ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শোকের মাস

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৪ আগস্ট ২০১৭

শোকের মাস

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা। একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ, স্বাধীন পতাকা। পলাশীর আম্রকাননে স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার দীর্ঘ ২১৪ বছর পর ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলার স্বাধীনতার নতুন সূর্য উদিত হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ও নির্দেশে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় হত্যা করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ঘাতকরা চেয়েছিল ইতিহাসের চাকাকে পেছনে ঘুরাতে। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বর্বরোচিত হত্যাকা-ের বিচার ঠেকাতে কুখ্যাত ইনডেমনিটি বিল পাস করা হয়। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা ইতিহাসের পাতা থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে পারেনি। বরং তারাই নিক্ষিপ্ত হয়েছে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনীরা আস্ফালন করে বলেছিল, পৃথিবীতে তাদের বিচার করার কারো সাধ্য নেই। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের ঘাতকদের বাংলার মাটিতে বিচারে ফাঁসি হয়েছে। বছর ঘুরে বাঙালীর সামনে আবার এসেছে শোকাবহ আগস্ট। শোকের নানা অনুষ্ঠানে কৃতজ্ঞ জাতি শ্রদ্ধাবনতচিত্তে স্মরণ করছেন সেই বাংলাদেশ নামক দেশের স্বাপ্নিক স্থপতি হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। পুরো শোকের মাস বুকে কালোব্যাজ ধারণ করে, কালো পতাকা উত্তোলন এবং নানা অনুষ্ঠানে তীব্র ঘৃণা ও ধিক্কার জানাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর খুনী নরপিশাচ একাত্তরের পরাজিত শত্রুদের। দিন যতই এগুচ্ছে বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকর এবং যুদ্ধাপরাধীসহ বঙ্গবন্ধুর খুনীদের মদদদাতাদেরও বিচারের দাবি ততই তীব্র হচ্ছে। ঢাকাসহ সারাদেশে সাঁটানো পোস্টার, প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুনেও শোভা পাচ্ছে এই একই দাবি। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে শহর-নগর-বন্দরে কালো ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে, নানা অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে জাতির জনককে। শোকাবহ আগস্টের আজ চতুর্থ দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনীদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন করেছে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ। জাতীয় শোক দিবসের চলমান কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার গুলশান-২-এ বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মোঃ আবু কাওছারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ এমপি, সহসভাপতি মতিউর রহমান মতি ও নির্মল রঞ্জন গুহ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম লিটন, মহানগর উত্তরের সভাপতি মোবাশ্বের চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ফরিদুর রহমান খান ইরান উপস্থিত ছিলেন। কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃবৃন্দরা বলেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীন জাতি বাঙালীকে পিতৃহীন করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর স্বঘোষিত খুনীদের জিয়াউর রহমান পুনর্বাসন করেছিলেন। একই সঙ্গে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার করা যাবে না বলে আইনও পাস করেছিলেন তিনি। বিদেশে বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীদের ফেরত দিতে রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহবান জানিয়ে তারা আরও বলেন, একজন খুনীকে আপনাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া কখনও সমীচীন হবে না। এতে বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের ওপর থেকে বিশ্বাস হারাবে। তাই অবিলম্বে খুনীদের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার করে নিন। তাদের ফিরিয়ে দিয়ে আপনাদের উদারতার পরিচয় দিন। মিথ্যা জন্মদিন পালন করলে জনগণ উচিত শিক্ষা দেবে- ড. হাছান ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জাতীয় শোক দিবসে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কেক কেটে মিথ্যা জন্মদিন পালন করলে দেশের মানুষ তাকে উচিত জবাব দেবে। জাতীয়শোক দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সংগঠনের উপদেষ্টা চিত্তরঞ্জন দাশের সভাপতিত্বে সভায় তাঁতি লীগের কার্যকরি সভাপতি সাধনা দাশ গুপ্তা, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা বক্তব্য রাখেন। হাছান মাহমুদ বলেন, আগস্ট মাস এলে আপনার (খালেদা জিয়ার) কেক কাটার ধুম পড়ে। এবার দয়া করে লন্ডনেও কেক কাটবেন না। লন্ডনে কেক কাটলে দেশে ফেরার পর জনগণ আপনাকে উচিত জবাব দেবে। তিনি বলেন, বেগম জিয়া কখন, কোথায়, কার সঙ্গে মিটিং করেন, কী করছেন, কয়টায় কোন্ হোটেলে মিটিং করছেন এবং মিটিং শেষে কয়টায় তিনি পুত্রের বাসায় ফিরে যাচ্ছেন, সেই তথ্য আমাদের কাছে আছে। প্রয়োজনে সেই তথ্য উন্মোচন করা হবে।
×