ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আগস্টে জঙ্গী হামলা থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৩ আগস্ট ২০১৭

আগস্টে জঙ্গী হামলা থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ

শংকর কুমার দে ॥ শোকের মাস আগস্টে জঙ্গী হামলা ও নাশকতার আশঙ্কায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকারের নীতি-নির্ধারক মহল। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জঙ্গী হামলা ও নাশকতার আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রতিবেদন দিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে নাশকতা ও নৈরাজ্যের ছক কষে তৎপরতা শুরু করেছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীগোষ্ঠী। নেপথ্য থেকে তাদের মদদ দিচ্ছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তাদের এ তৎপরতায় ইন্ধন যোগাচ্ছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটসহ উগ্র মৌলবাদী ধর্মান্ধ দল ও বিভিন্ন জঙ্গীগোষ্ঠী। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে এ খবর জানা গেছে। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শোকের মাসে নতুন করে কোন ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা যাতে না ঘটতে পারে, যা চিন্তা-ভাবনারও অতীত। আগস্ট মাস অত্যন্ত শোক ও বেদনাবিধুর হওয়ায় নানা ধরনের কর্মসূচী পালন করে আওয়ামী লীগসহ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। এ সুযোগটা নিতে পারে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বিশেষ করে জামায়াত-শিবির যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী। তাদের সহায়তা করতে পারে বিএনপির মধ্যে গাপটি মেরে থাকা পাকিস্তানপন্থী উগ্র মৌলবাদী ধর্মান্ধ চক্রটি। এজন্য পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই স্বাধীনতা যুদ্ধের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে ইতোপূর্বেই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ধ্বংসে ষড়যন্ত্রের নীল নক্সা করছে, যা বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে পারে। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র জানান, আগস্ট মাসেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে ঘাতকরা। এছাড়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও হত্যার চেষ্টা করা হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গত বছর জুলাই ও আগস্টে গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গী ও সন্ত্রাসী হামলা এবং কল্যাণপুরে পুলিশের অভিযানে ৯ জঙ্গী নিহত হওয়ার ঘটনার প্রেক্ষাপট। শোকের এ মাসকে কেন্দ্র করে কোন অশুভ মহল যাতে নতুন করে আবারও কোন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটাতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কারণ এ মাসে যে কোন ধরনের নাশকতা ঘটতে পারে বলে সরকারের কাছে তথ্য রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, এমনিতেই দেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অস্থিরতা বাড়াতে, নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে ফের নাশকতার ছক কষছে জামায়াত, ছাত্রশিবির ও বিএনপির মধ্যকার স্বাধীনতা বিরোধীপন্থীরা। তাদের নাশকতার লক্ষ্য নানা স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও ব্যক্তিবর্গ। এর মূল লক্ষ্য অস্থির পরিস্থিতি দেখিয়ে ইউরোপসহ শক্তিশালী বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা। এ সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অতীতের মতো এবারও জামায়াতকে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা, সহিংসতা ছড়াতে গোপন মাধ্যমে সব ধরনের সাহায্য করছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। জামায়াত-শিবির নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে জঙ্গীগোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে গোপন আঁতাত গড়ে সশস্ত্র করে তুলেছে, যা বিগত দিনে দেখা গেছে। তারা নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে তাই তারা ফের নাশকতার ছক কষছে। যাতে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে দেখিয়ে তারা সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে পারে। বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ গড়ে তোলাসহ নির্বাচনের বিষয়ে তাদের দাবিগুলো আদায় করে বৈতরণী পার হতে পারে। বিএনপির পাকিস্তানপন্থীদের নিয়ে জামায়াত-শিবির যুদ্ধাপরাধীরা নাশকতা জঙ্গী হামলার ছক কষে দেশ-বিদেশে বিপুল অঙ্কের টাকায় লবিস্ট নিয়োগ নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তার দাবি।
×