাইবার অপরাধীরা সংযুক্ত ডিভাইসগুলোকে যে ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যবহার করে থাকে তেমন ঘটনা আগেও দেখা গেছে। গত বছর সিরাই বটনেট সারা বিশ্বে নিরাপত্তা ক্যামেরাগুলোর মতো স্মার্ট হোম ডিভাইসগুলোর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছিল এবং সেগুলোকে জোম্বি মেশিনে কার্যকরভাবে রূপান্তরিত করে ওয়েব ট্রাফিককে নেট ফ্লিক্স ও টুইটারের মতো জনপ্রিয় ওয়েবসাইটগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়ার কাজে ব্যবহার করেছিল। সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কন্ট্রাক্টর ফাইয়ার বলেছেন যে আরও অপ্রত্যাশিত জায়গাগুলো থেকে সাইবার হামলার হুমকি আসবে বলে তিনি ধারণা করেন। ই-মেইল গোপনে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে একটা কৌশল, যা কাজে লাগিয়ে হ্যাকাররা সিস্টেমের মধ্যে ঢুকে পড়তে পারে। তবে ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত অনিরাপদ ফিশ ট্যাঙ্ককে কাজে লাগানো হচ্ছে আরেকটি অভিনব কৌশল। ফাইয়ার বলেন, বর্তমান সাইবার পরিবেশে রাষ্ট্র হোক কিংবা অপরাধী হোক এদের তরফ থেকে আরও অভিনব পন্থায় হামলার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
×