ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চীন হবে কৃত্রিম বুদ্ধির বৈশ্বিক কেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৫ আগস্ট ২০১৭

চীন হবে কৃত্রিম বুদ্ধির বৈশ্বিক কেন্দ্র

কৃত্রিম বুদ্ধি প্রযুক্তিতে চীন বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে চায় এবং তার জন্য দেশটি যাবতীয় পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিচ্ছে। ২০২০ সাল নাগাদ কৃত্রিম বুদ্ধির ক্ষেত্রে চীনের প্রযুক্তিগত ও গবেষণা সুবিধাদি অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় দেশের সমকক্ষতা অর্জন করবে। এর পাঁচ বছর পর এক বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জিত হবে এবং তারপর ২০৩০ সাল নাগাদ চীন শেষ পর্যন্ত কৃত্রিম বুদ্ধির বিশ্ব উদ্ভাবনী কেন্দ্রে পরিণত হবে। চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপমন্ত্রী লি মেং সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ক’দিন আগে চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদ ঘোষিত এক নীতিনির্ধারণী বিবৃতির পর দেশটির কোন মন্ত্রী এমন মন্তব্য করলেন। রাষ্ট্রীয় পরিষদের সেই নীতিনির্ধারণী বিবৃতিতে আগামী কয়েক বছরে চীনে ১৫ হাজার কোটি ডলারের কৃত্রিম বুদ্ধি শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। দ্রুত বিকাশমান এই শিল্পক্ষেত্রে চীন যে নেতৃত্বের ভূমিকায় আবির্ভূত হতে চায় পরিকল্পনার মধ্যে সেই ইঙ্গিতটুকুই রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধির বদৌলতে ইতোমধ্যে পণ্যাগারগুলোতে শ্রমিকের স্থান রোবোট দখল করে নিয়েছে, চালকহীন গাড়ি চলছে এবং ভবিষ্যতে ডাক্তারদের স্থান দখল করে নিতে পারে কম্পিউটার। বিশ্বের অনেক টেক প্রতিষ্ঠানের কাছে কৃত্রিম বুদ্ধি এক নতুন দিগন্ত। গুগলের অভিভাবক কোম্পানি এলফারেট (জিওওজি) থেকে শুরু করে টেসলা (টিএসএলএ) পর্যন্ত সবাই এই দ্রুত বর্ধিষ্ণু খাতে অর্থ বিনিয়োগ করছে। চীনের টেক মহারথী বাইদু (বিআইডিইউ টেক ৩০) ও টেনসেন্ট (টিইসিএইচওয়াই) যুক্তরাষ্ট্রে কৃত্রিম বুদ্ধি গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে। বিশেষ করে বাইদু এক্ষেত্রে অত্যন্ত জোরেশোরে এগোচ্ছে। এক পর্যায়ে বাইদু কৃত্রিম বুদ্ধির শীর্ষ বিশেষজ্ঞ এন্ড্রু এনজিকে তার প্রধান বিজ্ঞাপনী হিসেবে নিয়োগ করেছিল। এন্ড্রু এ বছরের গোড়ার দিকে বাইদু ছেড়ে দিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধি সম্পর্কিত তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এন্ড্রু বেজিংয়ের নতুন স্ট্র্যাটেজির প্রশংসা করে বলেছেন এই কৌশল চীনের তথা আন্তর্জাতিক পরিসরে কত্রিম বুদ্ধির বিকাশে সহায়ক হবে। আলীবাবার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে চীনের সবচেয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তি জ্যাক মা মনে করেন যে কৃত্রিম বুদ্ধি চীনা সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে। অনেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং সেই সঙ্গে মাঝারি পর্যায়ের শ্রমিকদের জায়গা দখল করে নেবে রোবোট। চীন সরকার কৃত্রিম বুদ্ধির ওপর এত বেশি জোর দিচ্ছে এমন এক সময় যখন দেশটির সুবিস্তৃত অনলাইন সেন্সরশিপ ব্যবস্থা আরও প্রসারিত হয়েছে এবং ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কগুলোর ওপর ব্যাপক দমন অভিযান নেমে এসেছে। এমনকি ম্যাসেজিং প্লাটফর্ম হোয়াটস এ্যাপ ও আংশিকভাবে ব্লক করা হচ্ছে। এমনকি এ বছরের প্রথম দিকে স্থানীয় সরকারী প্রশাসন আয়োজিত কৃত্রিম বুদ্ধির এক বহুল প্রচারিত অনুষ্ঠানও গ্রেট ফায়ারওয়াল নামক বিধিনিষেধের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে পারেনি। গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধির ইউনিট ডিপমাইন্ড বিশ্ব গো চ্যাম্পিয়ন চীনের কে জাইয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে একটি খেলায় তাকে হারিয়ে দিয়েছিল। সেই খেলার সরাসরি অনুষ্ঠান প্রচার চীনে আটকে দেয়া হয়। অনুবাদ ॥ এনামুল হক
×