ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিএসআর নীতিমালা প্রণয়নে জাতীয় কাউন্সিল হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৩ আগস্ট ২০১৭

 সিএসআর নীতিমালা প্রণয়নে  জাতীয় কাউন্সিল হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচী (সিএসআর) নীতিমালা প্রণয়নে শীঘ্রই একটি জাতীয় কাউন্সিল গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। বুধবার ঢাকা চেম্বার অডিটরিয়ামে ‘বাংলাদেশে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানসমূহে সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম জোরদার’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। যৌথভাবে সেমিনারের আয়োজন করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং এস আর এশিয়া বাংলাদেশ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একটি সিএসআর নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সংস্থা, বাণিজ্যিক সংগঠন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সুপারিশমালা গ্রহণ করেছে। এ সুপারিশের আলোকে সিএসআর নীতিমালা প্রণয়নে শীঘ্রই জাতীয় কাউন্সিল গঠন করা হবে। প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি স্থীতিশীলতায় কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা বা সিএসআরের বিকল্প নেই। গত দুই বছরে দেশের অর্থনীতিসহ সামগ্রিক খাতে পরিবর্তন এসেছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অন্যতম হলো, কেউ অর্থনীতিতে পিছিয়ে থাকবে না। এসডিজি বাস্তবায়নে সিএসআর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, দেশের বেসরকারী খাত অনেক দূর এগিয়েছে। সিএসআর কার্যক্রমে বেসরকারী খাতকে এগিয়ে আসতে হবে। অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যক্রমকে টেকসই করতে সিএসআর কার্যক্রমে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্যই নীতিমালা করা হচ্ছে। আমাদের বড় সমস্যা সরকারী ও বেসরকারী প্লাটফর্মের সমন্বয়ের অভাব। এটি দূর করতে হবে। সিএসআর কার্যক্রম বাড়াতে সবাইকে একটি প্লাটফর্মে আসতে হবে। সেমিনারে ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, বাংলাদেশে সামাজিক দায়বদ্ধতার কার্যক্রম দীর্ঘদিন যাবত চালু থাকলেও এখনও তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেনি। এসডিজিতে উল্লেখিত দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধা নিবারণ, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাকে বেগবান করাসহ অন্যান্য লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে সিএসআর কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, যেকোন প্রতিষ্ঠানের সুনাম বৃদ্ধিতে সিএসআর কার্যক্রম একান্ত আবশ্যক। যেকোন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানোর বিষয়ে সিএসআর অত্যন্ত কার্যকর। কোম্পানিগুলোকে সিএসআর কার্যক্রমে আরও উন্নতি করতে হবে। কারণ এটি প্রবৃদ্ধি অর্জনে উন্নয়ন সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এসআর এশিয়া বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর সুমাইয়া রশিদ বলেন, সিএসআর নীতিমালা প্রণয়ন হলে দেশের কর্পোরেট সংস্থাসমূহে সিএসআর কার্যক্রম আরও সক্রিয়ভাবে কার্যকর করা যাবে। এশিয়া অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যে সিএসআর নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। যা একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সিএসআর কার্যক্রম এখনও প্রতিষ্ঠানিক পর্যায়ে পৌঁছেনি। তবে সিএসআর কার্যক্রমের টেকসই উন্নয়ন ও তার প্রভাব পর্যালোচনার জন্য আমাদের সকলকে আরও মনোযোগী হতে হবে। সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানউল্লাহ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, দেশের কর্পোরট সংস্থাসমূহ সিএসআর কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধি করলে এর প্রভাব স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং জ্বালানি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই উর্ধতন সহসভাপতি কামরুল ইসলাম, সহসভাপতি হোসেন এ সিকদার, পরিচালক আলাউদ্দিন মালিক, প্রাক্তন সহসভাপতি এম আবু হোরায়রাহ, প্রাক্তন পরিচালক এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান প্রমুখ।
×