ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প

চকরিয়ায় ১৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৩ আগস্ট ২০১৭

চকরিয়ায় ১৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ সরকারের সফল উদ্যোগ ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’ থেকে সুফল পাইয়ে দেয়ার নামে চকরিয়ায় স্বামী পরিত্যক্ত, বিধবা, অসচ্ছল ৬০ নারী-পুরুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ১৬ লাখ টাকা। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের অধীন চকরিয়া সাহারবিলের মধ্যমপাড়া ও পূর্বপাড়া গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সভাপতি দাবিদার নওশেদ আলী নানা কায়দায় উপকারভোগী এসব নারী-পুরুষের কাছ থেকে ২০১২ সালে সঞ্চয় আমানত ও কিস্তির টাকা মিলিয়ে এ অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পাঁচ বছর ধরে ভুক্তভোগীরা তাদের প্রাপ্য টাকা আদায়ের জন্য স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, প্রভাবশালী নেতাসহ সব মহলে ধরনা দিলেও গচ্ছিত টাকা ফেরত পাচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে, হাতিয়ে নেয়া এসব টাকা ফেরত না দেয়ার জন্য কৌশল হিসেবে ইতোমধ্যে প্রভাবশালী নওশেদ আলী উল্টো আদালতে প্রতারিত নারী-পুরুষের বিরুদ্ধে খালী কার্টিজ, পাসবই ব্যবহার করে দুটি সাজানো মামলা দায়ের করে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। মধ্যমপাড়া ও পূর্বপাড়া গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্যরা অভিযোগে করেছেন, ২০১২ সালের দিকে স্থানীয় নওশেদ আলী বর্তমান সরকারের চলমান ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের’ মাধ্যমে গরু, ছাগল, হাঁস মুরগি, নগদ অর্থ ও বাড়ি পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখায়। তার প্রলোভনে পা দিয়ে এলাকার স্বামী পরিত্যক্ত, বিধবা, অসচ্ছলসহ অভাবী ৬০ নারী-পুরুষ সমিতির সদস্য হন। পরে সদস্য প্রতি তিনি সঞ্চয় আমানত হিসেবে টাকা সংগ্রহ এবং সদস্যদের পাসবইগুলো হাতিয়ে নেন। ভুক্তভোগী সদস্যরা জানান, প্রকল্পের টাকা হালনাগাদ এসেছে, তাই প্রকল্পের মাধ্যমে সহসা গরু, ছাগল, হাঁস মুরগি, নগদ অর্থ ও বাড়ি পেতে হলে সবাইকে খালী কার্টিজে স্বাক্ষর করে তা অফিসে (উপজেলা প্রকল্প কার্যালয়ে) পাঠাতে হবে বলে জানান। এ কথা শুনে খুশি হয়ে সদস্যরা খালী কার্টিজে স্বাক্ষর করে তাকে বুঝিয়ে দেন। সঞ্চয় জামানতের টাকা দেয়ার পর নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও প্রকল্পের কোন ধরনের সুফল না পাওয়ায় সদস্যদের মধ্যে সন্দেহ শুরু হয়। এদের কয়েকজন উপজেলা প্রকল্প অফিসে গিয়ে সভাপতি নওশেদ আলীর প্রতারণার ঘটনা জানতে পারেন। ভুক্তভোগী সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, সমিতির সভাপতি নওশেদ আলী সঞ্চয় আমানত হিসেবে যেসব টাকা সদস্যদের কাছ থেকে পাসবইয়ের মাধ্যমে নিয়েছেন, ওই টাকা উপজেলা প্রকল্প অফিসে জমা দেয়নি। উল্টো সমিতির ৬০ জনের মধ্যে একাধিক সদস্যের নামে পাসবই ব্যবহার করে উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তার অফিস থেকে চাহিদা মতো ঋণ (কিস্তি) সুবিধাও নিয়েছেন। ভুক্তভোগী সদস্যদের দাবি, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের শর্ত মোতাবেক সঞ্চয় আমানত ও কিস্তির পুরো টাকা আত্মসাতের জন্যই আগে থেকে সদস্যদের পাসবইগুলো হাতিয়ে নেয় নওশেদ আলী। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সমিতির সদস্য সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী নাছিমা আক্তার, নাছির উদ্দিনের স্ত্রী রোকেয়া বেগম, ফজল করিমের স্ত্রী হাজেরা বেগম, বেলাল উদ্দিনের স্ত্রী জোসনা বেগম ও জসিম উদ্দিনের স্ত্রী পারভীন আক্তারসহ সমিতির সদস্য ৬০ নারী পুরুষের সঞ্চয় ও কিস্তি বাবদ (ভুক্তভোগীদের ভাষায় সুদে আসলে) মোট ১৬ লাখ টাকা কৌশলে সদস্যদের পাসবই ব্যবহার করে হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। অভিযোগ অস্বীকার করে সমিতির সভাপতি নওশেদ আলী বলেন, সমিতির সদস্যদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতোপূর্বে চকরিয়া উপজেলা পরিষদে বৈঠক হয়। বৈঠকে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান ও একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।সমিতির আটজন সদস্যের ২৪ হাজার টাকা আমার অনুকূলে ছিল।
×