ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিল্পকলায় কাল বিবর্তনের ‘মাতব্রিং’

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৩ আগস্ট ২০১৭

শিল্পকলায় কাল বিবর্তনের ‘মাতব্রিং’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের উদ্যোগে মঞ্চ নাট্যশিল্পীদের চিকিৎসা সহায়তায় তহবিল গঠনের লক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় জুলাই এবং আগস্ট মাসে ৪টি মঞ্চ নাটকের বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মূল হলে প্রদর্শিত হবে সাধনা আহমেদের রচনা ও ইউসুফ হাসান অর্কর নির্দেশনায় বিবর্তন যশোরের নাটক ‘মাতব্রিং’। নাটকটির সঙ্গীত পরিকল্পনায় ইউসুফ হাসান অর্ক, পোশাক পরিকল্পনায় আইরিন পারভীন লোপা। শাহীন রহমানের আলোক পরিকল্পনায় নাটকের মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন নির্দেশক নিজেই। আর কোরিওগ্রাফি করেছেন অদিতি সরকার রুমা। মান্দি জনগোষ্ঠীর দুই নর-নারীর অনবদ্য প্রেমকাহিনীকে আশ্রয় করেই নাটকের গল্প রচিত হয়েছে। নাটকটিতে আদিবাসী মান্দিপল্লীর ভোজের উৎসব-নাচ-গান-আচার-বিশ্বাসসহ নানা উপকথা ঠাঁই পেয়েছে। জঙ্গল এখন আর ইচ্ছেমতো ব্যবহার করা যায় না। জঙ্গলের মালিক সরকার। এই সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আদিবাসীরা তাদের নিজস্ব বেশ-বসন ছেড়ে নগর জীবনে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। এই বিষয়টিও নাটকে তুলে ধরা হয়েছে। নাট্য নির্দেশক ইউসুফ হাসান বলেন, নাটকের গল্পটা মান্দি জনগোষ্ঠী নিয়ে হলেও তাদের বাস্তভিটা উচ্ছেদকে বৈষ্ণিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখা হয়েছে। সারা দুনিয়ার দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচারের চিত্রই এখানে চিত্রিত হয়েছে। বিবর্তনের কর্মীদের নাটকের প্রতি আবেগ ও মঞ্চের পরিশ্রম আমাকে বিস্মিত করেছে। ঢাকা প্রথম সারির কোন নাট্যদলের তুলনা বিবর্তন যশোর কোন দিক দিয়ে কম নয়। নাট্যকার সাধনা আহমেদ জানান, আমাদের বাড়িতে মাঝে মধ্যেই ‘শনি’ পূজা হতো। আমাদের মতো শরীয়তবাদী মুসলমান পরিবারে কেন বিষু উৎসব আর শনি পূজা হতো পরিবারের কারোর কাছে এর সঠিক ব্যাখ্যা পাইনি। সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তিনি জানান, তোমার বাড়ি যেহেতু কিশোরগঞ্জ জেলায় সেহেতু তোমাদের খুব কাছেই ‘গারো’ ‘হাজং’ অধ্যুষিত এলাকা। হতে পারে তোমার কোন পূর্বপুরুষ আদিবাসী কোন নারীকে বিয়ে করে এনেছিলেন। সেই নারীকে স্বাভাবিকভাবেই মুসলমানের ধর্ম পালন করতে হয়েছে কিন্তু নিজের সংস্কৃতির ধারাটি এ উৎসব পালনের মাধ্যমে তিনি ধরে রেখেছিলেন। এই ব্যাখ্যা আমার হৃদয়ে হাজার রঙের রামধনু ছুটিয়ে দিল। কোন সে প্রাকৃত নারী! যার রক্তধারা বয়ে চলে আমার ধমনিতে? আমার দিনরাত গুনগুন করে তারই সঙ্গীতে আমার বাতাস সুবাসিত হয় তারই প্রাকৃতগন্ধে। সে নারী কি সমতলের কোন যুবাকে ভালবেসে এসেছিলো? নাকি ভূমি দখল করতে গিয়ে আমারই কোন পূর্বপুরুষ কোন এক প্রাকৃত নারীকে হরণ করে এনেছিল? ‘মাতব্রিং’ নাটকটিতে সহজ করে ব্যক্তি ও গোষ্ঠী মানুষের সেই যন্ত্রণার কথাই বলেছি মান্দি চরিত্রগুলোর চলার চলনে, বলার বলনে।
×