ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তোফা ও তহুরার শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ৪ আগস্ট ২০১৭

তোফা ও তহুরার শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তোফা ও তহুরা আগের চেয়ে ভাল আছে। তারা মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি অন্য খাবারও খেয়েছে। এখন তারা মায়ের কোল থেকে চিকিৎসকদের দেখে হাত নাড়ানাড়ি করে হাসে। বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তোফা ও তহুরার সর্বশেষ অবস্থা জানিয়েছেন প্রধান সমন্বয়কারী শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহনূর ইসলাম। এ সময় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান এ তথ্য জানিয়ে বলেন, তারা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে। আপনার দোয়া করবেন। তারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারে। তারা শিশু দুটির সার্বিক অবস্থাও বর্ণনা করেন। প্রধান সমন্বয়কারী শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহনূর ইসলাম জানান, তোফা ও তহুরা মাশাআল্লাহ্ ভাল আছে। বুধবার থেকে তাদের মুখে খাবার দেয়া হয়েছে। তারা মায়ের দুধও খেয়েছে। তাদের শারীরিক অবস্থার আগের থেকে অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই রাখা হবে। তিনি জানান, তাদের অস্ত্রোপচার করে আলাদা করার বিষয়টি সফল হয়েছে। তাদের সফল অস্ত্রোপচারের কৃতিত্ব আমার একার নয়। আমি চিকিৎসকদের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করেছি। তবে বিশেষভাবে প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম, নিউরো সার্জন ডাঃ অসিত কুমারের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আশরাফ উল হক কাজল, অধ্যাপক সামিদুর রহমান, ইউরোলজি, রেডিওলজি (আল্টাসাউন্ড) সহ সমন্বয়ে ১৬ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠনে এ কৃত্বের দাবিদার। আমি আরও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি নার্স থেকে শুরু করে অন্য সকল সহকর্মীর প্রতি, যারা প্রতিটি ধাপে আন্তরিকভাবে আমাকে সহায়তা করেছেন। সহযোগী শাহনূর ইসলাম জানান, পুরোপুরি সফল তখনই বলা যাবে। যখন তারা বাবা মায়ের কোলে উঠে বাড়ি ফিরতে পারবে। বাড়ি পাঠানোর পর তাদের পুনর্বাসনের বিষয়টিও দেখা হবে। অস্ত্রোপচারের পর থেকে এ দুই শিশু পোস্ট অপারেটিভ রুমে আছে। তিনি আরও জানান, শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে এক বিছানায় একসঙ্গে দুই-তিন শিশুকে রাখা হয়। সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় তাদের পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে রাখা হবে আরও কয়েকদিন। এ সময় সহযোগী শাহনূর ইসলাম জানান, ওরা দুইবোন আমার মেয়ের মতো। শুধু আজকে নয়। দশ মাস আগে যেদিন ওরা এখানে এসেছিল সেদিন থেকেই আমি ওদের আমার মেয়ে মনে করি। অস্ত্রোপচারের পর তাদের এখন কোন ঝুঁকি রয়েছে কিনা জানতে চাইলে শাহনূর ইসলাম জানান, তারা ভাল থাকলেও ঝুঁকিমুক্ত বলা যাবে না। যেদিন পর্যন্ত তাদের সুস্থ করে মা-বাবার কোলে ফিরিয়ে দিতে না পারব। ততদিন পর্যন্ত পূর্ণ সুস্থ হয়েছে বলতে পারব না। তোফা ও তহুরা বর্তমানে পোস্ট অপারেটিভ কেয়ার ইউনিটে রয়েছে। আপাতত সেখানেই তাদের রাখা হবে বলে জানান তিনি। তিনি জানান, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামের রাজু মিয়ার স্ত্রী সাহিদা বেগম নিজ বাড়িতে জোড়া লাগানো অবস্থায় তোফা-তহুরার জন্ম দেন। কোমরের কাছে জোড়া লাগানো শিশু দুটির সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই ছিল। তবে জন্ম থেকেই তাদের প্রসাব-পায়খানার রাস্তা একটি ছিল। সাহিদা বেগম ও রাজু মিয়া দম্পতির পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলেও রয়েছে।
×