ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শোকের মাস

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ৫ আগস্ট ২০১৭

শোকের মাস

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগস্ট মাস। বাঙালীর ইতিহসে একটি বেদনাবিধুর মাস। এ মাসেই সৃষ্টি করা হয়েছিল বাঙালীর জাতির ইসিহাসের একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। যে নেতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালী ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে আসার লড়াইয়ে। যার আহ্বানে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে বাঙালী ছিনিয়ে এনেছিল তার স্বাধীনতা। যার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালী জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল তাকেই কিনা জীবন দিতে হলো স্বাধীনতাবিরোধী কিছু দুষ্কৃতদের হাতে। ১৫ আগস্টকে দেশের ইতিহাসে পরিণত করা হলোÑ একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকা-ের মধ্য দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে তাকে পৃথিবী থেকে বিদায় করে দেয়া হলেও খুনিরা তার আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। তাই বছর ঘুরে আগস্ট এলেই বাঙালীর মানসপটে ভেসে ওঠে একটিই স্মৃতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একটি নাম, একটি ইতিহাস। যতদিন বাংলা বাঙালী থাকবে ততদিন এ দেশ থেকে বঙ্গবন্ধু নাম কেউ কখনও মুছে দিতে পারবে না। তিনি সশরীরে আমাদের মাঝে না থাকলে রয়েছেন প্রতিটির বাঙালীর অন্তরের গহীনে। তাই আগস্ট এলে কেদে ওঠে পুরো জাতি। ১৫ আগস্ট যতই ঘনিয়ে আসে বাঙালীর বেদনা আরও ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। আজ শনিবার ৫ আগস্ট। শোকাবহ ১৫ আগস্ট আসতে এখানও বাকি ১০ দিন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শোক দিবসে নানা অনুষ্ঠান পালনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ১৫ আগস্টের শোক দিবসকে স্মরণ করে টানানো হয়েছে পোস্টার ব্যানার। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও শোক দিবসকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে শোক প্রকাশ। প্রতি বছর ১৫ আগস্ট যতই ঘনিয়ে আসে বাঙালী বুকে রক্ত ক্ষরণ ততই বাড়তে থাকে। ৪২ বছর আগে ১৫ আগস্টেই ঘাতকচক্র সপরিবারের হত্যা করে বাংলা এবং বাঙালীর স্থপতিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। হত্যা করে তারা ক্ষ্যন্ত হয়নি। তার আদর্শকে মুছে দিতে তারা সব রকম চেষ্টা চালিয়েছে। স্বাধীন জাতিকে আবার পাকিস্তানী পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ বরার চেষ্টা করা হয়েছিল। সব জায়গা থেকে মুছে দেয়ার চেষ্টা করা হয় বঙ্গবন্ধু নাম। কিন্তু জাতির মানসপটে যার নাম আঁকা রয়েছে যার নাম তাকে কি বাঙালীর হৃদয় থেকে কখনও মুছে দেয়া সম্ভব? হাজার চেষ্টা সত্ত্বে খুনিদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। খুনি চক্র এ দেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে দিতে পারেনি। ১৫ আগস্ট যতবারই ঘনিয়ে আসে ‘বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ’ এ বাঁধন জাতির কাছে আরও শক্ত হয়ে উঠে। শোকাবহ আগস্ট এলেই তাই ডুকরে কেঁদে ওঠে বাঙালী। বুকের ভেতর বয়ে যায় বেদনার স্রোত। আগস্ট এলেই শ্রদ্ধায়নত হয়ে আসে বাঙালীর মাথা। চারদিকে কেবলই স্রোত নামে শোকস্তবদ্ধ মানুষের। মানুষ কাঁদে। বেদনায় গান গায়। নামে শোকের মিছিল। কালোয় কালোয়, শোকে শোকে বেদনাবিধুর হয়ে ওঠে গোটা দেশ, দেশের মানুষ। বাঙালী জাতির বেদনাবিধুর শোকের মাস আগস্টের আজ পঞ্চমদিন। ‘মুজিবের বাংলায়, খুনিদের ঠাঁই নাই’- এখন মুখরিত গোটা দেশ। রক্তাক্ত, কলঙ্কিত ১৫ আগস্ট যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই অসংখ্য কর্মসূচীর মাধ্যমে শোকাহত কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতি পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে এনে মৃত্যুদন্ড কার্যকর দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠছে। এর পাশাপাশি জনগণের মধ্য থেকে নতুন দাবিও উঠেছে- বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের পথ যারা রুদ্ধ করেছিল, তাদেরও বিচার করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দোসর ও মদদদাতাদেরও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি উঠছে বিভিন্ন শোকের অনুষ্ঠানে।
×