ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পরিকল্পিত নগরায়ণ

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৩ আগস্ট ২০১৭

পরিকল্পিত নগরায়ণ

রাজধানীর সড়কগুলোতে চারদিক থৈথৈ করছে পানি। প্রতিটি রাজপথ আজ যেন নদীতে পরিণত হয়েছে। পানির মধ্য দিয়ে মানুষ এবং গাড়ি চলাচলের মহা দুর্ভোগের দৃশ্য এখন নগরবাসীর কাছে অতি পরিচিত। তবুও রাত পেরুলেই ছুটতে হয় নানা প্রয়োজনে বাইরে। তবে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়ছে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী এবং নিম্ন আয়ের লোকজন। এই শ্রাবণে কয়েকদিনের বৃষ্টিতে রাজধানীর প্রধান সড়ক থেকে অলি-গলি পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। ড্রেনেজ ব্যবস্থার কোন সংস্কার না থাকা এবং কোন কোন এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই জনগণকে এই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। অনেকে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। ডিএনডি বাঁধ এলাকায় একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমে। ময়লা আবর্জনায় ভরপুর, পরিকল্পনাবিহীন ঢাকা শহরের জন্য যেন এটা প্রকৃতির এক অম্ল-মধুর প্রতিশোধ। ইচ্ছে হলেই যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা ড্রেনেজ সিস্টেমের জন্য কতটা ভয়ঙ্কর, এটি তার প্রমাণ। রাজধানীর এই জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্ব ওয়াসারও। কিন্তু এ নিয়ে ওয়াসা এবং সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে চলছে রশি টানাটানি। ১৯৮৯ সালে ওয়াসাকে পানি নিষ্কাশনের মূল দায়িত্ব দেয়া হয়। সেই সঙ্গে সিটি কর্পোরেশনসহ আরও কয়েকটি সংস্থাকে। কিন্তু ২০১৪ সালের এক জরিপে দেখা যায় ওয়াসার চেয়েও সিটি কর্পোরেশনের পাইপলাইনের সংখ্যা বেশি। বার্ষিক ক্লিনিংয়ের ব্যাপারেও এই সংস্থা দুটির মধ্যে সমন্বয় নেই, যার ফলে ভোগান্তিতে জনগণ আর ঢাকা তার নিজস্ব সৌন্দর্য হারাচ্ছে। সব সংস্থা যদি একযোগে কাজ করে ড্রেনেজ নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে তবে হয়ত সামনের বছর জনগণকে এতটা ভোগান্তি পোহাতে হবে না। সেই সঙ্গে করতে হবে পরিকল্পিত নগর উন্নয়ন। আর এ উন্নয়নে সব চেয়ে বেশি জোর দিতে হবে সিটি কর্পোরেশনকে। ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশনসহ সব সংস্থাকে একযোগে কাজ করতে হবে। ঢাকার বাসিন্দাদের উচিত যেখানে-সেখানে ময়না-আবর্জনা না ফেলা। বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি আমরা যদি একটু সচেতন হই তবেই হয়ত আগামীতে এই করুণ দৃশ্য দেখতে হবে না। সকল প্রকার যানজট ও জলাবদ্ধতা এড়িয়ে ঢাকা হবে সুন্দর বসবাসযোগ্য শহর। আগামীতে যেন এই অবস্থার সম্মুখীন না হয় তাই এখন থেকেই এসব সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। মিঠাপুকুর, রংপুর থেকে
×