ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সদ্য আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বিল প্রসঙ্গে মেদভেদেভ

‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৩:২৯, ৪ আগস্ট ২০১৭

‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র

রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র মস্কোর বিরুদ্ধে ‘পূর্ণ্যােদ্দমে বাণিজ্য যুদ্ধের’ ঘোষণা দিয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বিলে ডোনাল্ড ট্রাম্প সই করেছেন। এতে তার দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। সবার কাছে পরিষ্কার হয়েছে যে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি কতটা অক্ষম। এ বিলের মাধ্যমে কংগ্রেসও তাকে অবমাননা করেছে। খবর বিবিসি ও এএফপির। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ ও ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া কেড়ে নেয়ার শাস্তি হিসেবে নিষেধাজ্ঞাটি দেয়া হয়েছে। ট্রাম্পের অভিযোগ, কংগ্রেস বিলটি পাসে অতিরিক্ত শক্তি ক্ষয় করেছে। রুদ্ধ কক্ষে বসে ‘নিষেধাজ্ঞা আইনের মাধ্যমে আমেরিকার শত্রুদের প্রতিরোধ’ শিরোনামের বিলটিতে তিনি বুধবার সই করেন। ঘরোয়া চাপের কাছে অনিচ্ছাসত্ত্বেও তাকে নতি স্বীকার করতে হয়। যদিও এতে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক খাদে পড়তে পারে। বিলের সঙ্গে ট্রাম্প লিখে দেন কংগ্রেসের এ উদ্যোগ ‘গভীর ত্রুটিপূর্ণ, বিল পাসে বেশ তাড়াহুড়ো হয়েছে। কংগ্রেস অসাংবিধানিকভাবে আইনে কিছু ধারাও যোগ করেছে।’ নতুন এ আইনের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে প্রেসিডেন্টের আলোচনার সক্ষমতার লাগাম টেনে ধরা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার মূল টার্গেট রুশ জ্বালানি খাত। দেশটির পাইপলাইন উন্নয়ন সম্পর্কিত যে কোন কোম্পানির বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন এখন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে। বেশ কয়েকটি রুশ অস্ত্র রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের তৎপরতাও সীমিত হয়ে যাবে। বিলটিতে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ইরান বলেছে, এতে পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘন হয়েছে। যথার্থ ও ন্যায়সঙ্গত উপায়ে নিষেধাজ্ঞার জবাব দেয়া হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এ উদ্যোগ নিয়ে উত্তর কোরিয়া এ পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোন বক্তব্য দেয়নি। ফেসবুকে মেদভেদেভ বুধবার বলেন, ওয়াশিংটনের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কোন্নয়নের আশা ভ-ুল হয়ে গেছে। যদি অলৌকিক কিছু না ঘটে, তবে এ নিষেধাজ্ঞার ক্ষতিকর প্রভাব যুগের পর যুগ থেকে যাবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অপসারণের লক্ষ্য নিয়েই নতুন এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মেদভেদেভের ভাষায়, ক্ষমতা ব্যবহারেরর দিক থেকে ট্রাম্প একজন অদক্ষ খেলোয়াড়। জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের নেতারা নিষেধাজ্ঞার অর্থনৈতিক পরিণতি নিয়ে আতঙ্ক প্রকাশ করেছেন। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ-ক্লদ জাঙ্কার বলেন, অপরিকল্পিত একতরফা নিষেধাজ্ঞায় ইউরোপের জ্বালানি নিরাপত্তায় খারাপ প্রভাব পড়বে। নির্বাচনে বিজয়ে প্রচারশিবিরের কর্মীদের সঙ্গে রুশ যোগসাজশের অভিযোগ বারবার প্রত্যাখ্যান করে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেশটির কংগ্রেস ও একজন বিশেষ তদন্তকারী কাজ করে যাচ্ছেন। বিবিসির ওয়াশিংটন প্রতিনিধি এ্যান্টোনি জুচার বলেন, ট্রাম্প বিলে সই করলেও পরিষ্কারভাবে তিনি অসন্তুষ্ট। বিল পাসসহ নির্বাহী ক্ষমতা কাটছাঁটে যদি কোন প্রেসিডেন্ট আপত্তি জানান, তবে তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই। এটা যখন নিত্তনৈমিত্তিক কাজ, তখন প্রত্যাশিতভাবে বিরোধিতার পথে হাঁটেনি ট্রাম্প প্রশাসন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাশিয়ার ৩৫ কূটনীতিককে বরখাস্ত করেছিলেন। রিপাবলিকান নেতা লিন্ডসে গ্রাহাম বিলটির প্রশংসা করেন। ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বিলটি প্রত্যাখ্যানের কোন সুযোগ প্রেসিডেন্টের কাছে ছিল না। কারণ সেটির পক্ষে এত পরিমাণ ভোট ছিল যে এটি আইনে পরিণত করতে প্রেসিডেন্টেন ভেটো অকার্যকর। সাউথ ক্যারোলিনার সিনেটর বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন আমেরিকায় এমন কিছু করে দেখিয়েছেন, যেটা আর কেউ পারেনি। তিনি কংগ্রেসে উভয় দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছেন। রাশিয়ার জ্যেষ্ঠ পার্লামেন্ট সদস্য কন্সটান্টিন কুশ্চেভ বলেন, ট্রাম্প কংগ্রেসের মুখোমুখি না দাঁড়িয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন।
×