ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লন্ডনে বিশ্ব এ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ৪ আগস্ট ২০১৭

লন্ডনে বিশ্ব এ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দীর্ঘ দুই বছরের অপেক্ষার পালা শেষ। আজ থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ব এ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ। ১৯৮৩ সালে যাত্রা শুরু করা এই আসর প্রথম দিকে প্রতি চার বছর পর পর অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু ১৯৯১ সাল থেকেই পরিবর্তন। তখন থেকেই প্রতি দুই বছর অন্তর অন্তর বসে ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডের এই জনপ্রিয় আসর। এবারের আসরের স্বাগতিক ইংল্যান্ড। ব্রিটিশদের গর্বের নগরী লন্ডনের এই টুর্নামেন্টে নিজের ১০০ মিটার শিরোপা ধরে রাখার প্রত্যয় নিয়েই লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছেন গতি মানব উসাইন বোল্ট। জ্যামাইকান স্প্রিন্টার ছাড়াও এই আসরে যাদের ওপর আলাদা করে নজর রাখবেন ভক্ত-অনুরাগীরা তাদের মধ্যে জাস্টিন গ্যাটলিন, মো ফারাহ এবং শেলি পিয়ারসন অন্যতম। গত চারটি বিশ্ব আসরে আটটি ব্যক্তিগত ফাইনালে বোল্ট শুধুমাত্র একবার নিজেকে ব্যর্থ প্রমাণ করেছিলেন। ২০১১ সালে দায়েগু বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ১০০ মিটারের ফাইনালে ফলস স্টার্টের ঘটনা এখনও তার মনে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েই বেঁচে আছে। সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১১টি শিরোপার পাশাপাশি আটটি অলিম্পিক স্বর্ণ জয়ের রেকর্ড তার। একজন এ্যাথলেটের ক্যারিয়ার সমৃদ্ধ করতে এর চেয়ে নিঃসন্দেহেই বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই! কিন্তু বোল্ট বলে কথা। বিশ্ব আসরের আগে এবারও বোল্ট খুব আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেন, ‘চ্যাম্পিয়নশিপে একবার খেলতে নামলে আমি পুরোপুরি আত্মবিশ্বাস নিয়েই নামব। আমার কোচ গ্লেন মিলসও আত্মবিশ্বাসী, লড়াইয়ের জন্য আমি শতভাগ প্রস্তুত।’ লন্ডনে খেলতে আসার আগে বোল্টের সমালোচকরা কেউ কেউ কিছু কারণে তাকে আন্ডারডগ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল। কিন্তু সম্ভাব্য সেসব প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রতি অনেকটা হুঙ্কার দিয়েই বোল্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ক্যারিয়ারের শেষটাও অপরাজিত থাকতে চান তিনি। বোল্টের একমাত্র সত্যিকারের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মানা হয় যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিন গ্যাটলিনকে। ২০১৩ সালে রোম ডায়মন্ড লীগ মিটে সেকেন্ডেরও কম সময়ের ব্যবধানে বোল্টকে ১০০ মিটারে পরাজিত করেছিলেন দুইবারের ডোপ টেস্টে ধরা পড়া গ্যাটলিন। এই একবারই বোল্টকে হারানোর সৌভাগ্য হয়েছিল ৩৫ বছর বয়সী গ্যাটলিনের। লন্ডনেও এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে দেখা হচ্ছে। ২০০৪ অলিম্পিকে ১০০ মিটারে স্বর্ণপদক ও ২০০৫ বিশ্ব আসরে চ্যাম্পিয়ন গ্যাটলিন ২০০৬-১০ পর্যন্ত ডোপ টেস্ট ধরা পড়ে আন্তর্জাতিক মিট থেকে নিষিদ্ধ ছিলেন। ২০১৫ সালে বেজিংয়ে ও মস্কোতে বোল্টের পিছনে রৌপ্য নিয়েই সন্তুষ্ট ছিলেন তিনি। গত বছর রিওতে সবচেয়ে বেশি বয়সী এ্যাথলেট হিসেবে ১০০ মিটারে রৌপ্য পদক জয় করেন গ্যাটলিন। ঐ আসরেও সেরার আসন দখল করেছিলেন জ্যামাইকান তারকা বোল্ট। বোল্ট ও গ্যাটলিন ছাড়াও এবারের লন্ডন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে আরেক জ্যামাইকান ইয়োহান ব্লেক ও গ্যাটলিনের সতীর্থ ক্রিস্টিয়ান কোলম্যানের ওপরও দৃষ্টি থাকবে। তবে কানাডিয়ান স্প্রিন্টার আন্দ্রে ডি গ্রাস অনুশীলনে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে নাম প্রত্যাহার করে নেয়ায় বোল্টের শিরোপা জয়ের পথ কিছুটা মসৃণ হয়েছে। ১০০ ও ২০০ মিটারে ডি গ্রাসেকে পদক জয়ের অন্যতম দাবিদার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। ১০০ মিটারে বোল্টের সর্বশেষ টাইমিং ছিল ৯.৯৫ সেকেন্ড। আর সে কারণেই নিজেকে শিরোপার পথে অনেকটাই এগিয়ে রাখার আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছেন বোল্ট। এই ধরনের প্রতিযোগিতায় নিজের ¯œায়ুচাপ নিয়ন্ত্রণ করাটাও অনেক বড় ব্যাপার। লন্ডনে এর আগেও এসেছেন বোল্ট। তাই ঐদিক থেকেও কোন ধরনের চাপ নেই বলেই স্বীকার করেছেন এই গতিমানব। এখন শুধু বিশ্বের সামনে শেষবারের মতো নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণের অপেক্ষায় মুখিয়ে আছেন বোল্ট। এদিকে দূরপাল্লার দৌড়বিদ মো ফারাহও প্রস্তুত। নিজেদের সমর্থকদের সামনে নিজের সেরাটাই ঢেলে দিতে চান সোমালিয়ান বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ এ্যাথলেট। গত কয়েক বছর ধরে ৫,০০০ এবং ১০,০০০ মিটারে এককভাবে রাজত্ব করছেন ফারাহ। এবারও তার ব্যতিক্রম ভাবছেন না তিনি। ২০১৫ সালে রোমে ভয়ঙ্কর ইনজুরিতে পড়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার শেলি পিয়ারসন। এর পরের দুটি বছর খুব দুঃসহ যন্ত্রণার মধ্য দিয়েই পার করেছেন এই অস্ট্রেলিয়ান এ্যাথলেট। তবে লন্ডনে বিশ্ব এ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে বেশ আশা নিয়েই ফিরেছেন তিনি। যেখানে ২০১২ অলিম্পিকে ১০০ মিটার হার্ডলসে স্বর্ণপদক জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন পিয়ারসন।
×