দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় এক দল সোভিয়েত মেকানিক সে সময়ের একচ্ছত্র ক্ষমতাসীন নেতা জোসেফ স্ট্যালিনের সঙ্গে দেখা করার জন্য কর্দমাক্ত বন-জঙ্গল পেরিয়ে অবিচলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে ক্রেমলিনের উদ্দেশে। তাদের মধ্যে একজন প্রতিভাবান ইঞ্জিনিয়ার তার উদ্ভাবিত একটি ট্যাংকে করে চলেছেন স্ট্যালিনকে এই মর্মে বুঝিয়ে শুনিয়ে রাজি করাতে যে, এই ট্যাংকের কার্যকারিতা এত বেশি বেশি যে তা যুদ্ধের গতিপথকে বদলে দেবে, এবং হিটলারের নাৎসি বাহিনী পর্যুদস্ত করতে সক্ষম হবে। এ ধরনের একটি কাহিনীকে উপজীব্য করে মস্কোর বাইরে রাষ্ট্রীয় খরচে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হচ্ছে। চলচ্চিত্রটির নাম দেয়া হয়েছে ‘টু সি স্ট্যালিন’ অর্থাৎ ‘স্ট্যালিনকে দেখতে’। ১৯৪০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের স্বল্প পরিচিত এক বাহিনী অবলম্বনে এই চলচ্চিত্র নির্মিত হচ্ছে। চলচ্চিত্রটির পরিচালক ৩২ বছর বয়স্ক কিম দ্রুজিনিন বলেছেন, এই ছবি নির্মাণের মূল পরিকল্পনা রুশ সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় থেকে আসে। অতীতের সাহসী সন্তান, যারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন বা নানাভাবে ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের কীর্তি-কাহিনীর মাধ্যমে আজকের প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করাই হবে এর লক্ষ্য। তবে মূল চরিত্রের শীর্ষে একজনই থাকবেন এবং তিনি জোসেফ স্ট্যালিন। এই চলচ্চিত্রটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ কোটি রুবল (১০ লাখ ডলার)। রুশ নির্মিত টি-৩৪ ট্যাংকের ব্যাপক কার্যকরী ভূমিকা এবং এটি নির্মাণের পেছনে কিছু মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম এখনকার মানুষের মাঝে দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের মনোভাব জাগ্রত করার এটিই বর্তমান প্রশাসনিক মনোভাব। জনগণের মধ্যে দেশপ্রেম ও উদ্দীপনামূলক চলচ্চিত্র নির্মাণের মূল ধারণা সর্বোচ্চ পর্যায় অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট পুতিনের মস্তিস্ক প্রসূত।
এর আগেও দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ অবলম্বনে ‘প্যান ফিলভ-২৮’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয় যা সত্য কাহিনী অবলম্বনে বলে প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে জানা যায়, এটি সোভিয়েত সাংবাদিকদের বানানো গল্প অনুসারে একটি সরকারী প্রোপাগান্ডামূলক চলচ্চিত্র। এই তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় সেখানের চলচ্চিত্র আর্কাইভ প্রধান সের্গেই মিরনেঙ্কোকে পদত্যাগ করতে হয়। ‘টু সি স্ট্যালিন’ ছবিতে অংশগ্রহণকারী অভিনেতা দিমিত্রি পোড্নজভ বলেন, সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নির্মিতব্য এই চলচ্চিত্রের পা-ুলিপি দেখেই আমি বুঝতে পারি, এটি একটি সরকারী প্রোপাগান্ডামূলক ছবি, যার লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করা এবং যুবসমাজ যাতে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কেন্দ্রীয় শক্তি বা ক্রেমলিনের অনুগত থাকে এমন পরিবেশ তৈরি করা। এএফপি
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: