ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবাসীকে অপহরণ ॥ যশোর ডিবি কর্মকর্তার ১০ লাখ টাকা দাবি মামলা

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৩ আগস্ট ২০১৭

প্রবাসীকে অপহরণ ॥ যশোর ডিবি কর্মকর্তার ১০ লাখ টাকা দাবি মামলা

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ মণিরামপুর উপজেলার আগরহাটি গ্রামের সৌদি প্রবাসী ফরহাদ আহম্মেদকে অপহরণ ও ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে যশোর ডিবি পুলিশের এসআই জাহাঙ্গীর হোসেনসহ দু’জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। বুধবার অপহৃত ফরহাদের পিতা মণিরামপুর উপজেলার আগরহাটি গ্রামের নুরুল হুদা বাদী হয়ে যশোর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ অভিযোগ করেন। বিচারক শাহিনুর রহমান অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আদেশ দিয়েছে। অপর আসামি হলেন মণিরামপুরের আগরহাটি গ্রামের জবেদ আলী সরদারের ছেলে কামরুজ্জামান ওরফে কামিয়ার। এদিকে অপহৃত ফরহাদকে ডিবি পুলিশ মঙ্গলবার বিকেলে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি প্রতারণা মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে। জানা গেছে, ফরহাদ আহম্মেদ সৌদি আরবে কামরুজ্জামানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। কামরুজ্জামান সেখানকার ব্যবসায়ীদের টাকা আত্মসাত করে দেশে পালিয়ে আসেন। এরপর কামরুজ্জান তার সৌদি আরবের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিনে নিতে প্রস্তাব দেয় ফরহাদকে। কিন্তু টাকা সমস্যার কারণে ফরহাদ ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিনতে অস্বীকার করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দেশে আসলে ফরহাদকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয় কামরুজ্জামান। ৯ বছর পর ফরহাদ আহম্মেদ সৌদি আরব থেকে গত ৬ জুলাই যশোর বিমান বন্দরে আসেন। কামরুজ্জামান এ সংবাদ জানতে পেরে সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে যশোর বিমানবন্দর থেকে ফরহাদকে অপরহণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এ ব্যাপারে ফরহাদের স্বজনরা কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ৩১ জুলাই ফরহাদ আহম্মেদ প্রাইভেটকারে কেশবপুরের বড়েঙ্গা গ্রামের আত্মীয়বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার পথে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কেশবপুর বাজারের দক্ষিণ পাশে মামুন পরিবহনের কাউন্টারের সামনে পৌঁছালে ডিবি পুলিশের এসআই জাহাঙ্গীর হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন ফরহাদকে ডিবি পুলিশের যশোর কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে ফরহাদের স্বজনরা যশোর ডিবি অফিসে এসে খোঁজ করলে তারা অস্বীকার করে। ওই দিন রাত ৯টার দিকে ডিবি অফিসের সামনে ফরহাদের স্বজনরা কান্নাকাটি করলে এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন তাকে আটকের কথা স্বীকার করেন। এরপর তাকে ছাড়াতে এসআই ফরহাদ হোসেন পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকার করায় ফরহাদের সঙ্গে তার স্বজনদের দেখা করতে দেয়নি। ছেলেকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে তিনি আদালতে এ মামলা করেন। এদিকে ডিবি পুলিশের এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, গোপালগঞ্জ সদরের চন্দ্রদীঘলিয়া গ্রামের আসাদ মোল্লার ছেলে স্বপন মোল্লা বাদী হয়ে গত ২৯ জুলাই কোতোয়ালি মডেল থানায় প্রতারণার অভিযোগে ফরহাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন মঙ্গলবার বিকেলে তাকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর নামে স্বপন মোল্যাসহ বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে ২ কোটি টাকা নিয়ে আত্মসাত করেছেন।
×