ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় আমন আবাদ অনিশ্চিত

সিডরে বিধ্বস্ত বাঁধ ১০ বছরেও মেরামত হয়নি

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৩ আগস্ট ২০১৭

সিডরে বিধ্বস্ত বাঁধ ১০ বছরেও মেরামত   হয়নি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২ আগস্ট ॥ সিডর তা-বে বিধ্বস্ত সাত কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আজও মেরামত না করায় নয় গ্রামের তিন হাজার কৃষক পরিবারে এখনও দুর্ভোগ কাটেনি। যা এখন দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। আন্ধারমানিক নদীর উত্তাল তা-বে সিডরের সময় প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়। যার আড়াই কিলোমিটার সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর, কমরপুর, সুধীরপুর, পুরান মহিপুরসহ পাঁচ গ্রামের মানুষ পড়েন চরম দুর্ভোগে। একইদশা লালুয়া ইউনিয়নের। প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়। বেড়িবাঁধ মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। চারিপাড়া চৌধুরীপাড়া, নয়াকাটা, মুন্সীপাড়াসহ পাঁচটি গ্রামের মানুষ পড়েন বিপাকে। প্রতিদিন স্বাভাবিক জোয়ারেও হানা দেয় লোনা পানি। বাড়িঘরসহ চলাচলের রাস্তাঘাট সব ডুবে যায় প্লাবনে। আমন ফসল ফলাতে পারেন না এসব কৃষক। স্থানীয় বাসিন্দা জাকির হোসেন জানান, স্কুল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের একমাত্র পথ। বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। ষাটোর্ধ আবুল হাশেম জানান, বাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে তার বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন তিনি অন্যের বাড়ির সামনে আশ্রয় নিয়েছেন। নিজামপুর গ্রামের বিবি করিমন জানান, জোয়ারের সময় পানিতে সব ডুবে যায়। রান্না করতে পারেন না। অনেকদিন উপোস করতে হয়। রাত কাটে বিনিদ্র। নিজামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুরাইয়া জানায়, একটু বড় যারা তারা স্কুলে আসছে অনেক ভোগান্তি করে।তবে ছোটরা আসতে পারে না। সামনে সমাপনী পরীক্ষা। প্রতিদিন ভিজে স্কুলে যেতে হয় আর ফিরতে হয়। ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম আকন জানান, বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় ভেতরের রাস্তাঘাট সব নষ্ট হয়ে গেছে। জোয়ারের সময় মসজিদে নামাজ পর্যন্ত পড়তে পারেন না। মানুষ মারা গেলে ভাটা ছাড়া দাফন করা যায় না। পেশা হারিয়ে বহুজনে এলাকা ছেড়ে ঢাকাসহ অন্যত্র চলে গেছেন। এলাকার বাসিন্দা গণমাধ্যমকর্মী মনিরুল ইসলাম জানান, জরুরী ভিত্তিতে স্থানীয়রা নিজস্ব অর্থায়নে বিকল্প রিং বেড়িবাঁধ র্নিমাণ করা হলেও এ বর্ষায় টিকবে কিনা সংশয় রয়েছে। মনিরুল আরও বলেন, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস থাকলেও তার কোন বাস্তব প্রতিফলন নেই।কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, জরুরী ভিত্তিতে ইতোপূর্বে কয়েকবার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ওখানে দরকার এখন স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ। প্রকল্প প্রস্তাবনা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে স্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
×