ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে গণতন্ত্র থাকলে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পর সরকার পদত্যাগ করত

প্রকাশিত: ০৫:০১, ৪ আগস্ট ২০১৭

দেশে গণতন্ত্র থাকলে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পর সরকার পদত্যাগ করত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে গণতন্ত্র থাকলে সর্বোচ্চ আদালতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর সরকার পদত্যাগ করত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আহ্বান জানাচ্ছি অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করুন। তা না হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। আমরা একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রকামী। এ গণতন্ত্রকামী মানুষের আশা আকাঙ্খাকে চূর্ণ করে দিয়ে কেউ এখানে টিকে থাকতে পারেনি। আগামী দিনেও পারবে না। ফখরুল বলেন, সর্বোচ্চ আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে পরিষ্কার ভাষায় বলে দিয়েছে, দেশে কোন গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার নেই, সংসদ নিষ্ক্রিয়, আইনের শাসন নেই এবং বিচার বিভাগকে সরকার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। এমনকি রায়ের পযর্বেক্ষণে এ কথাও বলা হয়েছে যে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া এ দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্বব নয়। সুতরাং এ রায়ের পর যে কোন গণতান্ত্রিক দেশ হলে সরকার পদত্যাগ করত। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এখনও বর্তমান সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে এবং দেশ চালাচ্ছে। সম্প্রতি বগুড়ায় ধর্ষণের পর মা-মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, সারাদেশের একই চিত্র। কোথাও কারও নিরাপত্তা নেই। বিএনপি এ ঘটনার নিন্দা ও ধিক্কার জানায়। আমরা দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এ ঘটনায় পরিষ্কার হয়ে গেছে, আওয়ামী লীগের লোকেরাই এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত। বিকল্পধারার সভাপতি ডাঃ এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসায় বুধবার রাতে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের বৈঠক অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যে বা যারা যে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করলে বিএনপি তাতে সমর্থন জানাবে। সরকার বন্যা দুর্গতদের সমস্যা সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দুর্যোগপূর্ণ এলাকা ঘোষণার দাবি জানানো হলেও সরকার কোন রকম কর্ণপাত না করে অপর্যাপ্ত ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছে। ফখরুল বলেন, বিএনপির যৌথসভায় লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শারীরিক সুস্থতার জন্য দোয়া করা হয়েছে। এছাড়া সদ্য প্রয়াত বিএনপি নেতা হারুনর রশীদ খান মুন্নুর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামানা করা হয়েছে। আর পাহাড় ধসে নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তিকামনা করা হয়েছে। সভায় নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিএনপির চলমান সদস্য সংগ্রহ ও সদস্য নবায়ন কর্মসূচীকে আরও বেগবান করার জন্য সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলন থেকে বিএনপির ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানে কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে যৌথসভায় গৃহীত কর্মসূচী ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ভোর ৬টায় নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং সকাল ১০টায় সকল স্তরের নেতাকর্মীদের নিয়ে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। আর আগামী ১১ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস এবং ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। যৌথ সভা ও সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেনÑ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, বিলকিস জাহান শিরিন, দলের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, আশরাফ উদ্দিন উজ্জল, নূরে আরা সাফা, আবদুল আওয়াল, মনির হোসেন প্রমুখ। আলোচনায় না এলে সরকারের শোচনীয় পতন হবে- দুদু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় না এলে ’৬৯ বা ’৭১ এর মতো বর্তমান সরকারের শোচনীয় পতন হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। বৃহস্পতিবার দুপুর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন। ৫৭-ধারা বাতিলের দাবি জানিয়ে দুদু বলেন, ছাগলের ছবি দেয়ায় নাকি মানহানি মামলা হয়েছে। এভাবে ৫৭-ধারা দিয়ে মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন ভোটারবিহীন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর মাধ্যমে শেখ হাসিনা ফের ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু আর সে সুযোগ দেয়া হবে না।
×