ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিষয় ॥ শ্রাবণে সয়লাব পথঘাট;###;ঢাকা বাসীরকান্না

সমাজ ভাবনা ॥ সৈয়দা রুবি রাজ্জাক

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৩ আগস্ট ২০১৭

সমাজ ভাবনা ॥ সৈয়দা রুবি রাজ্জাক

আষাঢ়ের ঢল, শ্রাবণের বর্ষণ, কার্তিকের কাইতান, এই শ্যামল বাংলার মানুষের অজানা নয়। এই ধ্বনি কানে সব সময় গুঞ্জন তোলে। দেশ স্বাধীন হয়েছে, আজ ৪৬ বছর। একটু ভূমিকা দিয়ে শুরু করছি। আমরা আগে পাকিস্তানী (পূর্ব-পাকিস্তানী) লোক ছিলাম। বাঙ্গাল বলে ধিক্কার শুনতাম। সেই সময় ঢাকা ইউনির্ভাসিটি থেকে এডুকেশন-টুরে পশ্চিম পাকিস্তানে যাবার সুযোগ হয়েছিল। করাচী চাকলালা এয়ারপোর্ট থেকে আমরা হোটেল শেরাটনে গিয়েছি এবং লিফটে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছি। আমাদের দেখে শাড়ি পরা পাকিস্তানী মহিলারা বলল, বাঙ্গাল কেয়া কালা গায়া। তারা আমাদের কত অবহেলার চোখে দেখত। করাচী টু তুরখাম বর্ডার এবং আলেকজান্ডার যে পথে ভারতবর্ষে এসেছিল, আক্রমণ করতে খাইবার পান পাহাড়ী পথ বেয়ে। ঐ অনুসরণে পাকিস্তানীরাও পাথরের পাহাড় কেটে পথ বানিয়েছে। আয়ুবিয়া একটি শহরে আমরা সেই পথেই গিয়েছি। গাড়ি থেকে নিচের দিকে তাকালে বুক শুকিয়ে যায়। ঘরবাড়ী, গাছ-পালা সব খেলনা ম্যাচবক্সের মতো মনে হতো। পাকিস্তানের সবগুলো প্রভিন্স ঘুরেছি। কি যে সুন্দর চমৎকার রাস্তা-ঘাট। একহাত রাস্তাও ভাঙ্গা, গর্ত, খানা-খন্দ চোখে পড়েনি। সব মসৃণ, আমরা সব স্টুডেন্টরা বলাবলি করেছি, এ সব আমার দেশের সোনার আঁশ পাটের পয়সায় তৈরি হয়েছে। আর তখন পূর্ব পাকিস্তানে তেমন কোন রাস্তা-ঘাট সুন্দর ছিল বলে মনে হয় না। এখন তো নিজেদের ‘৪৬ বছরের স্বাধীন দেশ। তবে কেন এই বেহাল অবস্থা। কে জবাব দেবে? পুরানা টাউনের তো কথাই নেই, নতুন টাউনের আরও বেহাল অবস্থা। কেন? ছোট্ট একটা ঢাকা শহর। তবে লোক সংখ্যা একটু বেশি। কেউ তিলোত্তমা, কেউ উর্বশী বানাবে। আর সেই উর্বশী আর তিলোত্তমার হাত ধরে মেয়র সাহেবরা শ্রাবণ মাসে সুইমিং কম্পিটিউশন দিবে! আমি শ্রদ্ধা এবং সম্মান রেখে আমার একান্ত বক্তব্য রাখছি। এবার বর্ষা মৌসুম শেষ হলে, এই ডিপার্টমেন্ট-এর উর্ধতন কর্মকর্তা থেকে নি¤œ কর্মীরা পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপে হেঁটে অলিগলি রাজপথ জরিপ করে, সেই সঙ্গে মাটির নিচ দিয়ে যেসব লাইন যায়, সেই সব ডিপার্টমেন্ট কর্তাব্যক্তিদের ডেকে একসঙ্গে বসুন। জরিপ করে কঠোর, ন্যায়-নীতিবান হয়ে সুপরিকল্পিতভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে এ কাজে অগ্রসর হন এবং মাটির উপরে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ সিস্টেম সুপরিকল্পিতভাবে ঠিক রাখার জন্য শহরবাসীকে শিক্ষা দেবার ব্যবস্থা নিন। তারা যেন ভুলেও পথেঘাটে সামান্য ময়লা না ফেলে যা ড্রেন লাইন এ জমে পানি নিষ্কাশনের বিঘœ ঘটায়। যেন এই দুর্ভোগ শহরবাসীর আর পোহাতে না হয়। এটাই সবিনয় অনুরোধ। সুস্থভাবে শহরবাসীর জীবন যাপনের সুব্যবস্থা করুন। দেশবাসীর দোয়া পাবেন। বারিধারা ডিওএইচএস, ঢাকা থেকে
×